images

জাতীয়

চালের বাজার তদারকিতে খাদ্য মন্ত্রণালয়

নিজস্ব প্রতিবেদক

২৩ জানুয়ারি ২০২৪, ০২:১৮ পিএম

জাতীয় গণমাধ্যমের শিরোনাম 'চালের দাম বেশি বেড়ে সামান্য কমলো'। গতকাল চালের দামকে 'অস্বাভাবিক' আখ্যা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এত কিছুর মধ্যেও বাজার সংশ্লিষ্টদের তেমন কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি। চালের দাম একদফা কমার পর গত কয়েকদিন ধরে মাঠে খাদ্য মন্ত্রণালয়। 

মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) সকালেও জোট বেঁধে বাজার তদারকিতে নেমেছেন খাদ্য মন্ত্রণালয়, ভোক্তা অধিকারের কর্মকর্তারা। 

একযোগে তদারকি চালানো হয় রাজধানীর মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট, মোহাম্মদপুর টাউন হল বাজার, বাবু বাজার ও কারওয়ান বাজারে।

416293142_1538318303657422_7879341906428522776_n

এর মধ্যে বেলা ১২টায় খাদ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ড. জয়নাল আবদিনের নেতৃত্বে মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে অভিযান শুরু হয়। 

এক ডজন কর্মকর্তার একটি দল শুরুতে একটি আড়তে যান। আড়ত খোলা থাকলেও অভিযানের খবরে পালিয়ে যান আড়তদার। পরপর তিন আড়তে একই ঘটনার সম্মুখীন হন অভিযান পরিচালনাকারীরা। 

বেলা ১২টা ২০ মিনিটে অভিযান পরিচালনাকারীদের সঙ্গে যোগ দেন কৃষি মার্কেট চাল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মনিরুল ইসলাম মন্টু। তাকে সঙ্গে নিয়েই বিভিন্ন আড়ত ঘুরে দেখেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। 

আরও পড়ুন

তিন পণ্যে শুল্ক-কর কমাতে এনবিআরকে চিঠি

দিনাজপুর রাইস এজেন্সি ঘুরে নিয়মের কিছু ব্যত্যয় পান খাদ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ড. জয়নাল আবদিন৷ তবে আড়তদার আসাদুজ্জামানকে কোনো শাস্তির মুখোমুখি হতে হয়নি। 

এক প্রশ্নের জবাবে আসাদুজ্জামান জানান, তার চালের মূল্য তালিকা নবায়ন করা হয়নি। তবে তাকে কোনো জরিমানা করা হয়নি। 

415554860_1144735540269368_5649225923240230610_n

কৃষি মার্কেটের ব্যবসায়ী সমিতির তথ্য বলছে, মার্কেটটিতে পাইকারি চালের আড়ত রয়েছে ১৭০টি। এরমধ্যে গোটা দশেক আড়ত ঘুরে দেখেন অভিযান পরিচালনাকারীরা। এ সময় কোনো ব্যবসায়ীকে জরিমানা বা অন্য কোনো শাস্তির মুখোমুখি হতে হয়নি। 

অভিযানকালে সোহেল এন্টারপ্রাইজের মালিক মাহবুবুর রহমান সোহেল অভিযোগ করেন নাজিরসাইল চালের বিষয়ে।

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের তিনি দেখান নওগাঁ থেকে ৭৩ টাকা কেজি দরে চাল কিনেছেন তিনি৷ গাড়ি ভাড়াসহ তার খরচ পরেছে ৭৫ টাকার মতো। যা স্বাভাবিক দরের পরিপন্থী। এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে অনুরোধ জানান এই ব্যবসায়ী। 

আরও পড়ুন

চালের দাম নিম্নমুখী, বলছে খাদ্য অধিদফতর

এদিকে অভিযানকালে নানা রকম কথা বলতে শোনা যায় মার্কেটের ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের। তাদের অভিযোগ, দীর্ঘ সময় চালের দাম বেশি ছিলো। সে সময় সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের কোনো তদারকি দেখা যায়নি। দাম কমার পর তারা অভিযানে এসেছেন। 

এখলাসুর রহমান নামে একজন ক্রেতা বলেন, আমি নির্বাচনের আগে যে দামে কিনেছি, তার থেকে চালের দাম এখন অনেক বেশি। দাম কমার পরেও আগের দাম তুলনায় আমাকে বেশি দামে কিনতে হয়েছে। এখন অভিযানে এসেছে কেন? আরও আগে আসা উচিত ছিলো তাদের।'

তদারকি শেষে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন খাদ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ড. জয়নাল আবদিন।

415805328_348802538037057_6568914810470812857_n

তিনি বলেন, মাঝখানে দাম বেড়ে গেছে সেটা কমছে এবং সেটা ভালোই। আমরা আশা করছি, খুব দ্রুতই চালের দাম আগের পর্যায়ে চলে আসবে।

জয়নাল আবদিন আরও বলেন, দোকানদাররা বলছে, বাড়ার গতির সঙ্গে কমার গতি সেভাবে হচ্ছে না। তবে কমছে। কিছু জায়গায় আমরা অভিযান চালাচ্ছি। নজরদারী আছে। আমরা তেমন কোনো ত্রুটি পাইনি। ব্যবসায়ীরা চলে গেছে-আমরা আবার আসব। প্রয়োজনে না বলে আসব।

আরও পড়ুন

কমছে পেঁয়াজের ঝাঁজ, নাগালের বাইরে আদা-রসুন

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জরিমানা আমরা করছি। যেখানে দাম বাড়ানো হয়েছে জেলা পর্যায়ে মোকামগুলোতে সেখানে ব্যাপক অভিযান হচ্ছে। এখানে আমরা করব না, ব্যাপারটা এমন না। অনিয়ম পেলে বড় অ্যাকশনে যাব। আসলে আমরা বড় ধরণের কোনো অনিয়ম পাইনি। এখানে তেমন কোনো অনিয়ম নেই। বিক্রয়ের সঙ্গে ক্রয়ের খুব একটা তফাত নেই। বস্তা প্রতি জেলা পর্যায়ে মনিটর চলছে। তারপর বাজারে বস্তায় ১০০ থেকে ২০০ টাকা কমেছে যেগুলোর বেশি দাম।

কৃষি মার্কেট চাল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মনিরুল ইসলাম মন্টু সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, চালের দাম বাড়ার বিষয়ে আমরা ব্যবসায়ীরা ‍বুঝতেই পারি নাই। হঠাৎ করেই দামটা বেড়ে গেছে। রাতারাতি মিলাররা দুই-একদিনের মধ্যে বাড়িয়েছে।

চালের দামের কারসাজি বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে অভিযোগ অস্বীকার করেন এই ব্যবসায়ী। তিনি দাবি করেন, চালের দাম ওঠা-নমার সঙ্গে শতভাগ জড়িত 'রাইস মিল' মালিকরা। আড়তদার হিসেবে নিজেদের 'কমিশন এজেন্ট' আখ্যায়িত করেছেন তিনি। 

কারই/এমএইচএম