images

জাতীয়

‘এক টাকার জিনিসও বের করতে পারিনি, আমার সব শেষ’

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৩ জানুয়ারি ২০২৪, ০২:২৯ পিএম

ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে নিঃস্ব হয়ে গেছেন রাজধানীর মোল্লাবাড়ি বস্তির বাসিন্দারা। কাঠ, বাঁশ ও টিনের ঘর থেকে কিছুই বের করতে পারেননি বস্তিবাসী। আসবাবপত্র, জমানো টাকা সব পুড়ে ছাই হয়েছে তাদের। প্রচণ্ড ঠান্ডায় সরকারি সহযোগিতার আশায় আছেন তারা। আগুনের ঘটনায় নিঃস্ব মূসা মিয়া বলেন, ১৫ বছরের সংসার। সব মূহুর্তেই পুড়ে ছাই। এক টাকার জিনিসও বের করতে পারিনি।

শনিবার (১৩ জানুয়ারি) সরেজমিনে রাজধানীর কারওয়ান বাজারের পাশে আগুনে পুড়ে যাওয়া মোল্লাবাড়ি বস্তিতে এমন চিত্র দেখা যায়।

সব হারানো মূসা মিয়া বলেন, জানের ক্ষতি হয়নি। কিন্তু মালামাল টাকা পয়সা সব গেছে। এই মোল্লাবাড়ির সবার ঘরে দুই-তিন লাখ টাকার মাল ছিলো। আমি আজ ১৫ বছর যাবত এখানে থাকি। একটা সুতাও বের করতে পারিনি। আমার সব শেষ। ঘরের মধ্যে ফ্রিজ, টিভি, ওয়ারড্রব সবই ছিল। এখন কিছুই নাই। আমার ঘরে দেড় লাখের বেশি জমানো টাকা ছিলো। ডিব্বার ভেতর হিসেব করা দেড় লাখ টাকা ছিলো। ছাই হয়ে গেছে।

agun_3

আগুন লাগা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমার পরিবারে চারজন মানুষ ছিল। আমরা দুই রুম নিয়ে থাকতাম। আমরা তিন বাপ-পুত মাছের আড়তে কাজ করি। রাত দুইটার দিকে মানুষের চিল্লাপাল্লাতে ঘুম ভাঙছে। সবাই টিনের মধ্যে বারি দিচ্ছিল, ঘুম থেকে উওঠার জন্য। উঠে দেখি আগুন আর আগুন। কোনো রকমের সবাইকে নিয়ে বের হইছি।

আরও পড়ুন

‘এত মানুষের টাকা কই থেকে দেবো’

আবুল হোসেন নামে ওপর ব্যক্তি বলেন, আমি আমার পরিবারের ৫ জন সদস্য নিয়ে আজ ছয় বছর যাবত এখানে থাকি। বস্তির মাঝামাঝি দুইটা রুম ছিল।  কিভাবে আগুন লাগছে আমরা জানি না। তবে মাঝামাঝি জায়গা থেকে লাগছে। আমি দুইটার সময় টয়লেটে যেতে বের হয়েছিলাম। এর মধ্যে একজন বলল, আগুন দেখা যাচ্ছে। মূহুর্তের মধ্যেই পুরো বস্তিতে আগুন ছড়িয়ে পরে। আমরা একদম অসহায় হয়ে পড়েছি। দিন আনি, দিন খাই। এখন আমরা কি করব জানি না।

আগুন লাগার পরের পরিস্থিতি তুলে ধরে তিনি বলেন, বস্তি থেকে বের হওয়ার একটা মাত্র সরু গলি। এখানে প্রায় তিনশো এর মতো ঘর আছে। এত মানুষ বের হওয়ার কোনো অবস্থা নাই। দেড় ফুটের একটা রাস্তা, হাজার খানেক মানুষ কেমনে বের হবে? আগুনে মানুষ মারা গেছে, ধাক্কা ধাক্কিতে অনেক আহত হয়েছে।

agun_2

ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে বস্তিটিতে আগুন লাগে। খবর পেয়ে দ্রুত ছুটে যান ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। প্রায় দেড় ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন ফায়ার সার্ভিসের ১৩টি ইউনিট।

ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক মো. ছালেহ উদ্দিন জানান, কাঠ, বাঁশ আর টিনের তৈরি একতলা-দোতলা আনুমানিক তিনশো ঘরবাড়ি পুড়েছে। বেশি কাঠ-বাঁশ হওয়ার কারণে আগুনটা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। সাধারণত বস্তিতে শর্টসার্কিট বা গ্যাসের লাইন থেকে আগুন লাগে। কীভাবে এই আগুন লেগেছে সেটা আমরা তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তীতে জানাব।

এমএইচ/এমএইচএম