নিশীতা মিতু
২৭ মে ২০২৪, ০২:৪৪ পিএম
দেশের উপকূলীয় জেলাগুলোতে তাণ্ডব চালিয়েছে ঘূর্ণিঝড় রেমাল। দিনের আলোর সঙ্গে দৃশ্যমান হচ্ছে লণ্ডভণ্ড হওয়ার নানা চিত্র। কোথাও ভেঙেছে ঘরবাড়ি, উপড়ে পড়েছে গাছ। কোথাও বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে পুরো এলাকা। জলোচ্ছ্বাসের কারণে ভেঙেছে বেড়িবাঁধ। ফলে প্লাবিত হয়েছে গ্রামের পর গ্রাম।
ভৌগোলিক অবস্থানগত কারণে বাংলাদেশ একটি দুর্যোগপ্রবণ দেশ। প্রতিবছর এই দেশের মানুষকে বন্যা, খরা, ভূমিধস, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, শৈত্যপ্রবাহের কবলে পড়তে হয়। এতে ব্যাপক সম্পদ ও প্রাণহানি ঘটে।
প্রাকৃতিক দুর্যোগগুলোর মধ্যে ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে সম্পদ ও প্রাণহানির পরিমাণ সবচেয়ে বেশি। ঘূর্ণিঝড় কিংবা জলোচ্ছ্বাসে মানুষের যেমন ক্ষতি হয়, তেমনই ক্ষতি হয় গবাদি পশু কিংবা বন্য প্রাণীর। অবুঝ এসব প্রাণীরা এসময় হয়ে পড়ে বড্ড অসহায়।
ঝড়ের কবলে বাসস্থান হারায় অনেক পশু-পাখি। বন্য প্রাণীদের অনেকেই চলে আসে লোকালয়ে। ভয় পেয়ে বেশিরভাগ সময়ই গ্রাম বা এলাকাবাসীরা এসব প্রাণীদের মেরে ফেলেন। অথচ এই বিপদের সময় সহানুভূতি তাদেরও কাম্য।
জলোচ্ছ্বাসের সময় কাদায় অনেক পশু আটকে যায়। আবহাওয়া অনুকূলে এলে অতি দ্রুত উদ্ধার দল নিয়ে খাল, নদী, পুকুর ও সমুদ্রে ভাসা বা বনাঞ্চলে বা কাদার মধ্যে আটকে পড়া প্রাণীদের উদ্ধার করুন। আহত পশু বা পাখির চিকিৎসার ব্যবস্থা করুন।
কুকুর, বিড়াল, গরু বা ছাগলের মতো কোনো প্রাণী যদি এসময় আপনার বাড়িতে চলে আসে তবে তাড়িয়ে না দিয়ে তাকে আশ্রয় দিন। মানুষের মতো তারাও দুর্যোগে অসহায় হয়ে পড়ে। তাদের প্রতি মানবিক আচরণ করুন।
শহর বা গ্রামে ঝড়ের সময় গাছ উপচে পড়ে, বাতাসের চাপে অনেক পাখির বাসা ভেঙে যায়। আহত পাখিরা তাই এসময় বাসাবাড়িতে আশ্রয় নিতে চেষ্টা করে। এমন পাখিদের যত্ন নিন। সম্ভব হলে খাবার দিন, চিকিৎসার ব্যবস্থা করুন। এরপর আবহাওয়া অনুকূলে এলে সে নিজেই পথ চিনে চলে যেতে পারবে।
দুর্যোগে মানুষ যেমন কষ্ট পায় তেমন পশু-পাখিরাও কষ্ট পায়। তারা মুখ ফুটে নিজের অনুভূতি প্রকাশ করতে পারে না। এসব অসহায় প্রাণীদের প্রতি সবার সদয় আচরণ করা উচিত।