নিশীতা মিতু
২০ জুন ২০২২, ১১:০৯ এএম
সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা, কুড়িগ্রামসহ দেশের ১৫টি জেলার ৭৩টি উপজেলায় কমবেশি বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে ইতোমধ্যে। ধারণা করা হচ্ছে আজকের মধ্যে পানি প্রবেশ করতে পারে টাঙ্গাইল, মুন্সিগঞ্জ, শরীয়তপুর জেলায়। স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় বন্দি হয়ে পড়েছেন লাখ লাখ মানুষ। ইতোমধ্যে বন্যাদুর্গত এলাকাগুলোতে দেখা দিয়েছে তীব্র সুপেয় পানি ও খাবারের সংকট।
বন্যা কবলিত এলাকার মানুষের প্রয়োজনে এগিয়ে আসছে দেশের সরকারি বেসরকারি নানা স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান। অ্যামেচার রেডিও সোসাইটি অব বাংলাদেশ, বিদ্যানন্দ, অভিযাত্রিক, লাইটার ইয়ুথসহ আরও অনেক সংগঠন প্রয়োজনীয় ত্রাণ সহায়তা দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে।
রবিবার অ্যামেচার রেডিও সোসাইটি অব বাংলাদেশের (এআরএসবি) সাধারণ সম্পাদক অনুপ কুমার ভৌমিক তার ফেসবুক প্রোফাইলে ত্রাণ বিষয়ক একটি পোস্ট দিয়েছেন। এতে তিনি লেখেন, বন্যা কবলিত এলাকায় এখন সবচেয়ে সমস্যায় রয়েছে শিশুরা। তাদের খাবার পানি ও পুষ্টিকর শিশু খাদ্য এর সংকট দেখা দিয়েছে। আমাদের সংগঠন দুর্গত এলাকায় শিশুখাদ্য নিয়ে যাচ্ছে। শিশুদের জন্য শুকনো পুষ্টিকর খাবারের পরামর্শ চাচ্ছি।
এআরএসবির মতো অনেকে সংগঠন ও ব্যক্তি নিজ উদ্যোগে সিলেটে ত্রাণ দিতে যাচ্ছে। তারা অনেকেই জানেন না, সেখানে কী ধরনের ত্রাণ সহায়তা দরকার। তাদের জন্য এই প্রতিবেদন।
বিশুদ্ধ পানি: বন্যা কবলিত এলাকায় সবচেয়ে বেশি অভাব দেখা দেয় সুপেয় বিশুদ্ধ পানির। তাই ত্রাণ হিসেবে একে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিন। বোতলজাত পানি নিয়ে যান।
পানি বিশুদ্ধিকরণ ট্যাবলেট: অতিরিক্ত পানি বহন করা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। এক্ষেত্রে পানি বিশুদ্ধ করার ট্যাবলেট, ফিটকিরি ইত্যাদি নিতে পারেন। এতে গৃহবন্দি মানুষরা নিজেরা পানি বিশুদ্ধ করে পান করতে পারবেন।
জরুরি শিশুখাদ্য: বড়রা খাবারের কষ্ট সহ্য করতে পারলেও শিশুরা তা পারে না। এই বিপদের সময় তাদের খাদ্যের প্রয়োজন অনেক বেশি। গুঁড়া দুধ, রাইস সিরিয়াল, ল্যাকটোজেন, সুজি, জুস ইত্যাদি খাবার নিতে পারেন ত্রাণ হিসেবে।
জরুরি ওষুধ: প্রতিকূল পরিবেশের সঙ্গে যুদ্ধ করে বন্যাদুর্গত এলাকার মানুষ শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েন। নানা পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হন তারা। ত্রাণ হিসেবে তাই দিতে পারেন স্যালাইন, ডায়রিয়ার ওষুধ। চাইলে ব্যথানাশক, জ্বর, কাশির ওষুধও দিতে পারেন।
পোশাক, ছাতা, রেইন কোট: দীর্ঘসময় এক কাপড়েই হয়তো রয়েছেন তারা। পানিতে ভেজা পোশাক গায়ে জড়িয়ে আছেন। তাই পোশাক দিতে পারেন। এই তালিকায় রাখতে পারেন ছাতা বা রেইন কোটের মতো দরকারি জিনিসগুলো। অনুদানের অর্থ বেশি হলে লাইফ জ্যাকেটও ত্রাণ হিসেবে দিতে পারেন।
মোমবাতি, টর্চ লাইট: বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে আলোর অভাবে ভুগছেন বন্য কবলিত এলাকার মানুষজন। তাদের মোমবাতি, দেয়াশলাই দিতে পারেন। আরেকটু ভালো কিছু দিতে চাইলে টর্চ লাইট দেওয়া যেতে পারে।
ইনফ্ল্যাটেবল বোট: স্থানীয় নৌকার দাম যখন আকাশচুম্বী তখন ত্রাণ হিসেবে কিছু ইনফ্ল্যাটেবল বোট দেওয়া যেতে পারে। হাওয়ায় পরিপূর্ণ এসব নৌকা ওজনে হালকা এবং দামে সাশ্রয়ী। ২/৩ জন মানুষ এই নৌকার সাহায্যে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যেতে পারবেন।
নিয়মিত ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করলে মুড়ি, চিড়া, সবজি খিচুড়ি ইত্যাদি খাদ্য ত্রাণ হিসেবে দিতে পারেন। আপনার সামর্থ্য অনুযায়ীই সাহায্য করুন বানভাসি মানুষদের।
এনএম