images

জাতীয়

চলাচলের উপযোগিতা হারিয়েছে গুলশানের ঝিলপাড় সড়কটি

কাজী রফিক

১৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৫০ এএম

images

রাজধানীর অভিজাত এলাকা গুলশান। সুপরিকল্পিতভাবে গড়ে ওঠা এই এলাকার লেকের পাশ দিয়ে চলে গেছে যেই সড়কটি সেটি ঝিলপাড় সড়ক হিসেবে পরিচিত। তবে মূল নাম ওসমান গনি রোড। হাতিরঝিলের গুদারাঘাট থেকে সড়কটি দূতাবাস এলাকা পর্যন্ত বিস্তৃত। বাঁশতলা পর্যন্ত যার দৈর্ঘ্য এক দশমিক ৭ কিলোমিটার৷ ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ১৮ নং ওয়ার্ডের অধিভুক্ত বাড্ডা-শাহজাহাদপুর এলাকার গুরুত্বপূর্ণ সড়ক এটি। কিন্তু বর্তমানে একেবারেই চলাচলের উপযোগিতা হারিয়েছে।

দীর্ঘ এই সড়কে চলাচলকারীদের ভোগান্তিও যেনো দীর্ঘ। যানজট এড়াতে বিকল্প সড়ক হিসেবে এই পথ জনপ্রিয় হলেও খানাখন্দে ভরা থাকায় যাত্রীদের প্রাণ ওষ্ঠাগত হয়।

thumbnail_1734524769466

স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, এই সড়ক ধরে প্রতিদিন যাতায়াত করেন লাখো মানুষ। বারিধারা দূতাবাস এলাকা, নতুন বাজার, ভাটারা, বারিধারা জে ব্লকে যেতে সড়কটিই সহজ পথ। প্রগতি সরণির যানজট এড়াতে অনেকেই ওসমান গনি রোডের ওপর নির্ভরশীল।

তবে সেই নির্ভরশীলতা এখন ভোগান্তিতে রূপ নিয়েছে। সিটি করপোরেশনের উদাসীনতায় দিনের পর দিন শুধু ভেঙেছে সড়কটি। এখন খানাখন্দে পূর্ণ পুরো সড়ক। স্বাভাবিক চলাচলের উপযোগিতা নেই। যা নিয়ে সিটি করপোরেশনের ওপর ক্ষুব্ধ স্থানীয় মানুষ ও এই পথে যাতায়াতকারীরা।

স্থানীয় বাসিন্দা একরামুল হক ঢাকা মেইলের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, ‘এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ রোড। এই রোডের অবস্থা দেখেন! জায়গায় জায়গায় গর্ত৷ সিটি করপোরেশনের কোনো নজরই নেই।’

সড়কের প্রতি করপোরেশনের নজর না থাকায়, সড়কটি চলাচলের খরচ বেড়েছে৷ বাঁশতলা এলাকার বাসিন্দা মাহমুদুর রহমান ঢাকা মেইলকে বলেন, গুদারাঘাট থেকে বাঁশতলা যেতাম, সেখান থেকে রাস্তা পাড় হয়ে জে ব্লকে অফিসে যেতাম। রিকশা ভাড়া লাগতো ৪০ টাকা। এখন সেই রিকশা ভাড়া নেয় ৬০ টাকা।’

সড়ক ভাঙা থাকার কারণে রিকশা চালাতে কষ্ট হয়৷ তাই বাড়তি ভাড়া নেন বলে জানান রিকশাচালক ইলিয়াস হোসেন। বলেন, ‘প্লেইন রাস্তায় গাড়ি টানতে যে কষ্ট, তার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি কষ্ট হয় এই রাস্তায় গাড়ি টানতে৷ এই জন্য ৬০-৭০ টাকার কমে যাই না।’

সড়ক ভাঙার কারণও জানেন স্থানীয়রা৷ তবে এ বিষয়ে সেবা সংস্থাগুলোর দায়িত্বশীল আচরণ প্রত্যাশা করেন তারা৷

সরেজমিনে দেখা গেছে, সড়কটির এক পাশে জলাধার। আরেকপাশে আবাসিক ভবন ও বাণিজ্যিক স্থাপনা। এরমধ্যে অনেক বাণিজ্যিক স্থাপনাই গাড়ির ওয়ার্কশপ। যে যে স্থানে ‘কারওয়াশ সেন্টার’ আছে, সেখানেই খানাখন্দ বেশি।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কারওয়াশ সেন্টারগুলো তাদের সুবিধার জন্য গাড়ি ও মোটরসাইকেল ধোয়ার পর সে পানি রাস্তার পৌঁছে দেয়। এতে সড়কে পানি জমে থাকে। আবার কেউ কেউ সড়কেই শুরু করেছেন গাড়ি ধোয়ার কাজ। নিয়মিত সড়কে জমাটবদ্ধ পানি সড়কের ক্ষতি করছে। যে যে স্থানে পানি জমছে, সে সে স্থানেই বিটুমিন, পাথর উঠে গেছে। ফলে জায়গায় সৃষ্টি হয়েছে ছোট-বড় গর্ত।

thumbnail_1734524769447

ঘটনাটি দীর্ঘদিনের হলেও এ দিকে নজর দেয়নি সংশ্লিষ্টরা৷ সড়কটিকে নতুন করে নির্মাণ করার উদ্যোগও নেওয়া হয়নি, এমনকি খানাখন্দও মেরামত করা হয়নি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মীর খাইরুল ইসলাম ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘সড়ক মেরামত আমাদের একটি চলমান প্রক্রিয়া। কাজ চলতে থাকবে৷ যেসব এলাকায় সড়ক মেরামত করা প্রয়োজন, তা আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যেই করব।’

কারই/ইএ