লাইফস্টাইল ডেস্ক
২৭ জুন ২০২৫, ১০:০১ এএম
খেতে খেতে হঠাৎ এক মুহূর্তে বোঝা যায়—শ্বাস আটকে যাচ্ছে, কথা বেরোচ্ছে না, গলা ব্যথা করছে। অনেকেই ভয় পেয়ে যান, কারণ এই পরিস্থিতি যদি গুরুতর হয়, তাহলে প্রাণহানিও ঘটতে পারে। সাধারণত আমরা একে বলি ‘বিষম খাওয়া’। কিন্তু কেন বিষম লাগে? আর তখনই বা কী করা উচিত?
চলুন জেনে নেওয়া যাক বিষম খাওয়ার কারণ, লক্ষণ ও জরুরি করণীয়।
বিষম খাওয়ার কারণ মূলত খাবার ভুল পথে চলে যাওয়া, অর্থাৎ শ্বাসনালীতে আটকে যাওয়া। আমাদের গলার মধ্যে খাদ্যনালী (esophagus) ও শ্বাসনালী (trachea) পাশাপাশি থাকে। খাওয়ার সময় স্বাভাবিকভাবে খাবার খাদ্যনালী দিয়ে যায়। কিন্তু যদি ভুলবশত কোনো খাবার বা পানীয় শ্বাসনালীতে ঢুকে পড়ে, তখনই বিষম লাগে।

তাড়াহুড়া করে খাওয়া
খাওয়ার সময় কথা বলা বা হাসাহাসি করা
শুকনো বা বড় সাইজের খাবার ভালোভাবে চিবিয়ে না খাওয়া
শিশু বা বৃদ্ধদের গিলতে সমস্যা হওয়া
পানির সঙ্গে বড় ট্যাবলেট গিলতে গিয়ে

হঠাৎ কাশি ওঠা
শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া
গলার ভেতর কষ্ট বা ব্যথা লাগা
চোখ দিয়ে পানি পড়া
কথা বন্ধ হয়ে যাওয়া
গুরুতর হলে শ্বাস বন্ধ হয়ে জ্ঞান হারানো
কাশতে দিন: বিষম লাগলে জোরে জোরে কাশি দিতে দিন। এতে অনেক সময় আটকে থাকা বস্তু বের হয়ে আসে।
মাথা নিচু করে পানিতে কাশি দিন (যদি তরল আটকে থাকে)।
পানি পান করতে দিন, তবে খুব ধীরে।

হুট করে কারো পিঠে খুব জোরে আঘাত দেবেন না
জোর করে পানি খাওয়াবেন না, এতে সমস্যা বাড়তে পারে
আতঙ্কিত হয়ে চিৎকার করবেন না
এই পদ্ধতি গুরুতর বিষম লাগলে ব্যবহার করা হয়।
যেভাবে করবেন (যদি আপনি সামনে থাকেন):
ব্যক্তির পেছনে দাঁড়ান
দুই হাত দিয়ে পেটের ওপর (নাভির ঠিক ওপরে) চাপ দিন
দ্রুত ও জোরে কয়েকবার ধাক্কা দিন (উপর দিকে তীব্র চাপ)
এটি খাবার বের করে আনতে সাহায্য করে
শিশুর ক্ষেত্রে বা গর্ভবতী নারীর ক্ষেত্রে ভিন্ন কৌশল লাগে, তাই বিশেষ সতর্কতা প্রয়োজন।

শিশুদের বিষম লাগলে মুখ নিচু করে পিঠে হালকা চাপ দিন
চিৎ অবস্থায় না রেখে কাত করে বসান
কোনো কিছু জোর করে গেলাতে যাবেন না
প্রয়োজনে দ্রুত চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যান
খাওয়ার সময় ধীরে ধীরে খান
ভালোভাবে চিবিয়ে খাবেন
খাওয়ার সময় কথা বা হাসি না করা
শিশুদের খাওয়ানোর সময় নজর রাখা
আরও পড়ুন: বর্ষাকালে কোন রোগটি বেশি হয়?
গলায় আটকাতে পারে এমন খাবারে সতর্ক থাকা (আঙ্গুর, বাদাম, মাছের কাঁটা ইত্যাদি)
বিষম খাওয়া একদিকে সাধারণ হলেও কখনো কখনো ভয়ংকর হয়ে উঠতে পারে। তাই সতর্ক থাকা জরুরি। আর যদি এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হন, আতঙ্কিত না হয়ে দ্রুত ও সঠিকভাবে ব্যবস্থা নিলে বড় বিপদ এড়ানো সম্ভব।
এজেড