নিজস্ব প্রতিবেদক
২১ অক্টোবর ২০২৪, ০২:৫৮ পিএম
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেছেন, রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন যদি বলেন যে তার কাছে শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্রের কোনো ডকুমেন্ট নেই, তাহলে তার বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া উচিত, তা ছাত্রসমাজ ঠিক করবে।
সোমবার (২১ অক্টোবর) রাষ্ট্র সংস্কার নিয়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের একটি গোলটেবিল আলোচনায় এ মন্তব্য করেন সারজিস। তিনি রাষ্ট্রপতির এই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, “জাতীয় পার্টি একটি বিবেকহীন দল, যারা ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগকে সমর্থন দিয়েছে। তাদের নিয়ে রাজনৈতিক আলোচনা করা যুক্তিহীন।”
সারজিস আলম আরও বলেন, “ফ্যাসিস্ট সিস্টেম এখনও বিদ্যমান। বিভিন্ন এজেন্সি ও কুচক্রী মহল দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করতে চেষ্টা করছে। তাদের প্রতিহত করতে হবে এবং প্রয়োজনে আমরা আবার রাজপথে নামব।”
এদিকে একই বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আরেক সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ। রাষ্ট্রপতির মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, ‘হাসিনাকে উৎখাত করা হয়েছে; একটি অবৈধ সরকারকে জনগণ অভ্যুত্থানের মাধ্যমে উৎখাত করেছে। এখানে পদত্যাগপত্রের কোনো ভূমিকা নেই।’
এর আগে গত ১৯ অক্টোবর মানবজমিন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন জানান, তিনি শুনেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেছেন, কিন্তু তার কাছে এ বিষয়ে কোনো প্রমাণ বা নথি নেই।
মতিউর রহমান চৌধুরী উল্লেখ করেন, যদি শেখ হাসিনা পদত্যাগপত্র জমা দিয়ে থাকেন, তাহলে তা কোথাও থাকা উচিত। তিন সপ্তাহ অনুসন্ধানের পরও কোথাও কিছু পাওয়া যায়নি, এমনকি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগেও।
৫ আগস্ট ছাত্র আন্দোলন ও গণবিক্ষোভের মুখে শেখ হাসিনা দেশ ছাড়েন। সংবিধানের ৫৭(ক) অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করলে রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিতে হয়। রাষ্ট্রপতি বলেন, “আমি বহুবার পদত্যাগপত্র সংগ্রহের চেষ্টা করেছি, কিন্তু ব্যর্থ হয়েছি। হয়ত তার সময় হয়নি।”
তিনি আরও বলেন, ৫ আগস্ট সকালে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন থেকে ফোন আসে যে শেখ হাসিনা বঙ্গভবনে আসবেন, কিন্তু পরে জানানো হয় তিনি আসছেন না। সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকারও বলেন, তিনি পদত্যাগ করেছেন, তবে কিছু জানানো হয়নি।
রাষ্ট্রপতি উল্লেখ করেন, “মন্ত্রিপরিষদ সচিব যখন পদত্যাগপত্রের কপি নিতে এলেন, তখন বললাম, আমিও খুঁজছি।” তিনি জানান, এ বিষয়ে বিতর্কের সুযোগ নেই এবং বিষয়টি নিশ্চিত করতে তিনি সুপ্রিম কোর্টের মতামত চেয়েছেন। প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে আপিল বিভাগ ৮ আগস্ট এই বিষয়ে মতামত দেয়, যেখানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের প্রস্তাব দেওয়া হয়।
রাষ্ট্রপতি বলেছেন, তিনি গুজবের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিতে চান না এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
এইউ