images

জাতীয়

তরুণদের চোখ স্ট্রিট ফুড ব্যবসায়

কাজী রফিক

০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৬:৫৭ পিএম

মাধ্যমিকের গণ্ডি পেরিয়ে কলেজে যাওয়ার সুযোগ হয়নি রিয়াজুল ইসলামের। ২০২২ সালে স্কুল পেরোতেই পরিবারের দায়িত্ব কাঁধে উঠে তার। মাধ্যমিকের সনদে ভালো বেতনের চাকরি জোটেনি। তাই নেমেছেন ব্যবসায়। সামান্য পুঁজি দিয়ে শুরু করেন ঝালমুড়ি, পেঁয়াজু, পুরি বিক্রি। মূলধন কম থাকায় দোকান নেওয়া হয়নি। তাই ব্যবসা জুড়েছেন সড়কে।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরের মোহাম্মদীয়া হাউজিং এলাকার সড়কে প্রতিদিন বিকেলে দেখা মেলে রিয়াজুলের।

কলেজে যেতে না পারার আক্ষেপ যেমন তার রয়েছে, একই সঙ্গে সড়কে ব্যবসা করে ভালো উপার্জনের সন্তুষ্টির কথা জানিয়েছেন এই তরুণ।

ঢাকা মেইলের সঙ্গে আলাপকালে রিয়াজুল বলেন, কলেজে ভর্তি হই নাই। টাকা-পয়সার সমস্যা ছিলো। এখন ব্যবসা করি। দোকান নেওয়ার টাকা নাই। অনেক টাকা এডভান্স লাগে। রাস্তায় এডভান্স লাগে না।

দিনে বাজার করা, ঝালমুড়ি, পেঁয়াজু, পুরির উপকরণ তৈরি করেন। বিকালে শুরু হয় বিক্রি। চলে রাত ১০টা পর্যন্ত। দিনভর পরিশ্রমের পর আয়ের অঙ্কটা হাজার টাকায় পৌছে যায় বলে জানান এই তরুণ।

একই এলাকায় ‘ফাস্ট ফুড’ খাবার বিক্রি করেন মো. শামিম। চাকরি ছেড়ে দিয়ে রাস্তায় দোকান বসিয়েছেন তিনি। বিক্রি করেন বার্গার, স্যান্ডুইচ, ফ্রাইড চিকেন।

ঢাকা মেইলের সঙ্গে আলাপকালে এই তরুণ বলেন, কম্পিউটারের দোকানে কাজ করতাম। ওই কাজ ছেড়ে এখন ফুটে (ফুটপাতে) দোকান দিয়েছি। ইনকাম ভালো।

শুধু রিয়াজুল কিংবা শামিম নয়। পড়াশোনা চালিয়ে যেতে না পারা অনেক তরুণই নিজের ও পরিবারের জীবিকার তাগিদে ফুটপাতে খাবার ব্যবসায় ঝুঁকছেন। অনেকেই পড়াশোনার পাশাপাশি চালাচ্ছেন ভ্রাম্যমাণ খাবার দোকান।

নগরীর মোহাম্মদপুর, আদাবর, ধানমন্ডির সাত মসজিদ রোড, হাতিরঝিল, মিরপুর, ভাটারা এলাকায় প্রতিদিন বিকেলের পর যত খাবার দোকান দেখা যায়, তার সবই পরিচালনা করছেন তরুণরা।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে স্নাতক পড়ছেন জাহিদুল ইসলাম। পড়াশোনার পাশাপাশি জুড়েছেন ব্যবসা। পুঁজি কম হওয়ায় দোকান পেতেছেন সড়কে।

জাহিদুল ইসলাম বলেন, ইনভেস্টমেন্ট নাই। একটা দোকান নিতে গেলে কমপক্ষে তিন লাখ টাকা এডভান্স লাগে৷ এর কম এডভান্সে যেসব দোকান পাওয়া যায়, তা খাবার বিক্রির জন্য সুবিধাজনক না। এত টাকা আমার কাছে নাই। তাই কম খরচে একটা গাড়ি (ভ্রাম্যমাণ খাবার বিক্রির গাড়ি) কিনেছি। এলাকার বড় ভাইদের বলে জায়গাটা নিয়েছি। এখানেও খরচ আছে৷ দোকান নিলে যে ভাড়াটা দেয়া লাগতো তার চাইতে কম খরচ হয় না। তবে এডভান্সের ঝামেলা নাই।

অন্য ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ফুটপাতে পুলিশি ঝামেলা, চাঁদা, উচ্ছেদের মতো চাপ থাকার পরও তারা ফুটপাতে ব্যবসা করতেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। এর কারণ, কম বিনিয়োগে ব্যবসা করা যায়। জনবহুল জায়গার সড়কে ও ফুটপাতেই দোকানগুলো বসে। ফলে বিক্রি ভালো। বাকি কিংবা লোকসানের ঝামেলা নেই। এসব কারণে তরুণরাই বেশি ঝুঁকছেন স্ট্রিট ফুডের ব্যবসায়।

কারই