ঢাকা মেইল ডেস্ক
৩১ অক্টোবর ২০২৩, ১০:৪৯ পিএম
বিএনপি-জামায়াত ও সমমনা দলগুলোর ডাকা টানা তিন দিনের সর্বাত্মক অবরোধের প্রথম দিনে উদ্বেগ ও শঙ্কায় দেশের বৃহত্তর লঞ্চ টার্মিনাল সদরঘাটে নৌ সেবা চলছে। তবে দক্ষিণাঞ্চল থেকে নৌপথে সদরঘাটে আসা লঞ্চগুলোয় যাত্রীদের তেমন ভিড় ছিল না। আবার রাজনৈতিক সহিংসতার মধ্যে অবরোধ কর্মসূচির মাঝে নৌপথে চলাচলে যাত্রী ও চালকদের মাঝেও ছিল উৎকণ্ঠা।
মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) রাজধানীর সদরঘাট ও আশপাশের এলাকায় ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
সরেজমিন ঘুরে সদরঘাটে সবধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত পুলিশ সদস্যদের সতর্ক অবস্থানে থাকতে দেখা যায়। সেই সঙ্গে নিত্যদিনের মতো ঘাট এলাকায় লঞ্চ চলাচল করলেও যাত্রীদের সংখ্যা ছিল নগণ্য। চলমান রাজনীতির অস্থিরতা কারণেই এমন অবস্থার কথা জানিয়েছেন লঞ্চঘাট সংশ্লিষ্টরা।

অবরোধ কর্মসূচির মাঝে দক্ষিণাঞ্চলের লঞ্চগুলো প্রস্তুত থাকলেও যাত্রী তেমন নেই বলে জানিয়েছেন চাঁদপুর-ইলিশা রুটের মাস্টার রমজান আলী। ঢাকা মেইলকে তিনি বলেন, সকাল থেকে যাত্রীর সংখ্যা খুব কম। মানুষ ঝামেলার ভয়ে ঘর থেকে বের হচ্ছেন না, আবার বের না হলে যাবে কি করে। ফলে শঙ্কা নিয়েই কেউ কেউ চলাচল করছেন।
গ্রীনলাইন শিপিং কাউন্টারের ম্যানেজার মো. আফজাল ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘আমাদের লঞ্চ রেডি আছে। যাত্রী হলে আমরা ছাড়তে প্রস্তুত আছি। অল্পসংখ্যক যাত্রী নিয়ে আসলে খরচও উঠে আসবে না। যাত্রীরা আসলে আতঙ্কে আছে, তাই কেউ আসছে না।’
অন্যদিকে, যাত্রীরাও অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বের না হওয়ার কথা জানিয়েছেন। ঢাকা থেকে নৌপথে শুধু তারাই দক্ষিণাঞ্চলে যাতায়াত করছেন, যাদের জরুরি কাজ রয়েছে।

বরিশাল থেকে আসা শফিক ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘কয়েকদিন ধরে রাজধানীতে একটা বিভীষিকাময় পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তাতে আমার মতো সাধারণ মানুষেরা একটা ভয়ের মধ্যদিন পার করছি। তবে বিগত দিনে হরতাল-অবরোধে যে ধরনের সহিংসতা তৈরি হতো, তা থেকে বর্তমান সময়ে হরতাল-অবরোধে সহিংসতার মাত্রা কিছুটা কম।’
চাঁদপুর থেকে আসা অপর যাত্রী রাশেদুল ইসলাম বলেন, ‘দেশে দ্রব্যমূল্যের যে অবস্থা, তাতে যদি আমাদের মতো সাধারণ মানুষেরা ঘরে বসে থাকি, তাহলে তো জীবন চলবে না। জীবনের তাগিদেই আমাদের বের হতে হবে, যতই হরতাল-অবরোধ থাক না কেন।’

এদিকে, মঙ্গলবার সকাল থেকেই সদরঘাট এলাকায় পুলিশের উপস্থিত ছিল চোখে পড়ার মতো। নাম প্রকাশ না করার শর্তে পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘আমাদের কাছে তথ্য আছে, অবরোধকে ঘিরে যেকোনো ধরনের সহিংসতার সৃষ্টি হতে পারে। তাই আমরা সকাল থেকেই সদরঘাট এলাকায় অবস্থান নিয়েছি। প্রতিদিনের মতো সন্দেহভাজনদের জিজ্ঞাসাবাদ ও তল্লাশি করা অব্যাহত রেখেছি। যাতে কেউ কোনো নাশকতা করতে না পারে।’
প্রতিনিধি/আইএইচ