লাইফস্টাইল ডেস্ক
১৪ নভেম্বর ২০২৫, ১২:৩১ পিএম
ডায়াবেটিস—রক্তের শর্করার বাড়তি মাত্রা। ধরা পড়লেই মিষ্টিজাতীয় খাবারের সঙ্গে আড়ি, খাবারদাবারে লাগাম আর সবক্ষেত্রেই সতর্কতা। ডায়াবেটিস কেবল শরীরের ওপর প্রভাব ফেলে না। মনের ওপরও যথেষ্ট খবরদারি চালায় স্বাস্থ্য সমস্যাটি। রক্তে শর্করার মাত্রা ওঠানামার মতো ওঠানামা হয় মেজাজ, উদ্বেগ আর আত্মবিশ্বাসে। অর্থাৎ মানসিকের স্বাস্থ্যের সঙ্গে ডায়াবেটিসের এক অদৃশ্য যোগসূত্র রয়েছে। যা বেশিরভাগ মানুষই এড়িয়ে যান।

চিকিৎসকদের মতে, রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বাড়লে মস্তিষ্কের নিউরোট্রান্সমিটারের ভারসাম্য নষ্ট হয়। ফলে দেখা দেয় খিটখিটে ভাব, মনোযোগের ঘাটতি, ঘন ঘন মুড সুইং ইত্যাদি। আবার অন্য দিকে, রক্তে শর্করা কমে গেলে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে, মাথা ঘোরে— যা দীর্ঘমেয়াদে উদ্বেগ বা হতাশার জন্ম দেয়।
মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের মতে, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ মানে কেবল ইনসুলিন ব্যবহারকে বোঝায় না। মানসিক স্থিতিশীলতার দিকেও নজর দিতে হবে।

ডিপ্রেশনের সঙ্গে ডায়াবেটিসের সম্পর্ক
গবেষণায় দেখা গেছে, ডায়াবেটিস রোগীদের মধ্যে বিষণ্নতা (ডিপ্রেশন) হওয়ার ঝুঁকি সাধারণ মানুষের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। আবার যারা আগে থেকেই মানসিক চাপে বা হতাশায় ভোগেন, তাদের শরীরে কর্টিসল হরমোনের মাত্রা বেড়ে যায়— যা ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স বাড়ায় এবং ডায়াবেটিসের ঝুঁকি তৈরি করে। অর্থাৎ, একে অপরকে খারাপের দিকে ঠেলে দেয় এই দুই রোগ।
ডায়াবেটিস রোগীর মানসিক স্বাস্থ্যের যত্নে করণীয়
নিয়মিত ঘুম: ঘুমের ঘাটতি শরীরে কর্টিসল বাড়িয়ে শর্করা নিয়ন্ত্রণ নষ্ট করে। তাই প্রতিদিন অন্তত ৭ ঘণ্টা গভীর ঘুম নিশ্চিত করুন।
ধ্যান ও শ্বাস-প্রশ্বাস অনুশীলন: প্রতিদিন ১০ মিনিট গভীর শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম করুন। এতে উদ্বেগ কমে ও মন স্থির থাকে।

শরীরচর্চা: হাঁটা বা যোগব্যায়াম ডায়াবেটিসে ভোগা ব্যক্তিদের জন্য জরুরি বিষয়। এটি কেবল রক্তে শর্করার মাত্রা কমায় না। বাড়ায় ‘ফিল গুড’ হরমোনও।
পরিবারের সঙ্গে সময়: পরিবার বা বন্ধুদের সঙ্গে নিজের দুশ্চিন্তা ভাগ করুন। লুকিয়ে রাখবেন না।
ডায়াবেটিসকে কেবল ‘শরীরের রোগ’ ভেবে অবহেলা করা যাবে না। মনেরও যত্ন নিতে হবে।
এনএম