images

জাতীয়

সাড়ে তিনশ গুলি গায়ে নিয়ে কাতরাচ্ছেন মুফতি ফিরোজ

কাজী রফিক

২৯ আগস্ট ২০২৪, ০৯:৪৫ পিএম

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের শুরু থেকে মাঠে না থাকলেও আগস্টের ৩ তারিখ থেকে সক্রিয় ছিলেন মুফতি ফিরোজ আহমেদ। মাদ্রাসার এই শিক্ষক গুলিবিদ্ধ হয়েছেন সরকার পতনের দিনেই। শরীরে প্রায় সাড়ে তিনশ গুলি নিয়ে রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বিছানায় কাতরাচ্ছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার হাসপাতালটির ৪২১নং ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা মেলে মুফতি ফিরোজ আহমেদের। একদিকে কাত হয়ে শুয়ে আছেন। একটু পরপর ব্যাথায় নড়াচড়া করছেন।

এই প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে তিনি জানান, গাজীপুর কালিয়াকৈরের দারুল ইসলাম মাদ্রাসার শিক্ষক তিনি। ৫ আগস্ট গাজীপুর শখীপুর আনসার একাডেমি এলাকায় গুলি লাগে তার গায়ে।

মুফতি ফিরোজ আহমেদ বলেন, মাত্র ৫ হাত দূর থেকে পুলিশ আমাকে গুলি করেছে৷ পিঠে আর হাঁটুতে মিলিয়ে সাড়ে তিনশর মতো গুলি লেগেছে। প্রচণ্ড যন্ত্রণা হয়।

হাসপাতালে কেমন চিকিৎসা পাচ্ছেন— এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ৫ আগস্ট জয়দেবপুর হাসপাতাল থেকে এখানে আসি। ভর্তি নিতে চায়নি৷ ৭ তারিখ অনেক অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে ভর্তি করে৷ গুলি হাঁটু থেকে ৪টা বের করছে৷ আমি নিজে ৪টা বের করছি৷ বাকিগুলো এখনও শরীরে৷ আর নাকি বের করা যাবে না৷

ফিরোজ আহমেদ বলেন, ডাক্তাররা বলেছেন, আমাকে ৬ মাস রেস্টে থাকতে হবে৷ ব্যাথা থাকবে৷ এই অবস্থা ১ বছরও থাকতে পারে৷

পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম এই ব্যক্তি নিজের উন্নত চিকিৎসা চান। এক্ষেত্রে সামর্থ্যবানদের সহযোগিতা প্রত্যাশা করছেন তিনি।

350_Bullet--02

এদিকে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৪৫ জন রোগী আছেন যারা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত হয়েছেন। হাসপাতালটির ৪২১নং ওয়ার্ডের বয় রওশনের দেওয়া তথ্য মতে, তার ওয়ার্ডের ১৬ থেকে ৫৫নং বেডে (৪০ জন) সবাইবৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে আহত রোগী। একই ওয়ার্ডের অতিরিক্ত ১২নং বেডেও আন্দোলনে আহত হয়ে চিকিৎসাধীন আছেন একজন। পোস্ট অপারেটিভ বিভাগে দুদিন আগেও আন্দোলনে আহত রোগী ছিলেন ৪ জন। বর্তমানে সেখানে আছেন ১ জন। এছাড়া ৫২৬নং ওয়ার্ডের ১১নং বেডে একজন ও ১৩/এ কেবিনে ১ জন রোগী ভর্তি আছেন।

হাসপাতালটির আন্তঃবিভাগ ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটি ওয়ার্ডেই স্বাভাবিক সংখ্যক রোগী আছেন। চলছে চিকিৎসা কার্যক্রম। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহতদের বেশিরভাগই হাসপাতালের চতুর্থ তলার ৪২১নং ওয়ার্ডে।

রোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আন্দোলন চলাকালে এবং সরকার পতনের পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীদের ঠিকভাবে সেবা দেয়নি। তবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর হাসপাতালটি আসেন শিক্ষার্থীরা৷ এরপর থেকে শুরু হয় রোগীদের যত্ন নেওয়া। অনেকেই আবার উন্নত চিকিৎসার জন্য যাচ্ছেন অন্যান্য হাসপাতালে৷

কারই