নিজস্ব প্রতিবেদক
০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:১৬ এএম
ঢাকার অপরাধ জগতের একটি পরিচিত নাম হলো সুইডেন আসলাম। তার আসল নাম শেখ মোহাম্মদ আসলাম হলেও সন্ত্রাসী কার্যকলাপের জন্য তিনি সুইডেন আসলাম নামে পরিচিত ছিলেন। ১৯৯৭ সালে যুবলীগ নেতা গালিব হত্যার পর গ্রেফতার হওয়া এই সন্ত্রাসী বুধবার গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন।
কিন্তু কীভাবে এই সুইডেন আসলাম পরিচিতি লাভ করলেন? আসলামের পরিবার ঢাকার নবাবগঞ্জ থানার আলগা ইউনিয়নের সাঁথিয়া গ্রামে। তার পিতা শেখ জিন্নাত আলী ছিলেন একটি রড-সিমেন্টের দোকানের মালিক। আসলাম ঢাকার ইন্দিরা রোডে থাকতেন এবং তেজগাঁও পলিটেকনিক স্কুল থেকে এসএসসি পাস করেন।
১৯৮০-এর দশকের শেষের দিকে আসলাম অপরাধ জগতে প্রবেশ করেন। ফার্মগেইটে 'চাইনিজ' নামের এক সন্ত্রাসীর সাথে বিবাদের পর আসলাম কুখ্যাত হয়ে ওঠেন। ১৯৮৭ সালে তিনি কিশোর শাকিলকে হত্যা করেন, যা তার অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের শুরু হিসেবে গণ্য হয়।
আসলামের অপরাধের তালিকা দীর্ঘ। ১৯৯৭ সালে যুবলীগ নেতা গালিব হত্যার পর তিনি গ্রেফতার হন। তখন তার বয়স ছিল ৩৫ বছর। গ্রেফতার হওয়া সত্ত্বেও আসলাম কারাগারে থেকে তার অপরাধ জগতের কার্যক্রম চালিয়ে যান। মোবাইল ফোন ব্যবহার করে তিনি বাহিনীর সাথে যোগাযোগ রাখতেন এবং মামলার সাক্ষীদের হুমকি দিতেন। তার বিরুদ্ধে মোট ২২টি মামলা হয়েছে, যার মধ্যে ৯টি ছিল হত্যা মামলা।
সুইডেন আসলাম কারাগারে থাকা অবস্থাতেই তার সাবেক স্ত্রী ইতি এবং অন্যান্য আত্মীয়দের সাথে সম্পর্কের কারণে আরও কয়েকটি হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ তার বিরুদ্ধে উঠেছে। ইতি, যিনি সুইডেনে থাকতেন, পরে দেশে ফিরে এসে মামুন নামের এক সন্ত্রাসীকে বিয়ে করেন। আসলাম এই হত্যাকাণ্ডের সাথেও জড়িত ছিলেন।
২০০৪ সালে মামুন হত্যার বিচারে সুইডেন আসলাম খালাস পেয়ে যান, তবে তার অন্যান্য অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের জন্য কারাগারে রয়ে যান।
২৭ বছর পর, ২০২৪ সালের ৩ সেপ্টেম্বর, ৬২ বছর বয়সী সুইডেন আসলাম কারাগার থেকে মুক্তি পান। যুবলীগ নেতা গালিব হত্যার মামলায় আটকে থাকার পর, সম্প্রতি সরকার পরিবর্তনের পর তিনি জামিন লাভ করেন এবং মুক্তি পান।
এত দীর্ঘ কারাবাসের পর, তার মুক্তি নিয়ে নানা গুঞ্জন চলছে। অনেকেই মনে করছেন, মুক্তির পর আসলামের বিরুদ্ধে এখনও অনেক প্রতিক্রিয়া হতে পারে।
এইউ