ফিচার ডেস্ক
২১ জুন ২০২৫, ০১:২৮ পিএম
আমরা সবাই জানি বৃষ্টি কী? আকাশ থেকে জলবিন্দুর পতনই বৃষ্টি। তবে কখনও কি ভেবেছেন, বৃষ্টি কেন হয়? আবার বর্ষাকালেই বা এত বেশি বৃষ্টি হয় কেন? প্রকৃতির এই চক্র মানবজীবনের জন্য যেমন আশীর্বাদ, তেমনি অনেক সময় হয়ে দাঁড়ায় দুর্ভোগের কারণ। চলুন আজ জেনে নিই বৃষ্টির পেছনের বৈজ্ঞানিক কারণ, এবং বর্ষাকালে বৃষ্টিপাত এত বেশি হওয়ার রহস্য।
বৃষ্টি হলো আকাশ থেকে তরল পানির (জলবিন্দু) পতন। এটি প্রকৃতির একটি আবহাওয়াগত প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে পৃথিবীর পানিচক্র (Water Cycle) বজায় থাকে।

বৃষ্টির পেছনে রয়েছে একটি পূর্ণ চক্র, যাকে বলা হয় ‘Water Cycle’ বা "জলচক্র"। এর ধাপগুলো নিচে দেওয়া হলো:
বাষ্পীভবন (Evaporation): সূর্যের তাপে নদী, সাগর, জলাশয়ের পানি বাষ্প হয়ে বাতাসে উঠে যায়।
আরও পড়ুন: বৃষ্টির দিনে খিচুড়ি খেতে ইচ্ছে করে কেন?
সংঘনন (Condensation): এই জলীয়বাষ্প ঠাণ্ডা হয়ে মেঘে রূপ নেয়।
মেঘ গাঢ় হওয়া: মেঘ ভারী হয়ে ওঠে, কারণ এতে পানির কণাগুলো একত্রিত হতে থাকে।
বৃষ্টিপাত (Precipitation): মেঘের পানিকণা ভারী হলে তা আর বাতাসে ভেসে থাকতে পারে না— ফলে তা বর্ষণের মাধ্যমে পৃথিবীতে পড়ে।

বর্ষাকালে বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে যে ভারি বৃষ্টিপাত হয়, তার পেছনে রয়েছে মৌসুমি বায়ুর (Monsoon Wind) প্রভাব।
গ্রীষ্মকালে স্থলভাগ গরম হয়ে ওঠে, ফলে বায়ু হালকা হয়ে উপরে উঠে যায়।
এই অবস্থায় বঙ্গোপসাগর থেকে জলীয়বাষ্পপূর্ণ বায়ু স্থলভাগের দিকে ছুটে আসে—এটাই মৌসুমি বায়ু।
আরও পড়ুন: বর্ষায় পেট খারাপের ঝুঁকি বাড়ায় এসব খাবার
এই বায়ু বাংলাদেশের মতো দেশগুলোর ওপর দিয়ে বয়ে যেতে যেতে বায়ুমণ্ডলের ঠাণ্ডা স্তরে পৌঁছে ঘন মেঘ তৈরি করে এবং তখন ভারী বৃষ্টিপাত হয়।
বর্ষাকাল সাধারণত জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত স্থায়ী হয়।

কৃষির জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়
ভূগর্ভস্থ পানির স্তর রিচার্জ হয়
গরম কমে গিয়ে আবহাওয়া ঠাণ্ডা হয়
জীববৈচিত্র্য রক্ষা পায়
অতিবৃষ্টির সমস্যাও আছে:
বন্যা ও জলাবদ্ধতা
ফসল নষ্ট হওয়া
রোগবালাই বেড়ে যাওয়া (ডেঙ্গু, কলেরা, টাইফয়েড)
রাস্তাঘাটের ক্ষতি ও যানজট

বৃষ্টি প্রকৃতির এক অনন্য উপহার। বর্ষাকালে এর পরিমাণ বেশি হলেও তা আমাদের কৃষি, জীবনধারা এবং পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। তবে অতিবৃষ্টি যেন ক্ষতির কারণ না হয়, সে জন্য ব্যক্তিগত ও সামাজিক প্রস্তুতি গ্রহণ করাও জরুরি।
এজেড