জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
৩০ অক্টোবর ২০২৩, ১১:২৫ পিএম
একদিনের হরতাল শেষে টানা তিনদিনের অবরোধের কবলে পড়তে যাচ্ছে দেশ। আগামী সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে অনেকদিন পর সামনে আসা এই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সাধারণ মানুষের উদ্বেগ উৎকণ্ঠায় আছেন। অন্যদিকে বিভিন্ন দাবিতে অবরোধের ডাক দেয়া বিএনপি সবাইকে সর্বাত্মক অবরোধ পালনের আহ্বান জানিয়েছে।
তবে বিএনপির পাশাপাশি জামায়াত ইসলামী বাংলাদেশ ও বিএনপির যুগপৎ আন্দোলনের শরিকরাও অবরোধের ডাক দিয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গণমাধ্যম, অ্যাম্বুলেন্সসহ বেশ কিছু পরিবহন এই অবরোধের আওতামুক্ত থাকবে।
সোমবার (৩০অক্টোবর) রাতে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, দেশে চলমান বিচারহীনতা, অপশাসন, সীমাহীন দুর্নীতি, অনাচার, অর্থ পাচার ও সিন্ডিকেটবাজীর ফলে দ্রব্যমূল্যের অব্যাহত ঊর্ধ্বগতিতে বিপর্যস্ত জনগণের জীবন-জীবিকা রক্ষার স্বার্থে গণতন্ত্র পুনঃ-প্রতিষ্ঠার এক দফা দাবী আদায়ের লক্ষে আয়োজিত ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশে হামলা, নেতাকর্মীদের হত্যা, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ আন্দোলনরত বিভিন্ন দলের সহস্রাধিক নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার, বাড়ী বাড়ী তল্লাশী, হয়রানী ও নির্যাতনের প্রতিবাদে এবং এক দফা দাবী আদায়ের লক্ষে ৩১ অক্টোবর এবং ১ লা ও ২রা নভেম্বর দেশব্যাপী সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হবে।
আরও পড়ুন: অবরোধে মাঠে থাকবে র্যাবের স্পেশাল টিম ও স্টাইকিং ফোর্স
রিজভী বলেন, বিএনপির অবরোধের আওতামুক্ত থাকবে সংবাদপত্রের গাড়ী, অ্যাম্বুলেন্স, অক্সিজেন সিলিন্ডার গাড়ী ও জরুরী ঔষধ পরিবহন।
এসময় রিজভী বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আওয়ামী দলীয় ক্যাডারদের দিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর কঠোরভাবে চাপ দেয়ার নীতি গ্রহণ করেছে সরকার। নির্বাচনী মাঠ শূন্য করার প্রথম পদক্ষেপ হিসেবেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও দলীয় ক্যাডাররা বিএনপির ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশে ন্যক্কারজনক হামলা চালায়। অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন তাদের কাছে ঘৃণার বস্তু। তাই রাষ্ট্রশক্তিকে করায়ত্ত করে অসংখ্য মানুষকে হত্যা করে রক্তগঙ্গা বইয়ে দিয়ে হলেও তারা ক্ষমতা ধরে রাখতে চায়।
তিনি বলেন, মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে গত ৪/৫ দিন থেকে শুরু হয়েছে পাইকারিহারে গ্রেপ্তার। গতকাল হরতালের দিন পর্যন্ত কয়েক হাজারে ঠেকেছে। আওয়ামীলীগ কখনোই যুক্তির শক্তিকে মানে না। অসংখ্য লাশের উপর দিয়ে হলেও তারা ক্ষমতা আঁকড়ে রাখতে চায়। গত ২৮ তারিখে মহাসমাবেশ ছিলো অন্যান্য দাবীর মধ্যে সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবীসহ গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের দাবী। সেই কারণেই সমাবেশ পণ্ড করতে রক্তাক্ত-পন্থা অবলম্বন করা হয়। একচ্ছত্র ক্ষমতা চিরদিনের জন্য আঁকড়ে রাখতে জনগণকে নির্বাক দেখতে চায়। এজন্য তারা ভাষার শক্তিকে হরণ করেছে। ভাষা তথা কথা বলার স্বাধীনতা এখন সম্পূর্ণরূপে হরণ করা হচ্ছে।
রিজভী বলেন, দেশ এখন ক্রমান্বয়ে প্রভু ও দাসের রেখা দ্বারা বিচ্ছিন্ন। এখানে ব্যক্তির স্বয়ংসম্পূর্ণতা হওয়া সম্ভব নয়। এখানে কঠোর কর্তৃত্ববাদের প্রভু শেখ হাসিনা গোটা দেশকে পরাধীন করেছে। এই পরাধীনতার শৃঙ্খল ভাঙ্গতে জনগণ এখন দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ। আদর্শ ও ন্যায়ের সংগ্রাম কখনো পরাজিত হয়না। চক্রান্তকারী নিষ্ঠুর আওয়ামী সরকারের পতন অত্যাসন্ন। গণতন্ত্রের প্রত্যাবর্তন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে প্রেরণ, নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের দাবীতে চলমান আন্দোলন, মামলা, হামলা ও গ্রেপ্তার দিয়ে কখনোই থামানো যাবে না।
বিইউ