images

জাতীয়

‘যুদ্ধের পর থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে রাজনৈতিক দূরত্ব সৃষ্টি হয়’

কাজী রফিক

১৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:৪৪ পিএম

images

জীবনের মায়া ত্যাগ করে একাত্তরে দেশ স্বাধীনের জন্য অস্ত্র হাতে যুদ্ধে নেমেছিলেন বাংলার দামাল ছেলেরা। তাদের দেশপ্রেম আর অসীম সাহসিকতা বাংলাদেশকে এনে দিয়েছিল স্বাধীনতা। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে পাক বাহিনীকে পরাজিত করলেও যুদ্ধের পর থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে রাজনৈতিক দূরত্ব গড়ে ওঠে৷ সৃষ্টি হয় নানা বিভাজন।

ঢাকা মেইলকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা জানান বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালেক আলো। একাত্তরে ২নং সেক্টরে সশস্ত্র যোদ্ধা ছিলেন তিনি। মুক্তিযুদ্ধের পর শিক্ষকতা করেছেন, কাজ করেছেন সংবাদকর্মী হিসেবেও।

দেশের জন্য যুদ্ধ করা মহান যোদ্ধাদের মধ্যে বিভাজন কেন? ঢাকা মেইলের এমন এক প্রশ্নের জবাবে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালেক আলো বলেন, 'যখন আমরা যুদ্ধে যাই, তখন কোনো দলীয়করণ ছিল না। সবাই একত্রে ঝাঁপাইয়া পড়ছি। আওয়ামী লীগ নাই, বিএনপি নাই, ন্যাপ নাই সবাই ঝাঁপাইয়া পড়েছি। এরপর আইসা এটা বিভেদের সৃষ্টি হইছে। এটার সূচনা কিন্তু ওখানেই হইছে৷ যেমন- বিশাল ঘরে শেখ মণি, মুন্সিগঞ্জের গভর্নর শামসুল হক, আমি ছিলাম, আরু একজন ছিল। ওখানে একটা মিটিং হয়। ওরা ওখানে একটা ভাগ করে নেয়। বিএলএফ, বাংলাদেশ লিবারেশন ফোর্স। এরা টপে থাকবে৷ মন্ত্রীর পোলা (ছেলে), নেতার পোলা, আমার পোলা, তার পোলা, এরা যুদ্ধ করবে না। যুদ্ধ করলে যদি মারা যায়! যুদ্ধ করবে সাধারণ মানুষ। সাধারণ মানুষের ছেলে-সন্তানরা যুদ্ধ করবে, এরা আইসা পরে নেতৃত্ব দেবে। এরা মন্ত্রীদের শালা, ভাই, বোন ইত্যাদি৷'

এই বীর মুক্তিযোদ্ধা আরও বলেন, 'ওখানে আমার নামও দেওয়া ছিল। কিন্তু আমি যাই নাই। আমি সাধারণভাবে যুদ্ধ করছি। ক্যাম্পের পরিচালকও ছিলাম।’

এই বীর মুক্তিযোদ্ধা আরও জানান, সেই বিভাজনই পরবর্তীতে রাজনৈতিক দলের পরিচয়ে মুক্তিযোদ্ধারের নানাভাগে বিভক্ত করে। 

আব্দুল খালেক আলো অভিযোগ করে বলেন, 'আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে যারা আওয়ামী লীগ করত, তারা ভাতা ডাবল পেত। যারা আওয়ামী লীগ করত না, তারা স্বাভাবিক পেত।'

কারই/এমআর