images

জাতীয়

‘দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসের জ্ঞান না থাকলে কোনো উন্নয়নই টেকসই হবে না’

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৭:২৪ পিএম

দুর্যোগ মোকাবিলা ও ঝুঁকি হ্রাসের জ্ঞান না থাকলে কোনো উন্নয়নই টেকসই হবে না বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) মিজানুর রহমান।

দুর্যোগ মোকাবিলায় সবাইকে প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেছেন, উন্নতির সঙ্গে ঝুঁকিও বাড়ে। তাই ঝুঁকির বিষয় মাথায় রেখে নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের মাধ্যম যেকোনো উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।

বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে আয়োজিত ‘স্ট্রেনথদেনিং আরবান পাবলিক-প্রাইভেট প্রোগ্রামিং ফর আর্থকোয়াক রেজিলিয়েন্স (সুপার)’ প্রকল্পের কনসোর্টিয়াম লার্নিং শেয়ারিং অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের মহাপরিচালক বলেন, দুর্যোগ মোকাবিলা ও দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসের জ্ঞান না থাকলে কোনো উন্নয়নই টেকসই হবে না। তাই দুর্যোগ মোকাবিলায় আমাদের সবাইকে প্রস্তুত থাকতে হবে।

Disester2

মিজানুর রহমান বলেন, আমরা ভূমিকম্প নিয়ে বেশিকিছু করতে পারি না। ভূমিকম্প বড় কোনো দুর্যোগ নয়; আমরা বিল্ডিং কোড না মেনে নিজেরাই ভূমিকম্পের ক্ষতি সৃষ্টি করি। দেশের উন্নতি-অবকাঠামোগত নির্মাণে সবসময় সেফটি ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সঠিক রাখতে হবে।

এ দিন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইউনাইটেড পারপাসের কান্ট্রি ডিরেক্টর শ্রী রামাম্পা গানচিকা। এতে অন্যদের মধ্যে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম গোলাম ফারুক আলমগীরও উপস্থিত ছিলেন।

 

আরও পড়ুন

আমরাই এখন দুর্যোগ সৃষ্টির কারণ হচ্ছি: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, বর্তমান বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে বিবেচিত হওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশ এখনও বিশ্বব্যাপী দুর্যোগে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশ হিসেবে পরিচিত। অপ্রত্যাশিত দুর্যোগের ঝুঁকি কাটিয়ে উঠতে, ইউএনডিআরআর সেন্দাই ফ্রেমওয়ার্ক (২০১৫-২০৩০) মেনে বিভিন্ন সরকার, এনজিও এবং বেসরকারি খাতের স্টেকহোল্ডারদের সহযোগিতার মাধ্যমে প্রস্তুতি, প্রশমন এবং পুনরুদ্ধারের ব্যবস্থাসহ আমাদের ব্যাপক দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস কৌশলগুলো বাস্তবায়ন করতে হবে। তবেই স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ সম্ভব।

 

এছাড়াও লার্নিং সেশনে অংশগ্রহণকারী বক্তারা বলেন, এই প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম বেসরকারি সেক্টর ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার (পিইওসি) প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বিভিন্ন জরুরি তথ্য ও সেবা প্রদানের জন্য এ বছর একটি ওয়েবপেজ চালু করা হয়েছে। পিইওসি স্বেচ্ছাসেবক এবং দুর্যোগের ঘটনাগুলির একটি অনলাইন ডাটাবেসও তৈরি করেছে। ডেটাবেসগুলো পিইওসি ওয়েবপেজে প্রকাশিত হবে এবং ন্যাশনাল ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার (এনইওসি) এর সঙ্গে যুক্ত করা হবে।

Disester

তারা বলেন, প্রতিষ্ঠার পর থেকে পিইওসি আগুন, ভূমিকম্প, বন্যা, ঘূর্ণিঝড় ইত্যাদি সংক্রান্ত ১৫৮টি বিভিন্ন ঘটনার রিপোর্ট রেকর্ড করেছে। পাশাপাশি পিইওসি ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স (এফএসসিডি) প্রশিক্ষণ কমপ্লেক্সে বেসরকারি খাতের ২০৪ জন স্বেচ্ছাসেবককে প্রশিক্ষণ দিয়েছে এবং ১০৪ জনকে পিইওসি এর স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউরের (এসঅপি) প্রশিক্ষণ দিয়েছে। এছাড়াও ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থানে সিমুলেশন অনুশীলন এবং মক ড্রিলও পরিচালনা করেছে পিইওসি। যেখানে কোম্পানির ডাটাবেসে মোট ১৬৪০টি কোম্পানি তালিকাভুক্ত হয়েছে।

একশনএইড বাংলাদেশ, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই), ইউনাইটেড পারপাস এবং ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ যৌথভাবে ওই অনুষ্ঠানে আয়োজন করে। ভূমিকম্প নিয়ে সচেতনতা তৈরিতে তারা ২০২০ সালের ১ জুন থেকে চলতি বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ‘স্ট্রেনথদেনিং আরবান পাবলিক-প্রাইভেট প্রোগ্রামিং ফর আর্থকোয়াক রেজিলিয়েন্স (সুপার)’ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে।

এই প্রকল্পের লক্ষ্য ভূমিকম্প এবং সংশ্লিষ্ট বিপদ বিবেচনা করে দুর্যোগ প্রস্তুতি ও প্রতিক্রিয়ায় বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণ এবং তাদের নেতৃত্বের প্রচার করা। ইউরোপিয়ান সিভিল প্রোটেকশন অ্যান্ড হিউম্যানিটারিয়ান এইড অপারেশনস (ইকো) এই প্রকল্পের অর্থায়ন করেছে বলেও অনুষ্ঠানে জানানো হয়।

এমআইকে/আইএইচ