নিজস্ব প্রতিবেদক
১৭ মে ২০২৪, ১২:১২ পিএম
টানা চার মেয়াদ ধরে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ সরকার দেশের মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন ঘটিয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গ্রামের মানুষের নাগরিক সুবিধা বাড়ানোর দিকে সরকার জোর দিচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেছেন, গ্রামীণ অর্থনীতি যত বেশি মজবুত হচ্ছে, শিল্প কলকারখানা বাড়ছে, গ্রামের অর্থনীতি পাল্টে গেছে। যারা এক বেলা ভাত খেতে পারত না, তারা চার বেলা খায়। হাট বারের বাইরে কিছু পাওয়া যেত না, এখন সুপার মার্কেট হয়েছে।
শুক্রবার (১৭ মে) সকালে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ মিলনায়তনে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির ২২তম দ্বিবার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যদ্ধ-সংঘাতের কারণে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক সংকট চলছে। বাংলাদেশেও তার প্রভাবমুক্ত নয়। নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞা না থাকলে দেশ আরও এগিয়ে যেত।
এ সময় তিনি আগের সরকারগুলোর সমালোচনা করেন। জিয়াউর রহমান দেশে খেলাপি ঋণের সংস্কৃতি ও এলিট শ্রেণি তৈরি করেন দাবি করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার মধ্য দিয়ে দেশের অগ্রযাত্রা থামিয়ে দেওয়া হয়। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর যারা ক্ষমতা দখল করেছিল তাদের সময় দেশের মাথাপিছু আয় বাড়েনি, কারণ গণতন্ত্র বা গণতান্ত্রিক ধারা ছাড়া দেশ এগোতে পারে না। রাজনীতিবিদদের জনগণের কাছে ওয়াদা থাকে। ক্ষমতা যারা দখল করে তাদের জনগণের কাছে ওয়াদা থাকে না। দেশে একের পর এক ক্যু হয়েছে। যে কারণে দেশ স্থিতিশীল হতে পারেনি।
আরও পড়ুন
‘গণভবনেও চাষাবাদ শুরু হয়েছে, এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি রাখবেন না’
‘যথাযথ পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের ফলেই এগিয়ে যাচ্ছে দেশ’
শেখ হাসিনা বলেন, ৭৪ এ দুর্ভিক্ষের চিত্র তুলে ধরে বঙ্গবন্ধুকে দেশে বিদেশে হেয় করা হয়েছে। দেশে ফেরার পর দেখেছি দিনের পর দিন দুর্ভিক্ষ। মানসিক ভারসাম্যহীন যে বাসন্তির ছবি দেখিয়ে এত বড় ক্ষতি করা হলো, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর সেই বাসন্তির কোনো খবর নেয়নি ক্ষমতা দখলকারীরা। বঙ্গবন্ধুর জীবন নিয়েও বাসন্তিদের কোনো পরিববর্তন আসেনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বৈরশাসকেরা শুধু ক্ষমতা ভোগ করা বুঝত। কে কোন ব্র্যান্ডের জিনিস পড়বে সেসব নিয়েই ব্যস্ত থাকত। আসলে স্বৈরশাসকেরা যখন ক্ষমতায় আসে তখন দুর্নীতিই নীতি হয়ে যায়। জিয়াউর রহমানের সময়ই খেলাপি ঋণের কালচার শুরু হয়। যা আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে ধীরে ধীরে তা কমাতে শুরু করে।
এদেশের মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন ঘটানোই তার একমাত্র লক্ষ্য জানিয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, বাবা মা ভাই হারিয়ে বাবার স্বপ্ন পূরণ করতে দেশে ফিরেছিলাম। দেশের মানুষের মধ্যেই নিজের হারানো পরিবারকে খুঁজে পেয়েছিলাম। অর্থনীতি বলতে আমি বুঝি শুধু মানুষের কল্যাণ করতে হবে। আমার প্রতিটি কাজের ভিত্তি তৈরি করে দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, দেশকে এগিয়ে নিতে বেসরকারি খাত উন্মুক্ত করা হয়েছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলেছি। গ্রাম-গঞ্জ পর্যন্ত প্রযুক্তিগত যোগাযোগ তৈরি করা হয়েছে। সমুদ্র সম্পদকে কাজে লাগাতে হবে। বাজার তৈরি করতে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বাড়াতে হবে, কর্মসংস্থান বাড়াতে হবে। তরুণদের নিজে উদ্যোক্তা হতে উৎসাহিত করা হচ্ছে।
আগামী ৬ জুন বাজেট দেওয়া হবে জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, বাজেট আমরা ঠিক মতো দিতে পারবো, বাস্তবায়নও করব। দেশি-বিদেশি নানা কারণে জিডিপি কিছুটা হয়তো কমবে, সেটা পরবর্তী সময়ে উত্তরণ করতে পারব, সে আত্মবিশ্বাসও আছে।
জেবি