images

জাতীয়

বাংলাদেশিদের ওপর ভিসানীতির প্রয়োগ শুরু: মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর

ঢাকা মেইল ডেস্ক

২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৮:০৪ পিএম

বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়ায় বাধা সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করতে শুরু করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এই বিধিনিষেধের আওতায় ক্ষমতাসীন দল এবং বিরোধী দলের সদস্যরা ছাড়াও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যও রয়েছেন।

শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার এক বিবৃতিতে এমন সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন।

বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে বাধা প্রদানকারী বা এমন কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকা ব্যক্তি ও তাদের পরিবারের সদস্যরা যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের জন্য অযোগ্য বলে বিবেচিত হবে। পাশাপাশি বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়া ক্ষুণ্ণের জন্য দায়ী প্রমাণিত ব্যক্তিরাও ভবিষ্যতে এই নীতির অধীনে মার্কিন ভিসার জন্য অযোগ্য বলে বিবেচিত হতে পারে।

USবাংলাদেশের বর্তমান ও প্রাক্তন সরকারি কর্মকর্তা ছাড়াও বিরোধী ও ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের সদস্য এবং আইন প্রয়োগকারী, বিচার বিভাগ এবং নিরাপত্তা পরিষেবার সদস্যরাও এই নিষেধাজ্ঞার অন্তর্ভুক্ত বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ রয়েছে।

মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের বিজ্ঞপ্তিটি দেখতে এখানে ক্লিক করুন।

বিবৃতিতে পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের আজকের পদক্ষেপ শান্তিপূর্ণভাবে অবাধ ও নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের লক্ষ্যকে সমর্থন করার জন্য এবং বিশ্বব্যাপী যারা গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিতে চায় তাদের সমর্থনের জন্য। সেই সঙ্গে এই পদক্ষেপে যুক্তরাষ্ট্রের অব্যাহত প্রতিশ্রুতিকেও প্রতিফলিত করে।

চলতি বছরের ২৫ মে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের জন্য নতুন ভিসানীতির ঘোষণা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। ওই সময় মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ্যান্টনি ব্লিংকেন জানিয়েছিলেন, এই নীতির আওতায় যেকোনো বাংলাদেশি নাগরিক গণতান্ত্রিক নির্বাচনের প্রক্রিয়া ব্যাহত করার জন্য দায়ী হলে বা এমন চেষ্টা করেছেন বলে প্রতীয়মান হলে যুক্তরাষ্ট্র তাকে ভিসা দেওয়ার ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারবে।

এর আগে ‘গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের’ অভিযোগে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) ছাড়াও সংস্থাটির বেশ কয়েকজন কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ দফতর। সে সময় বিভিন্ন দেশের মোট ১০টি প্রতিষ্ঠান ছাড়াও ১৫ জন ব্যক্তির বিরুদ্ধে ‘মানবাধিকার লঙ্ঘন ও নিপীড়নের সাথে সংশ্লিষ্টতার’ অভিযোগে এই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল।

2
ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাস। ফাইল ছবি

তবে চলতি বছরের মে মাসে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনকে ঘিরে ভিসানীতি ঘোষণার পর থেকেই নানা আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। এমনকি এই নীতি ঘোষণার পর দেশটির পররাষ্ট্র দফতরের শীর্ষ কর্মকর্তাদের অনেকেই ঢাকায় এসে সরকার ও বিরোধী দলসহ বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গেও বৈঠক করেন।

সবশেষ গতকাল বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসের মুখপাত্র বায়ার্ন শিলার জানিয়েছেন, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে আগামী ৭ অক্টোবর ঢাকায় আসছে যুক্তরাষ্ট্রের ছয় সদস্যের একটি পর্যালোচনা দল। ৭ থেকে ১৩ অক্টোবর পর্যন্ত বাংলাদেশে অবস্থানরত ওই প্রতিনিধি দলে ছয়জন সদস্য ছাড়াও তা‌দের সহায়তার জন্য আরও কিছু কর্মকর্তা থাক‌বেন।

সফরকালে প্রতিনিধি দলটি নির্বাচন কমিশন (ইসি) ছাড়াও রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সমাজসহ স্থানীয় বিভিন্ন মহলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন। এছাড়াও মার্কিন প্রতিনিধি দলটির ঢাকা ত্যাগের আগে বাংলাদেশের নির্বাচনী পরিস্থিতি নিয়ে একটি প্রতিবেদনও প্রকাশের কথা রয়েছে। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতেই বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্র নির্বাচনের জন্য পূর্ণাঙ্গ পর্যবেক্ষক দল পাঠাবে কি না সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।

/আইএইচ