জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
২৬ জুন ২০২৪, ০৮:৫৬ পিএম
বর্তমানে দেশের ৭০ লাখ লোক মাদকাসক্ত। তারা বছরে এক লাখ কোটি টাকার মাদক সেবন করে। যা বাংলাদেশের বাজেটের প্রায় এক চতুর্থাংশ। উন্নয়ন বাজেটের ৫৬ শতাংশ। এছাড়াও গত ১০ বছরে মাদকাসক্ত সন্তানের হাতে প্রায় ২০০ বাবা-মা হত্যার শিকার হয়েছেন।
বুধবার (২৬ জুন) জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘মাদকের ভয়াবহতা, যুব সমাজের নৈতিক অধঃপতন ও আজকের বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এ তথ্য উঠে আসে।
আন্তর্জাতিক মাদকবিরোধী দিবস উপলক্ষে এ সেমিনারের আয়োজন করে যুব উন্নয়ন সংসদ নামের একটি সংগঠন।
সেমিনারে বক্তারা বলেন, মাদকাসক্তি আধুনিক সভ্যতার বিপজ্জনক রোগ। এইডস, ক্যানসার ও হৃদরোগের মতো মাদকাসক্তিও ভয়াবহ রোগ। এটি পারমানবিক বোমার চেয়েও বেশি ক্ষতিকর।
বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন-বিএফইউজের সভাপতি রুহুল আমিন গাজীর সভাপতিত্বে এতে বক্তব্য রাখেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান ও সাবেক সচিব ড. মোহাম্মদ আবদুল মজিদ, বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব কাদের গনি চৌধুরী, সাবেক অতিরিক্ত সচিব মো. হুমায়ুন কবীর, অধ্যাপক ড. শামসুল আলম, অধ্যাপক ডা. আতিয়ার রহমান, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. শহিদুল ইসলাম প্রমুখ।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ প্রফেসর নূর নবী মানিক। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন যুব উন্নয়ন সংসদের চীফ কো-অর্ডিনেটর মুহাম্মদ কামাল হোসাইন।
সাবেক সচিব ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মজিদ বলেন, মাদকের ভয়াল থাবায় ধ্বংসের পথে তরুণ প্রজন্ম। শহর থেকে গ্রাম, স্কুল থেকে বিশ্ববিদ্যালয় সর্বত্রই মাদক পাওয়া যাচ্ছে হাতের নাগালে। মাদক এক নীরব ঘাতক। এই ভয়াল মাদকের ফলে ভেঙে যাচ্ছে পারিবারিক বন্ধন, নষ্ট হচ্ছে আস্থা-বিশ্বাস। পরিবার ও সমাজে তৈরি হচ্ছে নতুন আতঙ্ক।
রুহুল আমিন গাজী বলেন, হতাশা মাদকাসক্তির অন্যতম কারণ। তাই হতাশা রোধে যুবসমাজের জন্য নিয়মিত লেখাপড়া, খেলাধুলা, সংস্কৃতি চর্চার পাশাপাশি কর্মসংস্থানের ক্ষেত্র সম্প্রসারণ জরুরি বলে আমি মনে করি।
কাদের গনি চৌধুরী বলেন, দেশের ৭০ লাখ লোক মাদক সেবন করেন। আর তারা এক লাখ কোটি টাকার মাদক সেবন করে। যা বাংলাদেশের বাজের প্রায় এক চতুর্থাংশ। উন্নয়ন বাজেটের ৫৬ শতাংশ। গত ১০ বছরে মাদকাসক্ত সন্তানের হাতে ২০০ বাবা-মা মারা গেছেন।
ইউনাইটেড নেশনস কনফারেন্স অন ট্রেড অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট-আঙ্কটাড এর উদ্বৃতি দিয়ে কাদের গনি চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ থেকে মাদকের কারণে প্রতিবছর পাচার হয়ে যায় ৪৮১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বা প্রায় ৫ হাজার ১৪৭ কোটি টাকা। আর মাদক কেনাবেচা করে অর্থ পাচারের দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বে পঞ্চম।
মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, উঠতি বয়সী সন্তানরা কোথায় যাচ্ছে, কার সাথে মিশছে, স্বাভাবিক জীবনযাত্রার ব্যত্যয় ঘটাচ্ছে কি না তা অভিভাবকদের সর্বাগ্রে নজর দিতে আমি অনুরোধ জানাই।
বিইউ/এমএইচএম