images

জাতীয়

মাঠ ফাঁকা, সড়ক ও ফুটপাতে হাট

দেলাওয়ার হোসাইন দোলন

২৫ জুন ২০২৩, ০৬:২০ পিএম

হাজারীবাগ ইনস্টিটিউট অব লেদার টেকনোলজি কলেজ সংলগ্ন খালি জায়গায় বসেছে কোরবানির গরুর হাট। সড়ক ও ফুটপাত জুড়ে বসা হাটটি ঘিরে জনসাধারণের অভিযোগ ও ভোগান্তির শেষ নেই। যদিও ইনস্টিটিউট অব লেদার টেকনোলজি কলেজের বিস্তৃত মাঠ পড়ে আছে ফাঁকা।

এলাকাবাসী বলছে, বছরের পর বছর পাশে মাঠ খালি রেখে ইজারা দেওয়া হচ্ছে সড়ক। সিটি করপোরেশন ইনস্টিটিউট অব লেদার টেকনোলজি কলেজ সংলগ্ন খালি জায়গার কথা বললেও বাস্তবে কোনো খালি জায়গা নেই। হাট বসছে সড়ক আর ফুটপাতে। এতে স্থানীয়দের পাশাপাশি ক্রেতা-বিক্রেতাদেরও ভোগান্তির শেষ নেই।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, ইনস্টিটিউট অব লেদার টেকনোলজি কলেজ ঘিরে থাকা বাউন্ডারি দেয়াল-সংলগ্ন ফুটপাতে বসেছে হাট। প্রতিষ্ঠানটির প্রবেশ গেটের অংশ নির্ধারণ করা হয়েছে ছাগল-ভেড়ার জন্য। অন্যপাশ ধরে হাজারীবাগ পর্যন্ত অংশ গরুর জন্য। এছাড়া আশপাশের অন্য সড়কগুলোতেও গরু রাখা হয়েছে। ফলে এ পথে চলাচলকারীদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। এছাড়া দফায় দফায় বৃষ্টিতে গোবর, খড়কুটোসহ আবর্জনায় সয়লাব চারপাশ।

হাজারীবাগের শফিক ট্যানারির মোড় থেকে বাঁ দিকের খলিল সরদার মসজিদসহ ডানদিকের বাজার হয়ে আশপাশের ছোট-বড় রাস্তা এবং থানা রোডের পুরোটাতেই হাট বসছে। মূল সড়ক ছাড়িয়ে অলিগলিতেও প্রস্তুত হচ্ছে নতুন নতুন অস্থায়ী শেড। বাঁশ-ত্রিপল দিয়ে তৈরি হচ্ছে বিশাল ছাউনি। এছাড়া একাধিক হাসিল ঘর তৈরি করা হয়েছে।

hazaribaghহাজারীবাগ খলিল সরদার মসজিদ এলাকার বাসিন্দা সাহাদাত সাদমান ঢাকা মেইলকে বলেন, সড়কে হাট বসায় ভোগান্তির কথা বলে শেষ করা যাবে না। কাগজে-কলমে পাঁচদিন হাটের কথা বলা হলেও আমাদের কষ্ট পোহাতে হয় অন্তত দুই সপ্তাহ। একপাশে শেড দেওয়া থাকলেও গরু উঠে সড়কের দুই পাশেই। বৃষ্টির সঙ্গে গোবর, খড়কুটায় সড়ক এখনই সয়লাব অবস্থা। ইজারাদার নিজের স্বার্থে অলিগলিতে পশু রাখে। হাটের মূল অংশ নিয়মিত পরিষ্কার করা হলেও অলিগলি গোবর-ময়লায় ডুবে থাকে। তার দাবি, লেদার টেকনোলজি কলেজ মাঠ হাট হিসেবে ব্যবহার করা হলে ভোগান্তি কমার পাশাপাশি ক্রেতাদের জন্যও সুবিধা হতো।

ধানমন্ডির বাসিন্দা মশিউর রহমান আজাদ বলেন, আমাদের জন্য হাজারীবাগ হাট কাছে হলেও পরিবেশ-পরিস্থিতির কারণে যাওয়া হয়নি। কারণ হাটটিতে বয়ষ্ক বা শিশুদের নিয়ে যাওয়া যায় না। গাড়ি নিয়ে গেলেও পার্কিং করা যায় না। অনেকটা হ য ব র ল পরিবেশ।

হাটটির ইজারা পেয়েছেন অহিদুর রহমান ওয়াকিব। তিনি ঢাকা-৭ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিনের ব্যক্তিগত সহকারী ছিলেন। হাটটির প্রাথমিক মূল্য ধরা হয় ২ কোটি ১৯ লাখ ৬৯২ টাকা। যদিও প্রতিযোগিতার মাধ্যমে ইজারা মূল্য নির্ধারণ হয় ৪ কোটি ৫১ লক্ষ ৫১ হাজার ৫৫১ টাকা, যা ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকার হাটগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।

hazaribaghসার্বিক বিষয়ে অহিদুর রহমান ওয়াকিবের অনুসারী মোজাম্মেল মিয়া জানান, গাড়ি পার্কিং নিয়ে ঝামেলা এড়াতে তারা কাজ করবেন। পানি, গোসলখানা ও টয়লেটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ভোগান্তি নিয়ে জানতে চাইলে বলেন, কিছুটা ভোগান্তি তো হবেই। তবে হাট চলাকালে মূল অংশে গাড়ি চলবে না বলে জানান তিনি।

হাজারীবাগ পশুর হাটে আসা ব্যাপারীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, হাটের অধিকাংশ বেপারী এসেছেন কুষ্টিয়া, সিরাজগঞ্জ, পাবনা, রাজশাহী, নাটোর, রংপুর ও রাজবাড়ী থেকে।

হাটে ১৩টি গরু নিয়ে এসেছেন সামসুদ্দিন। গরুর দাম কেমন জানতে চাইলে তিনি বলেন, গত বছরের তুলনায় এবার পশুর দাম কিছুটা চড়া যাবে। সব খাবারের দাম বেড়েছে। ভুষি, খৈল, ভাত রান্নার খুদের দাম বেড়েছে। তাই গরুর দামও বেশি হবে। বর্তমানে খাবারের বাজারদর জানাতে গিয়ে বলেন, খুদের বস্তা ১৬০০ থেকে ১৭০০ টাকা, যা গতবারের চেয়ে বেশ বেড়েছে। খৈল ৭২ কেজির বস্তার দাম ৩২০০-৩৩০০ টাকা, যা গতবার ২২ থেকে ২৬শ টাকায় কিনেছি।

ডিএইচডি/জেএম