লাইফস্টাইল ডেস্ক
২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০১:১৭ পিএম
কিডনি রোগ বেশিরভাগ সময়েই চুপিসারে শরীরে বাসা বাঁধে। লক্ষণ বুঝতে অনেক দেরি হয়ে যায়। আর চুপিচুপি কিডনির সমস্যা হওয়ার ঝুঁকিতে পুরুষের তুলনায় নারীরা বেশি রয়েছে, এমনটাই দাবি একাধিক সমীক্ষার।
সম্প্রতি ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ডায়াবেটিস অ্যান্ড কিডনি ডিজিজ-এ প্রকাশিত সমীক্ষার তথ্য বলছে, নারীরা কিডনির রোগে বেশি ভোগেন। বয়স চল্লিশ পেরিয়ে গেলে বাড়ে ঝুঁকি। এর অন্যতম বড় কারণ হলো, কমবেশি প্রায় সব নারীই নিজেদের স্বাস্থ্যের ব্যাপারে যথেষ্ট উদাসীন। এছাড়া সচেতনতার অভাবে উপসর্গ এড়িয়ে যান অনেকেই। তবে একটু সতর্ক থাকলেই কিডনির ক্রনিক অসুখ প্রতিরোধ করা যায়।

গবেষণাপত্রে দাবি করা হয়েছে, অনিয়ন্ত্রিত রক্তচাপ আর ডায়াবেটিস নারীদের বড় সমস্যা। অনেকসময় প্রেশার ও সুগার থাকা সত্ত্বেও রোগী নিজেই জানেন না যে, তার এমন অসুখ রয়েছে। যখন ধরা পড়ে, তখন কিডনি-সহ অন্যান্য অঙ্গ বিকল হতে শুরু করেছে।
প্রত্যন্ত এলাকায় বসবাসকারী নারীদের শারীরিক অসুস্থতার ঝুঁকি বেশি থাকে। কারণ অত্যন্ত অসুস্থ না হলে তারা চিকিৎসকের কাছে যেতে চান না। একারণেই কিডনি রোগের প্রকোপ বাড়ছে। আবার লুপাস নেফ্রাইটিস নামে এক ধরনের অটোইমিউন ডিজিজ এবং মূত্রনালির সংক্রমণ নারীদেরই বেশি হয়। এর থেকেই ক্রনিক কিডনির রোগের ঝুঁকি বাড়ে।

নারীরা অনেক সময় বাড়ির কাজ বা বাইরে যাতায়াতের সময় শৌচাগার ব্যবহারের অসুবিধার কথা ভেবে পানি কম খান। দীর্ঘ সময় শরীরে পানির ঘাটতি হলে কিডনি আর বর্জ্য পদার্থ বা টক্সিন বের করে দিতে পারে না। ফলে কিডনিতে সংক্রমণ ও পাথর জমার ঝুঁকি বাড়ে।
অনেকেই নামমাত্র ব্যথা হলেও ব্যথানাশক ওষুধ খেয়ে ফেলেন। বয়স চল্লিশ পার হলে হরমোনের তারতম্যের কারণে হাঁটু, কোমরে ব্যথা হয়। এই ব্যথা কমাতে রোজ রোজ ব্যথানাশক ওষুধ খাওয়ার অভ্যাস পরবর্তীতে বিপজ্জনক হয়ে ওঠে। এসব ওষুধ কিডনিতে রক্ত চলাচলের মাত্রা কমিয়ে দেয়। যা কিডনির জন্য ক্ষতিকর।

মানবদেহে যে আকারের মূত্রথলি রয়েছে, তার ধারণক্ষমতা খুবই কম। প্রায় ৪০০ থেকে ৬০০ মিলিমিটার পর্যন্ত মূত্র ধারণ করার ক্ষমতা রয়েছে মূত্রথলির। তবে কেউ যদি দীর্ঘক্ষণ প্রস্রাব ত্যাগ না করে চেপে রাখেন, সেক্ষেত্রে মূত্রাশয়ের পেশি ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়ে। দীর্ঘক্ষণ প্রস্রাব চেপে রাখলে মূত্রনালি এবং মূত্রথলিতে সংক্রমণ হওয়া অস্বাভাবিক নয়।
রাস্তাঘাটে সাধারণ শৌচালয় ব্যবহার করা নিয়ে অনেক নারীরই আপত্তি রয়েছে। কমন বাথরুম ব্যবহার করার চেয়ে প্রস্রাব চেপে রাখতেই তারা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। ফলে মূত্রথলির মধ্যে ব্যাকটেরিয়া সংখ্যায় দ্বিগুণ গতিতে বাড়তে থাকে। মূত্রথলি, মূত্রনালি হয়ে সংক্রমণ কিডনি পর্যন্ত ছড়াতে খুব বেশি সময় লাগে না।

ভাতের সঙ্গে কাঁচা লবণ খাওয়ার অভ্যাস রয়েছে অনেক নারীরই। অতিরিক্ত সোডিয়াম রক্তচাপ বাড়িয়ে দেয়। উচ্চ রক্তচাপ সরাসরি কিডনির ক্ষুদ্র রক্তনালিগুলোর ক্ষতি করে।
চিনি বা মিষ্টি জাতীয় খাবার বেশি খাওয়া, মিষ্টি পানীয় কেবল যে ওজন বাড়ায় এমন নয়, ক্ষতি করে কিডনিরও। চল্লিশের পর নারীদের মধ্যে টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ে। রক্তে শর্করার মাত্রা বেশি হয়ে গেলে তা কিডনির ওপর প্রভাব ফেলে। ফলে কিডনির কোষগুলো নষ্ট হতে থাকে।
এনএম