লাইফস্টাইল ডেস্ক
১৭ আগস্ট ২০২২, ০৮:৪৯ এএম
নারীদের মুখের ত্বক হয় নরম, কোমল, নমনীয়। লোম হয় একদমই হালকা। তবে হরমোনের অসামঞ্জস্যতা, পিসিও, বংশগত সমস্যা ইত্যাদি কারণে কারো কারো মুখের লোম গাঢ় হয়ে থাকে। বিশেষ করে ঠোঁটের ওপরের অংশে। আইভ্রুও কারো কারো অতিরিক্ত ঘন হয়।
লোম থাকা মন্দ কিছু নয়। তবে সেটি যখন অবাঞ্ছিত তখন ভাবনার বিষয়। অনেকে পার্লারে গিয়ে ব্লিচিং করে থাকেন। তবে এটি ত্বকের জন্য বেশ ক্ষতিকর। মুখ থেকে অবাঞ্ছিত লোম দূর করতে কিছু সহজ উপায় কাজে লাগাতে পারেন। চলুন জেনে নেওয়া যাক বিস্তারিত।
থ্রেডিং
লোম উঠানোর বেশ পুরনো মাধ্যম থ্রেডিং। এ কাজের জন্য প্রয়োজন হবে সামান্য পাউডার, সুতা, ছোট কাঁচি, বরফ পানি আর তুলো। বাজারে থ্রেডিং এর উপযুক্ত সুতার রোল কিনতে পাওয়া যায়। আইব্রোর জন্য কনুই সমান আর আপার লিপের (ঠোঁটের ওপরের অংশ) ক্ষেত্রে একটু ছোট সুতা নিন। সুতার দুই প্রান্ত একসঙ্গে ধরে গিঁট দিয়ে নিতে হবে। এবার দু’হাতের প্রথম তিনটে আঙুলে সুতোটাকে জড়িয়ে আয়তক্ষেত্রের মতো টানটান করে রাখুন। এক দিকের হাত স্থির রেখে অন্য দিকের হাত অন্তত দশ বার ঘুরিয়ে সুতোটাকে পাক খাইয়ে নিন। পরের কাজটি দুই হাতের আঙুলের কারসাজি।
পর্যায়ক্রমে দু’হাতের আঙুলগুলো খুলে-বন্ধ করে লোমের ওপর টাম দিলে তা উঠে যাবে। এই কাজটি কিন্তু অনুশীলনের বিষয়। করতে করতে সফল হবেন। থ্রেডিং করার আগে লোমের ওপর একটু পাউডার লাগিয়ে নিন। কাজ শেষ হলে গোলাপজল, টোনার বা বরফ পানিতে তুলো ভিজিয়ে মুছে নিন। এতে ত্বকের লালচেভাব কমে যাবে। খোঁচা খোঁচা লোমগুলো ছোট কাঁচি দিয়ে ছেঁটে নিতে পারেন।
শেভিং
অনেকেই লোম পরিষ্কার করতে রেজর ব্যবহার করেন। তবে পুরুষের রেজরের তুলনায় এটি সরু ব্লেডের হয়ে থাকে। দামও হাতের নাগালে। তবে আমাদের মুখের ত্বক ভীষণ নরম, স্পর্শকাতর। এখানে যেকোনো ধরনের ব্লেড, যতই সূক্ষ্ম হোক না কেন, ব্যবহার করা বিপজ্জনক। বিশেষ করে চোখের নিচের অংশে একদমই ব্যবহার করা উচিত নয়। এছাড়া গোড়া থেকে রোম পরিষ্কার করে না বলে, কিছুদিন পর আবার কিন্তু তা গজিয়ে যায়।
হেয়ার রিমুভিং মেশিন
মুখ থেকে অবাঞ্ছিত লোম দূর করতে অনেক তরুণীই এখন ভরসা রাখেন হেয়ার রিমুভিং মেশিনে। এটি এপিলেটরের ছোট সংস্করণ। বিনা যন্ত্রণায় অনায়াসে লোম থেকে মুক্তি দেয় এটি। অনেকটা কলমের মতো দেখতে যন্ত্রটি ব্যাটারিচালিত। লোমের ওপর এটি চক্রাকারে ঘুরাতে হয়। তবে ভালো মানের হেয়ার রিমুভিং মেশিন কেনা উচিত। ব্যবহারের আগে এর নিয়মগুলোও পড়ে নেওয়া জরুরি।
ওয়াক্সিং
লোম উঠানোর সবচেয়ে কার্যকর উপায় ওয়াক্সিং। এতে গ্রোথও অনেকদিন অব্দি কম থাকে। তবে সব ওয়াক্স মুখে ব্যবহার করা যায় না। কেনার সময় দেখতে হবে তা ফেশিয়াল সফট ওয়াক্স কিনা। ওয়াক্স করার অভিজ্ঞতা না থাকলে, ওয়াক্স স্ট্রিপ কিনতে পারেন। এতে ঝামেলা কম। শুধু ব্যবহারের আগে হাতের তালুতে অল্প ঘষে গরম করে নিতে হয়। ত্বক পরিষ্কার করে ভালভাবে মুছে নিন। ত্বকের লোমযুক্ত জায়গায় লাগিয়ে হেয়ার গ্রোথের উলটো দিকে একটানে স্ট্রিপটি তুলে নিতে হবে।
সব ধরনের ত্বকের জন্য ওয়াক্সিং উপযুক্ত নয়। রোদে পোড়া বা ব্রণযুক্ত ত্বকে এটি ব্যবহার না করাই ভালো। ওয়াক্স ব্যবহারের পূর্বে অবশ্যই অ্যালার্জি পরীক্ষা করে নিন।
ঘরেও ওয়াক্স তৈরি করতে পারেন। লেবুর রস-চিনি, লেবু-মধু, ওটমিল্ক-কলা, ডিমের সাদা অংশ-কর্নস্টার্চের মিশ্রণ তৈরি করে নেওয়া যায়। এতে বাজারচলতি প্রডাক্টের মতো অল্প সময়ে মোম-মসৃণ ত্বক পাওয়া যায় না, কিন্তু ত্বকের স্বাস্থ্য বজায় থাকে।
ত্বকে লোম আছে বলে হীনমন্যতায় ভোগা কিংবা লজ্জা পাওয়ার কিছু নেই। সঠিক উপায়ে নির্দিষ্ট সময় পর পর এসব অবাঞ্ছিত লোম তুলে ফেলুন।
এনএম