জালিয়াতি করে পাওয়া কাফীর সেই পাসপোর্ট বাতিল

শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবিতে ছাত্র আন্দোলনের সময় সাভারে লাশ পোড়ানোর ঘটনায় সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে কারাগারে থাকা পুলিশ কর্মকর্তা আব্দুল্লাহিল কাফী পরিচয় গোপন করে পাসপোর্ট নিয়েছিলেন। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হলে ভুয়া তথ্য দিয়ে নেওয়া সেই পাসপোর্ট বাতিল করা হয়েছে এবং এ ঘটনায় গাফিলতির প্রমাণ পাওয়ায় পাসপোর্ট অধিদফতরের উপ-সহকারী পরিচালক জাহাঙ্গীর আলমকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

এই ঘটনায় আরও কয়েকজন কর্মকর্তা ও কর্মচারীর সংশ্লিষ্ট আছে বলে অভিযোগ আছে। তদন্তে প্রমাণ পেলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে অধিদফতরের পক্ষ থেকে।

সোমবার (৭ অক্টোবর) সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলনে পাসপোর্ট অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক এটিএম আবু আসাদ এসব কথা বলেন।

সংবাদ সম্মেলনে পাসপোর্ট অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক বলেন, তথ্য গোপন ও জাল কাগজপত্রের বিষয়টি ৪ সেপ্টেম্বর জানার পর পুলিশ কর্মকর্তা কাফীর নতুন পাসপোর্ট বাতিল করার পাশাপাশি সংশ্লিষ্টদের শো'কজ করা হয়।

এই কর্মকর্তা বলেন, ৯ সেপ্টেম্বর সংশ্লিষ্টরা এ বিষয়ে জবাব দেন। ওই দিন জাহাঙ্গীর আলম তার গাফিলতির কথা স্বীকার করেন। পরে সব কিছু যাচাই বাছাই করে নিশ্চিত হওয়ার পর রোববার তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠনের কথা তুলে ধরে আবু আসাদ বলেন, তদন্তে আর কারও গাফিলতির প্রমাণ পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এর আগে 'লাশ পোড়ানোর নেপথ্য কারিগর সেই কাফীর ভয়াবহ পাসপোর্ট জালিয়াতি' শিরোনামে ঢাকা মেইলে সংবাদ প্রকাশিত হয়। যেখানে কার পরামর্শ, সহযোগিতায় নিজেকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের কর্মী পরিচয় দিয়ে কাফী পাসপোর্ট নেন তার বিস্তারিত তুলে ধরা হয়।

অধিদফতরের এই কর্মকর্তা বলেন, আবদুল্লাহিল কাফী পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে নেওয়া তার সরকারি পাসপোর্ট ফেরত দিয়ে পরিচয় গোপন করে সিটি করপোরেশনের কর্মী হিসেবে সাধারণ পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেন। এজন্য তিনি সিটি করপোরেশনের জাল অনাপত্তি জমা দেন।

তার ভাষ্য, আগারগাঁওয়ের পাসপোর্ট দফতরে ওই পুলিশ কর্মকর্তা সাধারণের বেশে এসে সবার জন্য নির্ধারিত কাউন্টারে পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেন। তিনি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের স্প্রে ম্যান সুপারভাইজার হিসেবে পাসপোর্ট নিয়েছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গত ১৫ আগস্ট আবেদন করার দিনেই তিনি সাধারণ পাসপোর্ট পেয়ে যান। জরুরি ফি জমা দেওয়ায় নিয়মানুযায়ী তিনি ওইদিনই পাসপোর্ট পান।

এ সাধারণ পাসপোর্ট নিয়ে দেশের বাইরে যাওয়ার সময় গত ২ সেপ্টেম্বর বিমানবন্দরে গ্রেফতার হন সাভার জেলা পুলিশের বরখাস্ত অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাফী।

পরে তাকে ২০১৯ সালে ঢাকার হাজারীবাগে অপহরণ করে নির্যাতনের অভিযোগে সরকার পতনের পর দায়ের করা মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়।

বিইউ/জেবি