লাইফস্টাইল ডেস্ক
২০ জুন ২০২৫, ০৩:৪৮ পিএম
বর্ষাকালে বাজারে পাওয়া যায় টাটকা কলমি, পুঁই, লাল শাক কিংবা পালং। কিন্তু আমাদের অনেকের বাড়ির বয়োজ্যেষ্ঠরা বলে থাকেন—বর্ষাকালে শাক না খাওয়াই ভালো।
প্রশ্ন হলো, কেন এমন বলা হয়? এটা কি কেবল প্রাচীন কোনো কুসংস্কার, নাকি এর পেছনে রয়েছে বাস্তব কোনো স্বাস্থ্যঝুঁকি?
চলুন বিষয়টি পরিষ্কারভাবে বিশ্লেষণ করি।
বর্ষাকালে প্রকৃতির পরিবেশ অনেকটাই আদ্র, স্যাঁতসেঁতে এবং মাটিতে পানি জমে থাকে। এই পরিস্থিতি ব্যাকটেরিয়া, ফাঙ্গাস ও পরজীবী জীবাণু বৃদ্ধির জন্য আদর্শ। ফলে যেসব শাক মাটির খুব কাছাকাছি বা নিচু জমিতে জন্মায়, সেখানে নানা ধরনের সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে।

বর্ষার পানিতে থাকা ই-কোলাই, সালমোনেলা বা অন্যান্য জীবাণু সহজেই শাকের পাতায় বা ডাঁটায় লেগে যেতে পারে। এগুলো ভালোভাবে না ধুলে বা সঠিকভাবে রান্না না করলে পেটের সমস্যা হতে পারে।
আরও পড়ুন: সবজি থেকে কীটনাশক দূর করার উপায়
বর্ষায় আর্দ্রতা বেশি থাকায় শাকে ছত্রাক বা ফাঙ্গাস জন্ম নেয়, যা অনেক সময় চোখে দেখা যায় না। এছাড়া অনেক সময় কৃষক অতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহার করেন, যেটা ঠিকমতো না ধুলে শরীরে বিষক্রিয়া ঘটাতে পারে।
শাকপাতায় গলগন্ড পোকা, পোকামাকড়ের ডিম বা লার্ভা লেগে থাকে, যা ভালোভাবে পরিষ্কার না করলে দেহে ঢুকে যেতে পারে।
বাজারে বিক্রির সময় শাকসবজি অনেক সময় নোংরা পানিতে ভিজিয়ে রাখা হয় যাতে তা দেখতে টাটকা লাগে। এতে শাকের উপর ছড়িয়ে পড়ে ব্যাকটেরিয়া।

না, তা নয়। বরং সতর্কভাবে শাকসবজি খেলে বর্ষাতেও উপকার পাওয়া যায়। বর্ষাকালে শরীরে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়, ফলে শাকের ভিটামিন, আয়রন, ফাইবার খুবই দরকার হয়। তবে কিছু নিয়ম মেনে চলা জরুরি-
টাটকা ও স্বাস্থ্যকর শাক কিনুন—পাতা হলুদ বা ছত্রাকযুক্ত হলে কিনবেন না
লবণ-পানি বা ভিনেগার দিয়ে ধুয়ে নিন—ব্যাকটেরিয়া ও কীটনাশক দূর হয়
ভালোভাবে সিদ্ধ করে রান্না করুন—কাঁচা বা হালকা রান্না এড়িয়ে চলুন
একই শাক একটানা কয়েক দিন না খান—বিভিন্নতা রাখুন
বিশ্বস্ত উৎস থেকে শাক কেনার চেষ্টা করুন—বিশেষ করে অর্গানিক বা নিরাপদ সবজি বিক্রেতা
বর্ষাকাল মানেই সংক্রমণের মৌসুম। তাই শাকসবজি হোক বা অন্য খাবার—পরিষ্কার ও সচেতনতার সঙ্গে খেলে বর্ষাও হতে পারে সুস্থ থাকার সময়।
এজেড