images

জাতীয়

‘বিপদ গরিবের ওপর দিয়া যায়’

মোস্তফা ইমরুল কায়েস

২৮ জুলাই ২০২৩, ০৫:৫১ পিএম

নয়াবাজার এলাকা থেকে ছোট ছেলে ও মেয়েকে নিয়ে বাড্ডায় ভাইয়ের বাসায় বেড়াতে যাচ্ছেন রাজিবুল ইসলাম। পথে নয়াবাজার (কদমতলী ব্রিজ) এলাকা থেকে কোনো যানবাহন পাননি। বাধ্য হয়ে তাদের নিয়ে হাঁটা দেন তিনি। প্রায় দেড় ঘণ্টা পর বিকেল পৌনে ৫ টায় পৌঁছেন গুলিস্তান এলাকায়।

জিরো পয়েন্টে হয়ে পল্টনের দিকে হেটে যাচ্ছেন তিনি ও দুই ছেলে মেয়ে। এ সময় তার সাথে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। তিনি বলেন, বিপদ গরিবের ওপর দিয়া যায়। বড় লোকের আবার বিপদ কিসের। বিপদ তো আমাগো।

শুক্রবার (২৮ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর পল্টন এলাকায় সচিবালয়ের পূর্ব গেটের সামনের রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে কথাগুলো বলছিলেন রাজিবুল।

রাগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, আমরা বিপদে পড়লে কি? আমাগো দিকে কে দেখবো। আমাগো কথা কি কেউ শুনব? 

রাজধানীর বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের শান্তি সমাবেশকে কেন্দ্র করে এমন ভোগান্তিতে পড়েন তিনি।

শুধু রাজিবুল নয়, তার মতো যাত্রাবাড়ী ফ্লাইওভার এলাকা থেকে পল্টনে হেঁটে আসেন শফিক। তিনিও এ সময় রাজিবুলের পথ ধরে হাটছিলেন। তিনি ঢাকা মেইলকে বলেন, যাত্রাবাড়ী থেকে পায়ে হেঁটে আসলাম। এখন যাব মগবাজারে। আজ চাকরিতে যোগ দিতে হবে, না হলে চাকরি পাব না।

sufferingsআসার পথে কোনো বাস পাননি। রিকশা পেলেও ভাড়া বেশি দাবি করছিল বলে জানান তিনি।

সদরঘাট থেকে যারা পল্টন, উত্তরা, শাহবাগ ও ফার্মগেট এলাকায় যেতে জরুরি কাজে বের হয়েছিলেন তারা সকলে ভোগান্তিতে পড়েছেন। ফলে কেউ সদরঘাট, কেউ নয়াবাজার আবার কেউ পুরান ঢাকার বংশাল থেকে রওনা হয়ে বিপাকে পড়েন।

বিকেল সাড়ে চারটায় গুলিস্তান হয়ে বেশ কয়েকটি রিকশা যাত্রী নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু সমাবেশের কর্মীদের ভিড়ের কারণে আর এগুতে পারেনি। নেতাকর্মীরা জোর করে সেই রিকশাকে পল্টনের দিকে ফেরত দেয়। এর মাঝে কয়েকজন নারী যাত্রীও ছিল। দুপুর থেকে গুলিস্তান জিরো পয়েন্ট হয়ে সদরঘাট রুটে কোনো বাসও চলাচল করতে দেখা যায়নি।

এতে ভুক্তভোগী বলেছেন, সরকার দলীয় লোকজন যদি এমন ভোগান্তি তৈরি করে তাহলে মানুষ কার ওপরে ভরসা রাখবে। জনগণ আজ অসহায়। বিরোধী দলও আমাদের সভা সমাবেশ করে ভোগায় আবার সরকারও ভোগায়।

গুলিস্তান এলাকা এখন নেতাকর্মীদের ভিড়ে গিজগিজ করছে। ফলে সচিবালয়, পল্টন ও গুলিস্তান সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।

এমআইকে/এমএইচটি