images

জাতীয়

সাধ আর সাধ্য বিবেচনায় কোরবানির পশু কিনছেন ক্রেতারা

আমিনুল ইসলাম মল্লিক

২৬ জুন ২০২৩, ০৮:৫৩ পিএম

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ২৯ জুন পবিত্র ঈদুল আজহা উৎযাপন করবেন দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা। ঈদকে ঘিরে ইতোমধ্যেই জমে উঠেছে রাজধানীর পশুর হাটগুলো। এসব হাটে কোরবানির গরু, ছাগল, মহিষ, উট এমনকি দুম্বা ও ভেড়াও বিক্রি হচ্ছে। তবে সাধ ও সাধ্যের কথা বিবেচনা করেই পশু কিনছেন ক্রেতারা।

সরেজমিনে রাজধানীর বিভিন্ন পশুর হাট ঘুরে এমন তথ্য মিলেছে। হাট ঘুরে দেখা গেছে, মধ্যম আয়ের মানুষরা কোরবানির পশু কেনার বাজেটও রেখেছেন মধ্যম মানের। এতে রাজধানীর বেশিরভাগ হাটগুলোতেই ছোট ও মাঝারি সাইজের পশুগুলোর চাহিদাও বেশি।Qurbaniজামালপুর থেকে রাজধানীর শাহজাহানপুর হাটে এসেছেন মফিজুর রহমান। ৩০টি গরু নিয়ে আসলেও ইতোমধ্যেই সব বিক্রি করে ফেলেছেন তিনি। বাকি আছে মাত্র ৮টি গরু। এই ব্যাপারি জানান, তার নিয়ে আসা ছোট ও মাঝারি সাইজের গরুগুলো বিক্রি করা হচ্ছে ৬৬ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত। প্রতিটি গরু  ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা লাভেই ছেড়ে দিচ্ছেন তিনি।

গত ৬ বছর ধরে এভাবেই রাজধানীর শাহজাহানপুর হাটে ঈদুল আজহায় গরুর ব্যবসা করেন মফিজুর। তার ভাষ্য, এই হাটে ব্যবসা করতে তেমন কোনো ঝক্কি-ঝামেলা নেই। অনেকটাই নিরাপদ পরিবেশে ব্যবসা করা যায়।

গাইবান্ধার রহিম মিয়াও শাহজাহানপুর হাটে এসেছেন ৩৫টি গরু নিয়ে। তার আনা গরুগুলো বিক্রি করা হচ্ছে ১ লাখ ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকায়। এবার হাটে আনা তার ছোট গরুটিও বিক্রি করেছেন ১ লাখ টাকা দামে। কথা হলে রহিম মিয়া ঢাকা মেইলকে বলেন, এবারের হাটে মাঝারি সাইজের গরুগুলো বেশি করে বিক্রি হচ্ছে। আমার বড় গরুটির সর্বোচ্চ দাম চাওয়া হচ্ছে ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা। কিন্তু গ্রাহক বলছেন, ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। আর একটু দাম হাকলেই গরুটি বিক্রি করে দেব।Qurbaniছাগল ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান ২০-২২টি ছাগল নিয়ে এসেছেন রাজধানীর এই হাটে। তিনি একেকটি ছাগলের দাম চাচ্ছেন ১৪ থেকে ১৫ হাজার টাকা। তার মতে, এবারের ঈদে কোরবানির পশু বিক্রি করে লাভ হচ্ছে কম। একটা ছাগলে ১ হাজার বা ৫০০ টাকা লাভ হলেই তাই বিক্রি করে দেবেন।

রাজধানীর এই হাটে ঢুকতেই বামপাশে দেখা মিলবে বিশাল আকারের কয়েকটি গুরুর। এরমধ্যে একটি ‘সাদা পাহাড়’ আরেকটি ‘কালা পাহার’ নামের গরুও রয়েছে। বিক্রেতা ‘সাদা পাহাড়ের’ দাম হাঁকাচ্ছেন ৩ থেকে সাড়ে ৩ লাখ টাকা। আর কালা পাহাড়ের দাম চাচ্ছেন ৩ লাখ ৪০ হাজার।Qurbaniগরুগুলোর বিক্রেতার সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, চাহিদামতো দাম পেলেই গরুগুলো ছেড়ে দেবেন। তিনি গরুর ব্যবসা করেন না। নিজে গরুগুলো লালন-পালন করে বড় করেছেন। থাকেন রাজধানীর গোড়ানে। প্রতি বছরই সেখান থেকে নিজের লালন-পালন করা গরু বিক্রি করতে আসেন হাটে।

এদিকে, শাহজাহানপুর হাটের শুরুতে এবং মাঝখানে মাঝখানে প্রায় ১০টি হাসিল আদায়ের ঘর রয়েছে। সেখানে দায়িত্বরতদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শাহজাহানপুর হাটে প্রতিবছর প্রায় ৮-১০ হাজার গরু বিক্রি করা হয়। এখানে সর্বনিম্ন থেকে সর্বোচ্চ দামের গরু পাওয়া যায়। সর্বনিম্ন ৬০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৪ লাখ টাকা পর্যন্ত দামের গরু ইতোমধ্যেই বিক্রি হয়েছে। এরমধ্যে শতকরা ৫ টাকা হারে প্রতিটি বিক্রি হওয়া গরুর হাসিল নেওয়া হচ্ছে।Qurbaniঅন্যদিকে, হাটের চারদিকে পাহারা দিচ্ছেন স্বেচ্ছাসেবকরা। তারা হাট থেকে কোনো গরু-ছাগল ও মহিষ বের করে নেওয়ার সময় হাসিল আদায়ের করে তবেই পশু বের করতে দিচ্ছেন। এছাড়াও এই হাটে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য নিয়োজিত রয়েছেন র‌্যাবের অনেক সদস্য। কোনোপ্রকার বিশৃঙ্খলা এড়াতে তাদের নজরদারি রয়েছে পুরো হাটে। যারা হাটের মাঝে বসানো র‌্যাবের নিরাপত্তা ঘর থেকে সবকিছুতে নজর রাখছেন।

এআইএম/আইএইচ