images

লাইফস্টাইল

পেঁপে পাতা কি সত্যিই রক্তের প্লাটিলেট বাড়ায়? 

লাইফস্টাইল ডেস্ক

১১ অক্টোবর ২০২২, ১১:০৫ এএম

দেশজুড়ে বেড়েই চলছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। এডিস মশাবাহিত এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছে প্রচুর মানুষ। বিশেষ করে ঢাকাবাসীর কাছে বর্তমানে এটি আতঙ্ক হয়ে দাঁড়িয়েছে। 

ডেঙ্গু রোগীর রক্তের প্লাটিলেটের সংখ্যা অনেক কমে যায়। যা মৃত্যুঝুঁকি সৃষ্টি করে। প্রতিবছর ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়লে একটি তথ্য ভাইরাল হয় যে, পেঁপে পাতার জুস বা শরবত খেলে রক্তের প্লাটিলেট বাড়ে। কেউ কেউ এটি বিশ্বাস করেন। আবার কেউ কেউ গুজব মনে করেন। আসলে সত্যটি চলুন জেনে নেওয়া যাক। 

বিভিন্ন মেডিকেল জার্নাল, ওয়েবসাইট, চিকিৎসকদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী এই তথ্যটি সত্য। আসলেই পেঁপে পাতা রক্তের প্লাটিলেট বাড়াতে সাহায্য করে। অর্থাৎ ডেঙ্গু রোগীদের জন্য এটি মহাঔষধ। ডেঙ্গু রোগের কোনো নির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই। উপসর্গ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া। সেক্ষেত্রে এই পাতা উপকারি ভূমিকা রাখতে পারে।

platilate

প্লাটিলেট কমে গেলে কী হয়? 

ডেঙ্গু ভাইরাস দেহের বোন ম্যারুর মেগাক্যরিওসাইটকে অকেজো করে রক্তের অনুচক্রিকাকে ধ্বংস করে। ফলে প্লাটিলেট কমতে থাকতে এবং রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হতে থাকে। এমন অবস্থায় রোগীকে বাইরে থেকে প্লাটিলেট প্রদানের ব্যবস্থা করতে হয়। প্লাটিলেট ৫০ হাজারের নিচে নেমে গেলে শরীর থেকে রক্তক্ষরণ হতে শুরু হয়। ফলে রোগীর অবস্থা দ্রুত খারাপ হতে থাকে।

পেঁপে পাতা কীভাবে কাজ করে? 

গবেষণায় দেখা গেছে, পেঁপে পাতার নির্যাস ডেঙ্গু ভাইরাস ধারণকারী প্লাজমাকে নিরপেক্ষ করতে সক্ষম এবং প্লাটিলেটে একত্রিকরণ হয়ে যাওয়া উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করে।

papaya

এই পাতায় কিমোপাপিন ও পাপেইন নামে দুটি এনজাইম আছে। এই উপাদান দুটি প্লাটিলেট উৎপাদন বাড়ায়। একইসঙ্গে রক্ত জমাট বাঁধা রোধ করে। ডেঙ্গুর কারণে লিভারের কোনো ক্ষতি হলে তা ঠিক করতেও কাজ করে এটি। 

এছাড়া পেঁপে পাতায় আছে প্রচুর পরিমাণে কমপ্লেক্স ভিটামিন যা বোন ম্যারুকে প্রচুর পরিমাণে প্লাটিলেট উৎপাদন করতে সহায়তা করে।

ফ্লোরিডার গবেষক ডা. ডেঙ, শ্রীলংকার গবেষক ডা. সানাথ হেট্টিগ এবং এমআই কাঠিবেসানের করা গবেষণা অনুযায়ী, পেঁপে পাতার রস ডেঙ্গু জ্বরে অনেকটা উপকারী ভূমিকা পালন করে। 

papaya juice

কীভাবে খেতে হবে? 

ডেঙ্গু রোগীর ক্ষেত্রে পেঁপের কচি পাতাগুলো বেশি ভালো কাজ করে। পাতা সংগ্রহ করে বেটে বা ব্লেন্ড করে নিতে হবে। এরপর ছাঁকতে হবে। ছেঁকে নেয়ার পর এই রস একজন প্রাপ্তবয়স্ক রোগীকে ১০ মিলি লিটার করে (২ চা চামচ) ১২ ঘন্টা পরপর অর্থাৎ দিনে দু’বার করে খেতে দিতে হবে। 

৫-১২ বছর বয়সী শিশু রোগীদের ক্ষেত্রে ০৫ মিলি লিটার (১ চা চামচ) করে ১২ ঘন্টা পরপর দিনে দু’বার করে খেতে দিতে হবে। পাঁচ বছরের নিচের শিশুদের জন্য ২.৫ মিলি লিটার (অর্ধেক চা চামচ) করে ১২ ঘন্টা পরপর দিনে দু’বার করে খেতে দিতে হবে। 

অবশ্যই মনে রাখবেন, তৈরি করা পেঁপে পাতার রসের সঙ্গে কোনো প্রকার লবণ বা চিনি মেশানো যাবে না।

২০০৮ সালে শ্রীলংকান জার্নাল অফ ফ্যামিলি ফিজিশিয়ানসে প্রকাশিত গবেষণা অনুযায়ী, পেঁপে গাছের কচি পাতার রস ডেঙ্গুর ওষুধ হিসেবে খুবই উপকারী। আরেকটি গবেষণা অনুযায়ী, প্লাটিলেট-অ্যাক্টিভেটিং ফ্যাক্টর রিসেপ্টর (PTAFR) জিনটি পেঁপে পাতার রস গ্রহণের পর ১৩.৫ গুণ বেশি প্লাটিলেট নির্দিষ্ট ও নিয়ন্ত্রণ করে। 

তথ্যসূত্র: হেলথসাইট.কম, দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনাল, সিএনএ, নিউজ মেডিকেল এবং অন্যান্য ওয়েবসাইট

এনএম