নিজস্ব প্রতিবেদক
২১ নভেম্বর ২০২৪, ০১:২৬ পিএম
বৈষম্যহীন, শোষণহীন, কল্যাণময় এবং মুক্ত বাতাসের রাষ্ট্রের যে স্বপ্ন নিয়ে একাত্তরে বীর মুক্তিযোদ্ধারা দেশ স্বাধীন করেছিলেন, তাদের সেই স্বপ্নপূরণে সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সকালে সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে ঢাকা সেনানিবাসে খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের উত্তরাধিকারীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
ধর্ম ও মতাদর্শের ভেদাভেদ ভুলে দেশের মানুষকে একটি বৃহত্তর পরিবারের বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ারও আহ্বান জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ছাত্র-জনতার বিপ্লবের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশের সূচনা হয়েছে। এই নতুন দেশে আমাদের দায়িত্ব সব মানুষকে একটি বৃহত্তর পরিবারের বন্ধনে আবদ্ধ করা। পরিবারে মতভেদ থাকবে, বাকবিতণ্ডা হবে; কিন্তু আমরা কেউ কারও শত্রু হব না। কাউকে তার মতের জন্য শত্রু মনে করব না। আমরা সবাই সমান। কেউ কারও ওপরে না, কেউ কারও নিচে না- এই ধারণা আমরা জাতীয় জীবনে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই।’
বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্বপ্নের দেশ গড়তে নিজের অঙ্গীকারের কথা ব্যক্ত করে ড. ইউনূস বলেন, ‘আমরা এখন থেকেই বাংলাদেশকে এমনভাবে গড়তে চাই যেন এই দেশে জনগণই সত্যিকার অর্থে সব ক্ষমতার উৎস হয়। বাংলাদেশ বিশ্ব দরবারে একটি মানবিক ও কল্যাণকর রাষ্ট্র হিসেবে সমাদৃত হয়।’
সব রাষ্ট্রের সঙ্গে বন্ধুত্বের সম্পর্ক রেখে, পারস্পরিক আস্থা ও সহযোগিতার পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে বাংলাদেশ চলবে জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা সকল রাষ্ট্রের সঙ্গে বন্ধুত্ব বজায় রাখব। আমাদের পররাষ্ট্রনীতির ভিত্তি হবে পারস্পরিক সম্মান, আস্থা, বিশ্বাস ও সহযোগিতা।’
খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারের সান্নিধ্য পাওয়ায় গর্বিত ও অনুপ্রাণিত হওয়ার কথাও বলেন অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান। বলেন, ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ, আহত এবং জীবিত ছাত্র জনতার কাছে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ থাকতে চাই। যে সুযোগ তারা আমাদেরকে দিয়েছে, তার মাধ্যমে আমাদের দেশকে পৃথিবীর সামনে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী দেশে পরিণত করতে আমরা শপথ নিয়েছি।’
তরুণদের সৃজনশীলতার বিকাশের ওপর গুরুত্বারোপ করে ড. ইউনূস বলেন, আমাদের তরুণ সমাজ সম্পদের সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও যেন মেধার ভিত্তিতে নিজ নিজ সৃজনশীলতার বিকাশ ঘটিয়ে দেশ গঠনে অবদান রাখতে পারে আমাদের সেই পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।’
এর আগে ঢাকা সেনানিবাসের শিখা অনির্বাণে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন ড. ইউনূস। পরে ঢাকা সেনানিবাসে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে ড. ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন তিন বাহিনী প্রধান। এরপর সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেন প্রধান উপদেষ্টা।
এমআর