আসাদুজ্জামান লিমন
২৫ জুন ২০২২, ০৯:৩০ এএম
স্বপ্ন আর কেবল স্বপ্ন নেই। স্বপ্ন এখন বাস্তব। কোটি মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে প্রমত্তা পদ্মার বুকে জেগেছে সেতু। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলার মানুষের বহুল আকাঙ্খিত সেতুটি উদ্বোধনের দ্বারপ্রান্তে। আনন্দের জোয়ার কেবল পদ্মা পাড়েই নয়, ছড়িয়ে পড়েছে বাংলার আনাচে-কানাচে।
আজ ২৫ জুন পদ্মা সেতুর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর আগামীকাল ২৬ জুন সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হবে এই সেতু।
সেতু চালু হলে যোগাযোগ ব্যবস্থার যেমন আমূল পরিবর্তন ঘটবে, তেমনি পদ্মার দুই পাড় হয়ে উঠবে ভ্রমণের নতুন গন্তব্য। ইতিমধ্যে অনেকেই ভ্রমণের পরিকল্পনা সাজাচ্ছেন।
এদের একজন খোন্দকার সালাউদ্দিন তনু। তিনি একটা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। তনু পরিকল্পনা করছেন সেতু চালু হলে বন্ধুদের নিয়ে মোটরসাইকেলে ভ্রমণে যাবেন। ঢাকা থেকে বাইক নিয়ে পদ্মা পাড় হবেন। ওপারে গিয়ে সময় কাটাবেন। নতুন সেতু দেখার পাশাপাশি ঘুরবেন আশেপাশে।
তনুর মতো ইলিয়াসও পরিকল্পনা করছেন পদ্মা সেতু এলাকায় ঘুরতে যাবার। তার বাড়ি মাদারীপুরে। পড়েন একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে।
তিনি বলেন, আমরা বন্ধুরা মিলে ২৬ জুন পদ্মা সেতু দেখতে যাব। প্রাইভেট কার ভাড়া করে সেতু দিয়ে পদ্মা পার হবো। ওপারে গিয়ে কিছুটা সময় কাটাবো। এরপর ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত যাবো। এভাবে একটা দিন সেখানে কাটিয়ে ঢাকা ফিরবো।
পদ্মা সেতুর উদ্বোধন ঘিরে এভাবেই বিভিন্ন বয়সী মানুষ ভ্রমণ পরিকল্পনা করছেন। নগরবাসীদের অনেকেরই পরিকল্পনা আগামী ছুটির দিনে পদ্মা সেতু দেখতে যাবেন।
ঢাকা থেকে আগত যানবাহন মাওয়া প্রান্ত থেকে সেতুতে উঠে চলে যাবে দক্ষিণাঞ্চলে। তাই এই পাশটায় এখন পর্যটন কেন্দ্র গড়ে উঠেছে। এখানে ব্যক্তিগত উদ্যোগে বেশ কিছু রিসোর্ট তৈরি হয়েছে। হয়েছে রেস্তোরাঁ।
মাওয়া প্রান্তের পদ্মা সেতুর নিচের অংশে নদী শাসন হয়েছে। জায়গাটা বেশ দৃষ্টিনন্দন। ঢাকা থেকে যারা পদ্মা সেতু দেখতে আসেন, তারা এখানে বেড়ান। সেতুর সঙ্গে ছবি তোলেন।
সেখানে পর্যটকদের আনাগোনা বেড়েছে, তাই স্থানীয়রা নানা পণ্যের পসরা সাজিয়েছেন। কেউ বিক্রি করছেন চা-পান, কেউবা বাদাম-চানাচুর। মিষ্টি-মনেক্কাও বিক্রি হয় সেখানে।
ছুটির দিনে এখানে আসলে নাগরদোলাতেও চড়া যায়। এসবই পদ্মা সেতুকে ঘিরে। সব মিলিয়ে পদ্মার পাড় এখন ভ্রমণের নতুন গন্তব্য হয়েছে।
পদ্মার ওই পাড় শরীয়পুরেরর জাজিরার নাওডোবায়। সেখানেও গড়ে উঠেছে বেশ কিছু রিসোর্ট ও রেস্তোরাঁ। ঢাকা থেকে যারা সেতু দেখতে আসবেন তারা ওই পারও যাবেন। গিয়ে সেখানে কিছুটা সময় কাটাবেন। পর্যটকদের জন্য সেখানে আয়োজনের কমতি নেই।
এদিকে সেতুতে ঘিরে চলছে নদী শাসনের কাজ। নদী শাসনের জন্য পদ্মার পার কংক্রিটের স্লাব দিয়ে বাঁধানো হয়েছে। যা ভ্রমণপিপাসুদের মনোরঞ্জন করছে।
ছুটির দিনে অনেকেই দলবল নিয়ে ঢাকা থেকে মোটরসাইকেল, প্রাইভেট কার কিংবা বাসে চেপে মাওয়াতে যাচ্ছেন। সেখানে পদ্মার পাড়ে কিছুটা সময় কাটিয়ে যান শিমুলিয়াতে। ওখানে বেশ কিছু হোটেল ও রেস্তোরাঁ আগে থেকেই রয়েছে। চোখের সামনে ইলিশ মাছ ভেজে পর্যটকদের রসনা মেটানো হয় এখানে।
এজেড