লাইফস্টাইল ডেস্ক
০১ জুন ২০২৫, ০৩:৩৭ পিএম
পাকস্থলীর যে সমস্যাগুলোতে মানুষ সবচেয়ে বেশি ভোগে তার মধ্যে পাইলস অন্যতম। বিভিন্ন পর্যায় ভেদ করে রোগটি জটিল আকার ধারণ করে। যাদের পাইলসের সমস্যা আছে তারাই জানে এর কষ্ট। তবে রোগটি নিয়ে অতিরিক্ত আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। সঠিক সময়ে রোগ চিহ্নিত করে চিকিৎসা করা গেলে পাইলস থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব।
অর্শরোগ বা পাইলস বা হেমোরয়েড (ইংরেজি: Haemorrhoids, মার্কিন ইংরেজিতে Hemorrhoids, হেমোরয়েডস) হলো পায়ুপথে বিদ্যমান অঙ্গ রক্তনালী যা মল নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। যখন পায়ুপথে এসব শিরার সংক্রমণ এবং প্রদাহ হয়, চাপ পড়ে তখন হেমোরয়েডস বা পাইলসে প্রদাহ হয়। অনেকে একে অর্শরোগও বলেন।

হেমোরয়েডস বা পাইলস বলতে সাধারণভাবে রোগ বোঝানো হলেও আসলে এটি পায়ুপথের শেষাংশে থাকা এক ধরণের রক্তনালীগুচ্ছের সাধারণ নাম। বৃহদান্ত্রের শেষভাগে মলদ্বারের ভেতরে ও বাইরে থাকা কুশনের মতো এই রক্তনালীগুচ্ছ বা জালিকা প্রয়োজনমতো সঙ্কুচিত ও প্রসারিত হয়ে মলত্যাগে সহায়তা করে। পাইলস বা অর্শ রোগ হলো এই রক্তনালীগুচ্ছের প্রদাহ ও সংক্রমণ।
দীর্ঘদিনের কনস্টিপেশন বা কোষ্ঠকাঠিন্য, পুরনো ডায়রিয়া, মেদস্থূলতা, শারীরিক নিষ্ক্রিয়তা, আঁশযুক্ত খাবার কম খাওয়া এবং প্রক্রিয়াজাত খাবার বেশি খাওয়া— এগুলোই মূলত পাইলসের কারণ। আবার অনেকসময় গর্ভাবস্থা, বাড়তি ওজন বা অন্য কোনো কারণে মলত্যাগের সময় বেশি জোরাজুরি করলেও পাইলস হতে পারে।
যারা ঘণ্টার পর ঘন্টা চেয়ারে বসে কাজ করতে অভ্যস্ত তাদের পাইলসের ঝুঁকি বেশি থাকে। এই কারণে বেশিরভাগ সময় বসে কাজ করেন এমন চাকরিজীবীদের মধ্যে এই রোগ বেশি দেখা যায়।

হেমোরয়েডস বা অর্শরোগ অবস্থান অনুযায়ী সাধারণত তিন ধরনের হয়। যথা-
পায়ুপথের বহিঃঅর্শরোগ
পায়ুপথের অন্ত বা ভেতরের অর্শরোগ
আবার কখনও দুই অবস্থা একসঙ্গেও থাকতে পারে।
পায়ুপথের ভেতরের অর্শরোগ বা পাইলস ফুলে মলদ্বারের বাইরে বের হয়ে আসাকে আবার ৪টি পর্যায়ে ভাগ করা হয়।

প্রথম পর্যায়: পাইলস ফুলে বাইরে বের হয়ে আসে না বা প্রলেপস হয় না।
দ্বিতীয় পর্যায়: পায়খানার পর পাইলস ফুলে বাইরে বের হয়ে আসে এবং কিছুক্ষণ পর আপনা-আপনি ঠিক হয়ে যায়।
তৃতীয় পর্যায়: পাইলস ফুলে বাইরে বের হয়ে আসে এবং নিজেকে ঠিক করতে হয়।
চতুর্থ পর্যায়: পাইলস ফুলে বাইরে বেরিয়ে আসে বা প্রলেপস হয়। এটি আর নিজে ঠিক করা যায় না।

পাইলসের প্রধান কারণগুলো হচ্ছে-
এছাড়া পারিবারিক ইতিহাস, আঁশযুক্ত খাবার কম খাওয়া, ভারি মালপত্র বহন করা, স্থূলতা, কায়িক শ্রম কম করার কারণে এই সমস্যা হয়ে থাকে। গর্ভকালীন সময়, পায়ুপথে যৌনক্রিয়া, যকৃত রোগ বা লিভার সিরোসিস ইত্যাদি কারণে এই রোগের আশংকা বেড়ে যায়। সর্বোপরি পোর্টাল ভেনাস সিস্টেমে কোনো ভাল্ব না থাকায় উপরিউক্ত যেকোনো কারণে পায়ু অঞ্চলে শিরাগুলোতে চাপ পড়ার ফলে পাইলস সৃষ্টি হয়।

পায়ুপথের অন্ত্র বা ভেতরের অর্শরোগে সাধারণত তেমন কোনো ব্যথা বেদনা, অস্বস্তি থাকে না।
আরও পড়ুন-
পায়ুপথের বহিঃঅর্শরোগের কিছু লক্ষণ হলো-
পাইলসের সমস্যা নিয়ে অবহেলা করা মোটেও উচিত নয়। যত দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন তত দ্রুত এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সহজ হবে।
এনএম