লাইফস্টাইল ডেস্ক
০৬ মার্চ ২০২২, ১১:১৩ এএম
গর্ভকালীন সময়ে শরীরে পুষ্টির চাহিদা বাড়ে। কেননা, শিশুর বৃদ্ধিতে অতিরিক্ত পুষ্টির প্রয়োজন হয়। তবে সবার ক্ষেত্রে চাহিদা কিন্তু এক নয়। এজন্য অবশ্যই একজন পুষ্টিবিদের পরামর্শ নেওয়া খুবই জরুরি। গর্ভধারণ আনন্দের একটা সময়৷ তাই অনেকেই কোন বাছবিচার ছাড়াই ইচ্ছামাফিক খেয়ে থাকেন। ফলে শিশুর জন্মের পরও বাড়তি ওজনকমানো সম্ভব হয় না। তবে গর্ভাবস্থায়ও অতিরিক্ত পুষ্টির চাহিদা মিটিয়ে ওজনকে নিয়ন্ত্রণ করার কিছু স্বাস্থ্যকর উপায় আছে। জেনে নিন সে সম্পর্কে
গর্ভকালীন সময়ে সুষম এবং স্বাস্থ্যকর খাবারের মধ্যে রয়েছে তাজা ফলমূল, শাকসবজি, দুধ, ডিম, মাছ, মাংস এবং হোল গ্রেইন অথবা লাল আটার রুটি, লাল ভাত।
এই খাবারগুলো কতটুকু পরিমানে খাবেন এবং কীভাবে খাবেন?
ফল
প্রতিদিন অন্তত ২-৩টি ফল খেতে হবে। ফলের জুস খাওয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই ১ গ্লাসের বেশি না। কারণ ফলের রসে ক্যালরি ভ্যালু অনেক বেশি থাকে। সে কারণে সম্পুর্ণ ফল বা খোসাসহ ফল খাওয়া উচিত। এই ফলের মধ্যে অবশ্যই প্রতিদিন ১টি করে টকজাতীয় ফল রাখতে হবে।
শাকসবজি
ফলিক অ্যাসিড এবং ভিটামিন মিনারেলে সমৃদ্ধ টাটকা ও গাঢ় রঙের শাকসবজি যেমন-ব্রকলি, পালং শাক, গাজর, মিষ্টি আলু, কুমড়া, শীতকালীন স্কোয়াশ, ভুট্টা, হলুদ মরিচ এবং লাল টমেটো, লাল মরিচ এসব সবজি বেছে নিন। দিনে ৩ থেকে ৫ সার্ভিং শাকসবজি গ্রহণ করতে হবে। প্রতি সার্ভিং এ ১ কাপ পরিমান শাকসবজি থাকবে। সালাদ হিসেবে, রান্না করে অথবা স্যুপ হিসাবে শাকসবজি গ্রহণ করা যেতে পারে।
দুগ্ধজাত খাবার
ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ দুগ্ধজাত খাবার আপনার শিশুর বৃদ্ধির জন্য এবং আপনার হাড় ও দাত মজবুত রাখতে প্রয়োজন। পর্যাপ্ত ক্যালসিয়াম পেতে প্রতিদিন ৩ সারভিং দুধ, দই অথবা পনির খেতে হবে। কম চর্বিযুক্ত বা চর্বিহীন দুগ্ধজাত পণ্য বেছে নিন। আপনি যদি ল্যাকটোজ ইনটলারেন্সি হন এবং দুধ হজম করতে না পারেন সেক্ষেত্রে ল্যাকটোজমুক্ত দুধের পণ্য, ক্যালসিয়াম ফর্টিফাইড খাবার এবং ক্যালসিয়াম ফর্টিফাইড সয়ামিল্কের মতো পানীয় বেছে নিন। একটি পরিবেশন ১ কাপ দুধ বা দই, ৬ আউন্স প্রাকৃতিক পনির যেমন চেডার বা মোজারেলা বা ২ আউন্স প্রক্রিয়াজাত পনির।
আমিষ
চর্বিযুক্ত মাংস পরিহার করতে হবে। হাঁস-মুরগি, মাছ এবং ডিম ন্যূনতম পরিমাণে তেল দিয়ে রান্না করতে হবে। প্রানিজ প্রোটিনের ভালো উৎস যেমন-মটরশুটি কিডনি বিন, মসুর, বিভক্ত মটর, বাদাম এবং বীজ, এগুলো ও খাদ্যতালিকায় রাখতে হবে।
একটি পরিবেশন প্রতিদিন মাঝারি সাইজের ২/৩পিস রান্না করা মাংস, মুরগি বা মাছের সমান, ১ কাপ সিদ্ধ মটরশুটি, ২ টি ডিম, বাসায় বানানো চিনাবাদামের মাখন ২টেবিল চামচ বা ১ আউন্স (প্রায় ১/৪কাপ) বাদাম।
শর্করা
আপনাকে প্রতিদিন ন্যূনতম ছয় পরিবেশন শর্করা গ্রহণ করতে হবে যার মধ্যে অন্তত ৫০ শতাংশ পুরো শস্য বা হোল গ্রেইন হওয়া উচিত। পুরো শস্যের রুটি, সিরিয়াল, ক্র্যাকার এবং পাস্তা ফাইবার সরবরাহ করে, যা গর্ভাবস্থায় খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিভিন্ন ধরনের ফাইবারযুক্ত খাবার খাওয়া অন্ত্রের সঠিক কার্যকারিতা বজায় রাখতে সাহায্য করে এবং আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য এবং অর্শ্বরোগ হওয়ার সম্ভাবনা কমাতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, সাদা রুটির পরিবর্তে পুরো গমের রুটি খান। একটি পরিবেশন ১টা মাঝারি আকারের রুটির সমান, ১ আউন্স বা ২ টেবিল চামচ রেডি-টু-ইট সিরিয়াল বা ১/২ কাপ রান্না করা সিরিয়াল, ভাত বা পাস্তা।
লেখক
পুষ্টিবিদ
বিএসসি, এমএসসি (নিউট্রিশান অ্যান্ড ফুড টেকনোলজি)
এজেড