images

কৃষি ও পরিবেশ / জাতীয়

কপ২৯-এ পর্যাপ্ত ও মানসম্পন্ন জলবায়ু অর্থায়নের আহ্বান বাংলাদেশের

২০ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৫২ পিএম

কপ২৯ সম্মেলনে পর্যাপ্ত ও মানসম্পন্ন জলবায়ু অর্থায়নের আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ। এ সময় দেশে এ ক্ষেত্রে বরাদ্দ ঘাটতির বিষয়টিও তুলে ধরা হয়। 

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান কপ২৯-এ বাংলাদেশের এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য তুলে ধরেন।

এ সময় তিনি নিউ কালেক্টিভ কোয়ান্টিফায়েড গোল (এনসিকিউজি)-এর আওতায় পর্যাপ্ত ও মানসম্পন্ন জলবায়ু অর্থায়নের ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান।

উপদেষ্টা অভিযোজন, প্রশমন এবং ক্ষয় ও ক্ষতিপূরণের জন্য ১.৩ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের প্রতিশ্রুতির প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করেন এবং অভিযোজন ও ক্ষয়-ক্ষতিপূরণের জন্য অনুদান ভিত্তিক অর্থায়ন এবং প্রশমনের জন্য স্বল্প সুদের ঋণের প্রস্তাব দেন।

তিনি বলেন, এনসিকিউজি-এর আওতায় সরকারি অর্থায়নই প্রধান উৎস হওয়া উচিত, বেসরকারি খাত সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে। অন্তত ২০% অর্থায়ন ইউএনএফসিসিসি-র (গ্রিন ক্লাইমেট ফান্ড, অ্যাডাপটেশন ফান্ড) মতো প্রতিষ্ঠিত তহবিলের মাধ্যমে হওয়া উচিত। 

জলবায়ু অর্থায়নের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে স্ট্যান্ডিং কমিটি অন ফাইন্যান্স-এর মাধ্যমে এর সংজ্ঞা নির্ধারণের প্রয়োজনীয়তার কথাও তিনি উল্লেখ করেন।

সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান ২০২৩ সালের অ্যাডাপটেশন ফান্ড গ্যাপ রিপোর্টের তথ্য তুলে ধরে বলেন, বাংলাদেশে প্রতিবছর ৮.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অভিযোজন প্রয়োজন, যেখানে দেশীয় উৎস থেকে মাত্র ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বরাদ্দ হচ্ছে। ফলে ৫.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিশাল ঘাটতি রয়েছে, যা বহিঃশ্রোতের অনুদান ভিত্তিক অর্থায়নের মাধ্যমে পূরণ করতে হবে।

তিনি উল্লেখ করেন, ক্ষয়-ক্ষতিপূরণ তহবিল এবং এনসিকিউজি-এর অগ্রগতিতে ধীরগতি এবং প্রধান দূষণকারী দেশগুলোর উদ্যোগের অভাবে জলবায়ু অর্থায়ন কার্যক্রম পিছিয়ে রয়েছে। বর্তমান পরিকল্পনাগুলো বৈশ্বিক উষ্ণতা ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সীমাবদ্ধ রাখতে যথেষ্ট নয়। এই দশকই আমাদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে।

এছাড়া, তিনি ওয়ারশ আন্তর্জাতিক প্রক্রিয়ার পর্যালোচনার স্থবিরতা এবং প্রশমন কর্মসূচির অগ্রগতি না হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেন। উন্নত দেশগুলোকে তাদের প্রতিশ্রুতি পূরণে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

গ্লোবাল স্টকটেক (জিএসটি)-এর ফলাফলের ভিত্তিতে নবায়নযোগ্য জ্বালানি সক্ষমতা তিনগুণ এবং জ্বালানি দক্ষতা দ্বিগুণ করার মাধ্যমে ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই জ্বালানির দিকে অগ্রসর হওয়ার প্রয়োজনীয়তা তিনি তুলে ধরেন।

পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশ উচ্চাভিলাষী লক্ষ্য অর্জন করতে প্রস্তুত, যদি প্রয়োজনীয় অর্থ ও প্রযুক্তিগত সহায়তা পাওয়া যায়।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন— ড. ফারহিনা আহমেদ, সচিব, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়;  ফারজানা মমতাজ, সচিব, বিদ্যুৎ বিভাগ, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়; ড. আবদুল হামিদ, মহাপরিচালক, পরিবেশ অধিদপ্তর; পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত পররাষ্ট্র সচিব এম রিয়াজ হামিদুল্লাহ এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব একেএম সোহেল প্রমুখ।

বিইউ/কারই/এএস