লাইফস্টাইল ডেস্ক
০২ জুলাই ২০২৫, ০২:২২ পিএম
ত্বকের একটি অস্বস্তিকর সমস্যা আঁচিল। তিলের চেয়ে কিছুটা বড় আকারের এই শক্ত মাংসপিণ্ড নিয়ে বিরক্ত অনেকেই। তেমন একটা ক্ষতি না করলেও এটি সৌন্দর্যে ভাঁটা ফেলে। আবার এটি যে একদমই ক্ষতিকর নয়, তেমনটাও ঠিক নয়। অনেকসময় ক্যানসারের জীবাণু বহন করে আঁচিল। তাই শরীরে আঁচিলের আধিক্য দেখা দিলে সচেতন হওয়া জরুরি।
আঁচিল দূর করতে অনেকে এর শরীরে চুল পেঁচিয়ে রাখেন। এটি বেশ পুরনো একটি ঘরোয়া টোটকা। মা-দাদীরা প্রায়ই বলেন, আঁচিলে শক্ত করে চুল বা সুতো জড়িয়ে রাখলে তার চাপে আঁচিল ধরে পড়বে। এই টোটকা যে কাজে লাগে না তাও নয়। অনেকেরই আঁচিল ধরে পড়ে চুল পেঁচিয়ে রাখার পর। কিন্তু এটি কি ত্বকের জন্য ভালো? না ক্ষতির কারণ?

আঁচিলে চুল বা সুতো জাতীয় কিছু জড়িয়ে রাখা একদমই নিরাপদ নয়। এতে ত্বকে ক্ষত তৈরি হতে পারে। এমনকি হানা দিতে পারে সংক্রামক ব্যাকটেরিয়ারাও।
আঁচিল এমনিতে ক্ষতিকারক নয়। হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাসের সংক্রমণের কারণে ত্বকের কোষের অনিয়মিত বৃদ্ধির কারণে আঁচিল হয়ে থাকে। এই ভাইরাস ত্বকের বাইরের স্তর বা এপিডার্মিসে ঢোকে। সেখানে কোষগুলোর বৃদ্ধি ঘটাতে থাকে। যার ফলে ত্বকের ওপরের অংশে ছোট-বড় নানা আকৃতির আঁচিল তৈরি হয়।

আঁচিলের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে অনেকেই বিভিন্নরকম ওষুধ খান। কেউ আবার লেজার থেরাপিরও সাহায্য নেন। কেউবা আবার ভরসা রাখেন ঘরোয়া টোটকায়। যার মধ্যে একটি হলো চুল বা সুতো পেঁচিয়ে রাখা।
আঁচিলে চুল পেঁচিয়ে রাখলে ঘষা খেয়ে সেই অংশের ত্বকের ক্ষত তৈরি হতে পারে। সেখানে রক্তক্ষরণ হতে পারে। এছাড়া সেই জায়গায় ত্বকের রন্ধ্র বড় হয়ে যেতে পারে এবং সেখানে নানা রকম ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস বা ছত্রাক জন্মাতে পারে।

আঁচিলে কিছু পেঁচিয়ে রাখলে সেখানকার ত্বকে রক্ত চলাচল বাধা পায়। ফলে ত্বকের প্রদাহ বৃদ্ধি পায়। যা থেকে ঘা, পুঁজ হতে পারে। চুল পেঁচানোর পর যদি আঁচিল পড়েও যায়, তারপরেও ত্বকে ক্ষত থেকে যায়। সেখানে চুলকানি, র্যাশ বা পরবর্তীতে সোরিয়াসিসের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।
চুল বা সুতো দিয়ে আঁচিলে চাপ দিলে তার ওপরের অংশটি খসে যেতে পারে, কিন্তু শিকড় ত্বকের গভীরে থেকে যায়। ফলে যেখানে একবার আঁচিল হয়েছিল, সেই জায়গায় পরবর্তীতে আবারও আঁচিল হতে পারে।

আঁচিল সারাতে ব্যবহার করতে পারেন স্যালিসাইলিক অ্যাসিড। বাজারে স্যালিসাইলিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ জেল, লোশন বা ক্রিম পাওয়া যায়। নিয়মিত ব্যবহারে কয়েক সপ্তাহ বা মাস লাগতে পারে আঁচিল দূর হতে।
আরও পড়ুন-
আঁচিল ক্রমাগত বৃদ্ধি পেতে থাকলে চিকিৎসকরা ইলেক্ট্রোসার্জারি করেন। একে ইলেক্ট্রোকটারি বলে।

ক্রায়োথেরাপি বা তরল নাইট্রোজেন ব্যবহার করেও আঁচিল সারানো যেতে পারে। অনেকে আবার লেজার চিকিৎসা করান। যদিও এটি ব্যয়বহুল।
সবচেয়ে ভালো হয়, এই ব্যাপারে একজন চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ গ্রহণ করলে। তিনিই বলতে পারবেন। কোনটি আপনার জন্য ভালো হবে।
এনএম