লাইফস্টাইল ডেস্ক
১১ জুলাই ২০২৫, ১২:৩৯ পিএম
জন্ডিস বা ইংরেজিতে Jaundice—একটি সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা। যা শরীরে বিলিরুবিন নামক একটি পদার্থের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার ফলে হয়। এটি এক ধরনের রোগ না হলেও বিভিন্ন অসুখের লক্ষণ হিসেবে দেখা দেয়। অনেকেই মনে করেন জন্ডিস ছোঁয়াচে, তবে বাস্তবতা ভিন্ন।
জন্ডিস কি ছোঁয়াচে রোগ?
না, জন্ডিস নিজে ছোঁয়াচে নয়। অর্থাৎ এটি এক ব্যক্তি থেকে অন্য ব্যক্তির দেহে সরাসরি ছড়ায় না। তবে এর পেছনের কিছু কারণ যেমন হেপাটাইটিস এ এবং হেপাটাইটিস বি ভাইরাস সংক্রমণ ছোঁয়াচে হতে পারে।

উদাহরণস্বরূপ:
হেপাটাইটিস এ সাধারণত দূষিত খাবার ও পানির মাধ্যমে ছড়ায়।
হেপাটাইটিস বি ও সি রক্ত, যৌন সম্পর্ক বা দূষিত সূচ ব্যবহারের মাধ্যমে একজন থেকে আরেকজনের দেহে প্রবেশ করতে পারে।
তবে অন্য কারণ যেমন পিত্তনালীতে পাথর, লিভারের কার্যকারিতা হ্রাস, কিংবা ওষুধজনিত পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় সৃষ্ট জন্ডিস—এগুলো একেবারেই ছোঁয়াচে নয়।
জন্ডিসের সাধারণ লক্ষণ
১. চোখ ও ত্বকে হলদে ভাব
২. প্রস্রাবের রং গাঢ় হলুদ বা বাদামি
৩. মলের রং হালকা
৪. শরীরে ক্লান্তি ও দুর্বলতা
৫. পেটে ব্যথা (বিশেষ করে ডান পাশে)
৬. ক্ষুধামান্দ্য বা বমিভাব
৭. জ্বর (যদি ভাইরাল সংক্রমণ থাকে)

চিকিৎসা ও প্রতিকার
চিকিৎসা নির্ভর করে জন্ডিসের কারণের উপর। সঠিকভাবে কারণ নির্ণয় না করে চিকিৎসা শুরু করলে সমস্যা বাড়তে পারে।
প্রাথমিক চিকিৎসা ও করণীয়
বিশ্রাম নিন ও প্রচুর পানি পান করুন
চর্বিযুক্ত ও ভাজাপোড়া খাবার এড়িয়ে চলুন
লিভারের ওপর চাপ ফেলে এমন ওষুধ (যেমন প্যারাসিটামল) এড়িয়ে চলুন
হেপাটাইটিস থাকলে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে যথাযথ ওষুধ গ্রহণ করুন
চিকিৎসকের কাছে কবে যাবেন?
চোখ ও ত্বক হলুদ হওয়া মাত্র
এক সপ্তাহের বেশি লক্ষণ থাকলে
বমি, জ্বর, অরুচি ও গা ব্যথা বাড়তে থাকলে
পেট ফাঁপা বা খুব বেশি ক্লান্তি অনুভব করলে

প্রতিরোধে করণীয়
বিশুদ্ধ পানি পান করুন
খাবার খাওয়ার আগে হাত ধুয়ে নিন
বাইরে রান্না করা ও অস্বাস্থ্যকর খাবার এড়িয়ে চলুন
হেপাটাইটিস-বিরোধী ভ্যাকসিন গ্রহণ করুন
ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখুন
নিরাপদ যৌন সম্পর্ক ও রক্তদান সম্পর্কিত সচেতনতা গড়ুন
আরও পড়ুন: হার্ট অ্যাটাক হবে কি না আগেই জানাবে এই টেস্ট
জন্ডিস নিজে ছোঁয়াচে না হলেও কিছু কারণ যেমন হেপাটাইটিস ভাইরাস সংক্রমণ ছড়াতে পারে। তাই রোগের প্রকৃত কারণ জানা এবং সচেতন থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সময়মতো চিকিৎসা নিলে জন্ডিস থেকে সম্পূর্ণভাবে সেরে ওঠা সম্ভব।
এজেড