নিশীতা মিতু
০৫ জুন ২০২২, ১২:২৩ পিএম
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে শনিবার রাতে একটি কনটেইনার ডিপোতে ভয়াবহ আগুন লাগে। এরপর ঘটে বিস্ফোরণ। ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, ডিপোটির কনটেইনারে হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড নামের রাসায়নিক পদার্থ ছিল। যার কারণেই এমন ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটেছে। এই রাসায়নিক পদার্থটিকে নিয়ে অনেকের মনেই কৌতূহল তৈরি হয়েছে। তারা জানতে চান কেন হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড বিস্ফোরিত হলো? এই রাসায়নিকের আগুন কেন পানি দিয়ে কেন নেভানো যাচ্ছে না?
হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড কী?
মূলত হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড একটি রাসায়নিক যৌগ। বিশুদ্ধ অবস্থায় এটি বর্ণহীন তরল। পানির চেয়ে হাইড্রোজেন পার-অক্সাইডের সান্দ্রতা সামান্য বেশি। তরল পদার্থের অভ্যন্তরীণ ঘর্ষণের ফলে প্রবাহে (বয়ে যেতে) বাধা দেওয়ার যে প্রবণতা তাকে সান্দ্রতা বলা হয়।
সবচেয়ে সরল পার-অক্সাইড এটি। হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড শক্তিশালী জারক ও বিরঞ্জক।
হাইড্রোজেন পার-অক্সাইডের ব্যবহার
সরাসরি হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড ব্যবহার বিপজ্জনক। তাই নিরাপত্তাজনিত কারণে সবসময় এর জলীয় দ্রবণ ব্যবহার করা হয়। এই রাসায়নিকের সর্বোচ্চ ব্যবহার দেখা যায় অ্যাভিয়েশন শিল্পখাতে। গাঢ় হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড রকেটের জ্বালানিতে প্রোপেল্যান্ট হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড কখন বিপজ্জনক?
এই রাসায়নিকটির স্ফুটনাঙ্ক ১৫০.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা পানির চেয়েও ৫০ ডিগ্রি বেশি। যে তাপমাত্রায় কোনো তরল পদার্থ বুদবুদসহ ফুটতে থাকে, তাকে সেই তরল পদার্থের স্ফুটনাঙ্ক বলে। হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড উত্তপ্ত করা হলে এটি তাপীয় বিয়োজনে বিস্ফোরক হিসেবে আচরণ করে। এজন্য এই রাসায়নিকটি কম তাপে নিরাপদে পাতিত করা হয়।
হাইড্রোজেন পার-অক্সাইডকে সরাসরি বিস্ফোরক তালিকায় রাখা না হলেও ক্ষতি করার অসীম ক্ষমতা রয়েছে এর। ২০২০ সালে লেবাননে অ্যামোনিয়াম নাইট্রেটের গুদামে এই রাসায়নিক বিস্ফোরণে প্রায় ২০০ মানুষ মারা গিয়েছিল।
কেন পানি দিয়ে হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড কারণে লাগা আগুন নেভানো যায় না?
হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড কারণে লাগা আগুন পানি দিয়ে নেভানো যায় না। বরং এতে আগুনের মাত্রা আরও বাড়ে। রাসায়নিকের কারণে লাগা আগুন নেভাতে হয় ফগ সিস্টেমে। কিংবা ব্যবহার করা হয় ফোম কিংবা ড্রাই পাউডার জাতীয় অগ্নি নির্বাপণ যন্ত্র। এ কারণে পানির সাহায্যে এই আগুন নেভানো সম্ভব নয়।
এনএম/এজেড