লাইফস্টাইল ডেস্ক
১৪ আগস্ট ২০২৩, ০৬:৩০ পিএম
ঘরে ঘরে এখন খোঁজ মিলছে ডায়াবেটিস রোগীর। স্বাভাবিকভাবেই ডায়াবেটিস ধরা পড়লে খাওয়াদাওয়ায় চলে আসে নানা বিধি-নিষেধ। রক্তের শর্করার মাত্রা যখন স্বাভাবিকের তুলনায় বেড়ে যায় তখন রাশ টানতে হয় খাওয়াদাওয়ায়। ডায়াবেটিক রোগীরা অনেক খাবারই খেতে পারেন না।
ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে কী খাচ্ছেন তা যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি কখন খাচ্ছেন সেটিও জরুরি। কেবল স্বাস্থ্যকর খাবার খেলেই শর্করার মাত্রা ঠিক থাকবে এমনটা নয়। খেতে হবে সঠিক সময়ে। কেননা পেট খালি থাকলেই বেড়ে যায় শর্করার মাত্রা।

নিয়ম করে শরীরচর্চা, চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ খাওয়া, বাইরের খাবার না খাওয়া— ডায়াবেটিকদের কিছু নিয়ম মেনে চলতেই হয়। নয়তো শর্করার মাত্রায় রাশ টানা সম্ভব নয়। তবে এগুলির পাশাপাশি নির্দিষ্ট সময়ে খাবার খাওয়াও জরুরি। এই একটি অনিয়ম বড় কোনও সমস্যা ডেকে আনতে পারে।
ডায়াবেটিস রোগীরা কী খাবেন?
পুষ্টিবিদদের মতে, ডায়াবেটিক রোগীর জন্য আদর্শ ডায়েটে ৫০ শতাংশ ফল ও আনাজ এবং ২৫ শতাংশ কার্বোহাইড্রেট থাকা উচিত। বাকি ২৫ শতাংশ থাকবে প্রোটিন। প্রাণীজ প্রোটিনের মধ্যে মাছ, মুরগির মাংস ও ডিম খেতে পারেন। নিরামিষভোজীরা পনির, সয়াবিন, ডালের উপর ভরসা রাখতে পারেন।

ডায়াবেটিস থাকলে ডায়েটে টক দই রাখতেই হবে। সাধারণত এক জন ডায়াবেটিক রোগীর বয়স, লিঙ্গ, শরীরের গঠন, জীবনযাপনের ধরন, রক্তে শর্করার মাত্রা— এসব বিষয়ের ওপর নির্ভর করে তারা সারা দিন কত ক্যালোরি খাবেন।
ফলের মধ্যে ভিটামিন সি আছে এমন ফল যেমন মুসাম্বি, কমলালেবু, পাকা পেঁপে, আপেল ডায়েটে বেশি করে রাখতে হবে। কার্বোহাইড্রেটের মধ্যে খেতে পারেন অল্প ভাত, রুটি, সুজি, চিড়া, কর্নফ্লেক্স, মুড়ি, ব্রাউন ব্রেড ইত্যাদি। তবে মাত্রাতিরিক্ত নয়। আনাজপাতির মধ্যে মেপে খেতে পারেন রাঙা আলু, কচু, কাঁচা কলা, মূলা, গাজর, কুমড়া ও এঁচোড়। পটল, চিচিঙ্গা, চালকুমড়া, করলা, পেঁপে, ঢ্যাঁড়স, বেগুন, বাঁধাকপি, লাউ, ফুলকপি, শসা, থোর, মোচা, ক্যাপসিকাম, টোম্যাটো, পেঁয়াজ, আদা, সব ধরনের শাক, বিনস, ডুমুর, শিম, সজনে ডাঁটা— এই সবজিগুলো খাবেন বেশি করে।

খাবার গ্রহণের ক্ষেত্রে ডায়াবেটিস রোগীদের কী কী খেয়াল রাখতে হবে?
১। সবচেয়ে বেশি নজর রাখতে হবে সময়ের দিকে। নির্দিষ্ট সময় বেঁধে খাবার খাওয়া রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণের রাখার জন্য জরুরি। বিশেষত যারা খাওয়ার আগে ইনসুলিন নেন, তাদের প্রতিদিন একই রকম রুটিন মেনে নির্দিষ্ট সময়ে খাওয়া উচিত।
২। কেবল খাওয়াদাওয়া নিয়ন্ত্রণ করলেই হবে না, সুস্থ থাকতে করতে হবে শরীরচর্চাও। ভারী ব্যায়াম না করে প্রতিদিন আধা ঘণ্টা হাঁটতে পারেন।
৩। নিয়মিত রক্তের শর্করার মাত্রা পরীক্ষা করাতে হবে।

ডায়াবেটিস রোগীদের যেসব খাবার খাওয়া মানা
ডায়াবেটিক রোগীদের মাখন, ঘি, মিষ্টি, সব রকমের মিষ্টিস্বাদযুক্ত খাবার যেমন, চিনি, মধু, গুড়, লজেন্স, আইসক্রিম, কেক, পেস্ট্রি, ফলের রস, নরম পানীয়, অ্যালকোহল, স্বাস্থ্যকর পানীয়, তেলেভাজা, শিঙাড়া, কচুরি, চপ, কাটলেট থেকে দূরে থাকাই ভাল।
খাদ্যতালিকা থেকে বাদ দিতে হবে ডাবল টোনড দুধ। বিস্কুটের মধ্যে ক্রিমক্র্যাকার, মারি, থিন অ্যারারুট।

ডায়াবেটিস রোগীর ডায়েটের মূল মন্ত্র, প্রাতরাশ ভারী হবে, দুপুরের খাবার মাঝারি এবং রাতের খাবার হালকা। কিন্তু সাধারণত অনেকেই ব্রেকফাস্ট এড়িয়ে যান। অন্যদিকে রাতে ভারী খাবার খান। এতে শর্করার মাত্রা বেড়ে যায়।
ডায়াবেটিক রোগীরা ভুলেও বেশিক্ষণ খালি পেটে থাকবেন না। এতে বিপদ বাড়ে। খিদে লাগলে শসার সঙ্গে টক দই, ডিম সেদ্ধ, ছোলা, ছাতু, মাখানা— এসব খেতে পারেন।
এনএম