লাইফস্টাইল ডেস্ক
১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ০২:০১ পিএম
বৃদ্ধ বয়সে চুল হালকা হয়ে যাওয়া বা মাথায় টাক পড়ার ঘটনা স্বাভাবিক। তবে এখন আর বয়সের ফ্রেমে বিষয়টি আটকে নেই। অসংখ্য তরুণ চুল হারিয়ে টাক হয়ে যাচ্ছে। এর জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যাওয়া। চুলের ফলিকল নষ্ট হয়ে বাড়ে চুল পড়ার সমস্যা। টাক সমস্যাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় অ্যান্ড্রোজেনিক অ্যালোপেসিয়া বলা হয়। এই সমস্যা হলে কিশোর বয়সেই শুরু হয় চুল পড়া, তরুণ বয়সেই দেখা দিতে পারে টাক।
কেন টাক পড়ে? এর জন্য দায়ী কে? কীভাবেই বা টাক সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়? উত্তর জানুন এই প্রতিবেদনে-
বিভিন্ন কারণে চুল পড়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে। মাথায় টাক পড়ার কিছু সম্ভাব্য কারণ হলো-

অ্যান্ড্রোজেনিক অ্যালোপেসিয়ার অন্যতম বড় কারণ জিনগত। বাড়িতে বাবা-চাচা বা পূর্বপুরুষ কারোর টাকের সমস্যা থেকে ছেলে-নাতীর মধ্যেও সমস্যা দেখা দিতে পারে। অর্থাৎ পারিবারিক ইতিহাস থাকলে টাক পড়ার সমস্যা হতে পারে।
ডিহাইড্রোটেস্টোরন বা DHT- হরমোন এই রোগের জন্য দায়ী। শরীরে এই হরমোনের ভারসাম্যের হেরফের ঘটলে চুলের ফলিকল দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। ফলে চুল পড়ার সমস্যা দেখা দিতে শুরু করে। যা পরবর্তীতে টাক পড়ার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

দীর্ঘস্থায়ী মানসিক চাপের কারণে হরমোনের তারতম্য ঘটে আমাদের শরীরে। যা চুল পড়ার কারণ হতে পারে। এছাড়াও, বর্তমানের অনিয়মিত জীবনযাপন, পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়া এবং খারাপ খাদ্যাভ্যাস চুল পড়ার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
অপুষ্টি অনেকসময় টাকের কারণ হতে পারে। ভিটামিন ডি, ভিটামিন বি১২, এবং বায়োটিন, আয়রন এবং জিঙ্কের মতো প্রয়োজনীয় ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থের অভাব স্বাভাবিকভাবেই চুলকে দুর্বল করে দেয়। যা চুলের বৃদ্ধিতে ব্যাঘাত ঘটায়।

অতিরিক্ত রাসায়নিক সমৃদ্ধ শ্যাম্পু বা প্রোডাক্ট ব্যবহার করা, চুলে রং করা, নিয়মিত হেয়ার ড্রায়ার বা স্ট্রেটনার ব্যবহার করলে মাথার ত্বকে এবং চুলের ওপর তার খারাপ প্রভাব পড়ে। এসব অভ্যাস চুল পড়ার সমস্যাকে বাড়িয়ে দেয় কয়েক গুণ।
চিকিৎসকের পরামর্শে মিনোক্সিডিল বা ফিনাস্টেরাইড চিকিৎসা পদ্ধতির সাহায্য নিতে পারেন। মিনোক্সিডিল মাথার ত্বকে রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়। এটি চুলের বৃদ্ধি ঘটায়। অন্যদিকে ফিনাস্টেরাইড DHT হরমোনের উৎপাদন কমায়। এতে চুল পড়ার হার কমে।

চুল পড়ার সমস্যা কমাতে চাইলে নজর দিন সঠিক খাদ্যাভ্যাসে। খাদ্যতালিকায় রাখুন প্রোটিন, আয়রন, জিঙ্ক। সেসঙ্গে ভিটামিন এ, ভিটামিন ডি এবং ভিটামিন বি-কমপ্লেক্স থাকাটাও জরুরি। এসব উপাদান চুলের পুষ্টির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। খাবার পাতে রাখুন ডিম, বাদাম, পালং শাক এবং ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ মাছ।
একজন ব্যক্তির জীবনযাত্রাও চুল পড়ার কারণ হতে পারে। মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা, পর্যাপ্ত ঘুম, হালকা শরীরচর্চার অভ্যাস করুন। এসব অভ্যাস চুলের স্বাস্থ্যের জন্য জরুরি।
চুলের যত্নে হালকা, সালফেট-মুক্ত শ্যাম্পু এবং কন্ডিশনার ব্যবহার করুন। রাসায়নিক চিকিত্সা এবং অতিরিক্ত তাপযুক্ত স্টাইলিং এড়িয়ে চলুন। মাথার ত্বক পরিষ্কার ও সুস্থ রাখুন।
এনএম