লাইফস্টাইল ডেস্ক
২৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৪৩ পিএম
একজন নারীর জীবনের অখণ্ড অঙ্গ হচ্ছে মাসিক চক্র বা ঋতু চক্র বা পিরিয়ড। এর সঙ্গে প্রজনন ক্ষমতা ওতপ্রোতভাবে জড়িত। সাধারণত মাসিক চক্র ২৮ দিনের হয়ে থাকে। কারো কারো ক্ষেত্রে এটি ৩৫ দিনেরও হতে পারে। প্রতিটি নারীর জীবনে এই চক্রের ব্যাপ্তি আলাদা।
পিরিয়ডের কতদিন পর একজন নারী মিলন করলে গর্ভবতী হবেন, তা তার মাসিক চক্রের দৈর্ঘ্যের ওপর নির্ভর করছে। সাধারণত, যেসব নারীর মাসিক চক্র ২৮ দিনে সম্পূর্ণ হয়, তাদের ক্ষেত্রে ১৪তম দিনে ডিম্বস্ফোটন হয়। যা গর্ভবতী হওয়ার অন্যতম শর্ত। সাধারণ নিয়মে পিরিয়ডের প্রথম দিন থেকে গুনলে ১১ থেকে ১৪-তম দিনের মধ্যবর্তী সময়কেই গর্ভবতী হওয়ার আদর্শ সময় বলে মনে করা হয়।

ডিম্বস্ফোটনের সময় কী হয়?
ডিম্বস্ফোটনের সময় ডিম্বাশয় একটি পরিণত ডিম রিলিজ করে। এই ডিমটি ফ্যালোপিয়ান টিউবে স্পার্মের জন্য অপেক্ষা করে এবং এরা মিলিত হলে একজন নারী খুব শীঘ্রই গর্ভবতী হতে পারবেন। একটি স্পার্ম যেখানে নারীর ডিম্বাশয়ে ৩ থেকে ৫ দিন পর্যন্ত থাকতে পারে, সেখানে একটি নারীর ডিম্ব মাত্র ১২ থেকে ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত সক্রিয় থাকে।
আরও পড়ুন- এই ফল খেলে বিপদ হতে পারে গর্ভবতীদের!
এসময়ের মধ্যে যদি ডিম স্পার্মের সাথে মিলিত হতে পারে তাহলে গর্ভবতী হবার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। ডিম্বস্ফোটন হওয়ার পরে গর্ভবতী হতে চেষ্টা করা বুদ্ধিমানের কাজ নয়। তার আগে চেষ্টা করলে ফল পেতে পারেন। তাই, গর্ভধারণের ক্ষেত্রে পিরিয়ডের পর ১২ থেকে ১৬-তম দিনের অন্তর্বর্তী সময় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। এসময়ের মধ্যে অরক্ষিত মিলন গর্ভধারণের জন্য উপযুক্ত।

ডিম্বস্ফোটনের সময় বোঝায় উপায় কী?
ডিম্বস্ফোটনের কিছু নির্দিষ্ট সংকেত আছে যা থেকে বোঝা যায় যে শরীর এসময় সব থেকে উর্বর। এই সময়ে তলপেটে ফোলাভাব অনুভব করতে পারেন। পেটের একদিকে যন্ত্রণা ও ঘ্রাণশক্তির আকস্মিক বৃদ্ধিও ডিম্বস্ফোটনের লক্ষণ।
আরও পড়ুন- গর্ভবতী মায়েরা যেসব খাবার খাবেন
এছাড়াও এসময়ে সাদা স্রাব অত্যধিক পরিমাণে তৈরি হতে পারে, এটি অনেকটা ডিমের সাদা অংশের মতো দেখতে। এসব লক্ষণ দেখা দিলে বুঝবেন ডিম্বস্ফোটনের দিন উপস্থিত এবং আপনি গর্ভবতী হতে চেষ্টা করতে পারেন।

শরীরের তাপমাত্রার (বিছানা ছাড়ার সময়কার তাপমাত্রা) হিসেব রেখেও বিশেষ এই সময় বের করা যায়। বেশীরভাগ নারীর ক্ষেত্রে স্বাভাবিক তাপমাত্রা ৯৬ থেকে ৯ ডিগ্রি ফারেনহাইটের মধ্যে হয়। যখন তাপমাত্রা সামান্য বাড়ে (৪ থেকে ৮/১০ ডিগ্রি, তার মানে হলো ১২ থেকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ডিম্বস্ফোটন হয়েছে।
আরও পড়ুন- নরমাল ডেলিভারি হওয়ার উপায়
পিরিয়ডের পর কোন দিনটি গর্ভধারণের জন্য উপযুক্ত?
নিজস্ব আদর্শ উর্বর সময় নির্ধারণ করার জন্য মাসিক চক্রের হিসাব রাখা খুব ভালো একটি উপায় (৮ বা তার বেশি মাসের জন্য, যদি সম্ভব হয়)। আপনার সবথেকে ছোট চক্রটিকে শনাক্ত করুন (ধরুন ২৭ দিন) ও সেখান থেকে ১৮ বিয়োগ করুন। উত্তর পেলেন ৯। এটি আপনার প্রথম উর্বর দিন।

আবার আপনার দীর্ঘতম চক্র (ধরুন ৩০ দিন) থেকে ১১ বাদ দিন, তাহলে উত্তর পাবেন ১৯। এটি আপনার শেষ উর্বর দিন। একাধিক মাস ধরে গণনা করা চক্র যদি ২৭ এবং ৩০-এর মধ্যে ঘোরাফেরা করে, তাহলে ৯ থেকে ১৯-তম দিনের মধ্যে আপনি সবথেকে উর্বর।
এনএম