বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
০৭ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:৩২ পিএম
শহীদ আবরার ফাহাদের পঞ্চম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীর শাহবাগে সংহতি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (৭ অক্টোবর) ‘নিরাপদ বাংলাদেশ চাই’ নামে একটি সংগঠন এই সংহতি সমাবেশের আয়োজন করে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শহীদ আবরার ফাহাদের বাবা মো. বরকত উল্লাহ, বিশেষ অতিথি ছিলেন আবরার ফাহাদের ছোট ভাই বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবরার ফাইয়াজ।
সংহতি সমাবেশে আবরারের বাবা বলেন, ‘আমার সন্তানকে রাতভর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের মাধ্যমে শহীদ করা হয়েছে। আবরারের মতো আর কেউ যাতে এ নির্যাতনের স্বীকার না হয়, কারো পিতা-মাতার বুক যাতে খালি না হয়, সেজন্য সবাইকে নিপীড়নের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে।’
দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আবরার ফাহাদের হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত যারা কারাগারে আছে তাদের অবিলম্বে সবোর্চ্চ শাস্তি নিশ্চিত করত হবে।’
সংহতি সমাবেশে শহীদ আবরার ফাহাদের ছোট ভাই বলেন, ‘আবরার ফাহাদের রক্ত থেকে নতুন বাংলাদেশের সূচনা হয়েছে। শিক্ষাঙ্গনে যাতে আর কাউকে আবরার ফাহাদ না হতে হয় সেদিকে আমাদের দৃষ্টি রাখতে হবে।’
জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে সংহতি সমাবেশের মূল পর্ব শুরু হয়। এরপর জুলাই বিপ্লবে শহীদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
‘নিরাপদ বাংলাদেশ চাই’ এর মুখপাত্র রায়হান উদ্দীনের সভাপতিত্বে সংহতি সমাবেশে ‘নিপীড়নের বিরুদ্ধে সার্বজনীন ঘোষণাপত্র’ পাঠ করেন সংগঠনটির প্রতিনিধি বুয়েট শিক্ষার্থী আবদুন নুর তুষার। সমাবেশে শপথ বাক্য পাঠ করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক জাকারিয়া নিক্সন চৌধুরী।
সংগঠনটির মুখপাত্র রায়হান উদ্দীন বলেন, ‘জুলাই বিপ্লবের মধ্য দিয়ে স্বৈরাচার মুক্ত এদেশে যেন আর কোনো নিপীড়নের ঘটনা না ঘটে, নতুন ফ্যাসিবাদের উত্থান যাতে না হয়। রাষ্ট্রের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় অখণ্ডতার প্রশ্নে সবাইকে ধর্ম, বর্ণ ও রাজনৈতিক বিভেদ ভুলে এক কাতারে দাঁড়াতে হবে।’
সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন ছাত্র সংগঠক ও প্রকাশক আজিজুর রহমান আজাদ, একতার বাংলাদেমের মুখপাত্র ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক তাহমিদ আল মুদ্দাসসির চৌধুরী, বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের আহ্বায়ক আবদুল ওয়াহেদ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ, উমামা ফাতেমা, জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসিরুদ্দিন পাটওয়ারী, এবি পার্টির যুগ্ম সদস্য সচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, ছাত্রশিবিরের ঢাবি সভাপতি আবু সাদিক কায়েম, কেন্দ্রীয় সাহিত্য সম্পাদক সিবগাতুল্লাহ, বৈষম্যবিরোধী প্রকৌশলী পরিষদের সমন্বয়ক ইঞ্জিনিয়ার ইমরুল কায়েস পরাগ প্রমুখ।
সংহতি সমাবেশে শহীদ আবরার ফাহাদের শাহাদাত বার্ষিকী জাতীয় নিপীড়নবিরোধী দিবস হিসেবে ঘোষণার পক্ষে ঢাকার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রায় ১১৮টি সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠন সংহতি বইয়ে স্বাক্ষর করেন। সমাবেশে ঢাকার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রায় দুই হাজার শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
আরএ/জেবি