লাইফস্টাইল ডেস্ক
০৪ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৬:৩৫ পিএম
পৃথিবীর সপ্তম আশ্চর্যের মধ্যে একটি হলো ভারতের আগ্রার তাজমহল। প্রেমের নিদর্শন এই ভবনটি আসলে মুঘল সম্রাট শাহজাহান এবং তার স্ত্রী মমতাজের ভালবাসার স্মৃতিচিহ্ন। যমুনার তীরে অবস্থিত, শ্বেতশুভ্র পাথরে মোড়া তাজমহলের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হননি এমন মানুষ পাওয়া মুশকিল। তবে সেই ধবধবে সাদা পাথর হারিয়েছে তার জৌলুস। ক্রমশ সবুজ হয়ে যাচ্ছে তার রঙ। কিন্তু কেন হচ্ছে এমন?
বিশেষজ্ঞদের মতে, বর্ষায় কিংবা গরমে পাথরের গায়ে এই ধরনের সবুজ সংক্রমণ হতে পারে। তবে শীতকালে এমনটা হওয়ার কথা নয়। ভারতীয় পুরাতত্ত্ব জানিয়েছে, সাদা মার্বেল পাথরের রং বদলে সবুজ হওয়ার পেছনে রয়েছে ‘গোল্ডিকিরনোমাস’ নামক বিশেষ এক ধরনের পোকা।

এধরনের কীট ঝাঁক বেঁধে থাকতে পছন্দ করে। তাজমহলের গায়েই তাদের রাজত্ব। ‘গোল্ডিকিরনোমাস’ কীটের মুখ থেকে নির্গত লালা, মল জমতে জমতেই সফেদ দেওয়াল হয়ে যাচ্ছে সবুজ। এমটাই মনে করে ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ।
২০১৫ সালে তাজমহলে প্রথম এই কীটের আবির্ভাব ঘটে। যমুনা নদীর দূষিত পানিই সেই পোকার আঁতুড়ঘর। মার্চ-এপ্রিল এবং সেপ্টেম্বর-অক্টোবর, বছরে দু’বার এই পোকাগুলো বংশবিস্তার করে। আর তাই গরমের পাশাপাশি শীতেও এদের অত্যাচার চলতে থাকে।

তবে কি এসব পোকার দখল থেকে প্রেমের স্মৃতিসৌধ রক্ষা করা যাবে না? জানা যায়, পুরাতত্ত্ববিদ রাজকুমার পটেলের তত্ত্বাবধানে এক দল গবেষক বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখছেন। তদন্তে নেমে তারা দেখেছেন, ২০১৫ সাল থেকে একটু একটু করে সাদা মার্বেলের রং বদলে সবুজ হতে শুরু করেছিল। অনেকেই এর জন্য যমুনার দূষণকে দায়ী করেছিলেন। এটি অনেকাংশেই ঠিক।
কিন্তু করোনার সময় দূষণের মাত্রা কিছুটা কমা সত্ত্বেও এই রঙ বদলে কোনো হেরফের হয়নি। গতবারের তুলনায় চলতি বছরে এই পোকা আবার দ্বিগুণ গতিতে বংশবিস্তার করেছে। তাই সমস্যা থেকেই যাচ্ছে।

তাজমহলের শরীর থেকে সবুজ দাগ মুছতে তৎপর ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ। তাদের উদ্যোগে ইতিমধ্যেই ‘ডিসটিলড ওয়াটার’ দিয়ে ধুয়ে ফেলা হয়েছে এই বিশেষ সৌধটি। এতে পোকাদের উপদ্রব কিছুদিন নিয়ন্ত্রণে থাকলেও আবার তারা যথাস্থানে ফিরে এসেছে। এই বিষয়ে পুরাতত্ত্ববিদ রাজকুমার পটেল ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের রসায়ন বিভাগের সঙ্গেও কথা বলেছেন।
এনএম