লাইফস্টাইল ডেস্ক
০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৩:৩৫ পিএম
কোষ্ঠকাঠিন্য এমন একটি সমস্যা যার মুখোমুখি হন ছোট-বড় অনেকেই। মলত্যাগের সময় কষ্ট হয় এই সমস্যা থাকলে। শীতে যার পরিমাণ বাড়ে। চিকিৎসকরা বারবারই কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পেতে ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া এবং অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া বাদ দেওয়ার পরামর্শ দেন। তবে কেবল খাবারের দোষ দিলে চলবে না। জীবনযাপনের কায়দাও এর জন্য দায়ী হতে পারে।
বাড়ি থেকে অফিসে গেলেন। এরপর দীর্ঘসময় টানা ডেস্কে বসে কাজ। বাড়ি ফিরে সোফা বা খাটে গা এলিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া স্ক্রলিং। হাঁটাচলা, শারীরিক চর্চা জীবনে নেই বললেই চলে। এমন অভ্যাসেই বাড়ছে কোষ্ঠকাঠিন্য।

চিকিৎসকরা বলছেন, হাঁটাচলার অভাব, বেগ এলেও জরুরি মিটিং বা কাজের জন্য শৌচালয়ে যেতে না পারা, ডেস্কে বসে ভাজাভুজি খাওয়ার অভ্যাস, পানি কম খাওয়া— এসব অভ্যাসই সমস্যা বাড়িয়ে দেয়। মোট কথা হলো, লম্বা সময় ধরে এক ভঙ্গিতে চেয়ার বসে থাকার সামগ্রিক প্রভাব শরীরে পড়ে। ফলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা বাড়ে।
শারীরিক পরিশ্রম বা হাঁটাচলা, নড়াচড়ার অভ্যাস অন্ত্রের পেশিগুলোকে সক্রিয় রাখে, যা অপাচ্য খাবার মলদ্বারের দিকে এগিয়ে দিতে সাহায্য করে। দীর্ঘ সময় বসে থাকলে অন্ত্র ও পেশির কার্যকারিতা কমে যায় এবং হজম প্রক্রিয়া ধীর হয়ে যায়।

দীর্ঘক্ষণ বসে থাকার কারণে পরিপাকতন্ত্রসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে রক্ত সঞ্চালন কমে যেতে পারে। রক্তের প্রবাহ কমে গেলে অন্ত্রের স্বাভাবিক কার্যকারিতাও ব্যাহত হতে পারে। ফলে মল কোলনে বেশি সময় ধরে রয়ে যায়। এতে মল শক্ত হয়ে যায়। যা কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা বাড়িয়ে দেয়।
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে মাঝারি থেকে শ্রমসাধ্য শরীরচর্চা কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা অনেকটাই কমিয়ে দেয়। পেট পরিষ্কারে সাহায্য করে। কেননা, হাঁটাহাঁটি বা শরীরচর্চার ফলে পেশি সক্রিয় হয়। খাবার ঠিকমতো হজম হয়। আবার এ-ও দেখা গেছে, পেশাগত কারণে যাদের দীর্ঘক্ষণ বসে কাজ করতে হয়, তাঁদের ক্ষেত্রে পেটের স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। কম ঘুম, সঠিক সময় ঘুমাতে না পারা, হজমের সমস্যা বহু গুণ বাড়িয়ে দেয়। এর প্রভাব পেটের উপরেও পড়ে।


প্রতি ৪০-৪৫ মিনিট অন্তর এক বার করে উঠুন। ৩-৪ মিনিট হাঁটাহাঁটি করে নিন। এতে শরীরের প্রতিটি পেশি সচল থাকবে। কোমরে-কাঁধে ব্যথার প্রবণতাও কমবে।
ভারী প্রাতরাশ করলে বা দুপুরে খাওয়ার আধ ঘণ্টা পরে শৌচালয়ে যান। বাতকর্মের বেগ এলে সেটি চেপে না রাখাই ভালো। এতে পেট হালকা হয়।

পানি খাওয়া খুব জরুরি। পানি কম খেলেও মল শক্ত হয়ে যেতে পারে, মলত্যাগে সমস্যা হয়। অফিস ডেস্কে বড় বোতল রাখুন। ঘড়ি ধরে পানি খান। মাঝে মধ্যে ঈষদুষ্ণ পানি খেলেও গ্যাসের সমস্যা কমে। পেট হালকা লাগে।
সকাল বা সন্ধ্যায় কিংবা কাজের ফাঁকে একটু জোরে হাঁটাহাটি করুন। এতে লাভ হবে। লিফটের বদলে সিঁড়ি দিয়ে ওঠা-নামা করতে পারেন।

প্রাতরাশ হোক বা মধ্যাহ্নভোজ, পাতে প্রোটিনের পাশাপাশি ফাইবার রাখা জরুরি। পেঁপে, কলা, মিষ্টি আলু, চিয়া, তিসিবীজ ভিজিয়ে খেলেও কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা কমে।
সঠিক সময়ে ঘুম এবং খাওয়া-দাওয়া, তার সঙ্গে শরীরচর্চা— এগুলো ঠিক থাকলেই পেটের স্বাস্থ্য ভালো থাকবে। কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা সহজে এড়ানো যাবে।
এনএম