লাইফস্টাইল ডেস্ক
১০ জুলাই ২০২৩, ১২:৩৯ পিএম
মশা। অতি ক্ষুদ্র একটি প্রাণী। অথচ এই প্রাণীটিই কিনা ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া, চিকুনগুনিয়ার মতো ভয়াবহ সব রোগের জন্ম দেয়! পৃথিবীতে নানা প্রজাতির মশা আছে। বর্ষায় বাড়ে অ্যানোফিলিস, এডিস কিংবা কিউলেক্স মশার উৎপাত।
মশার কামড়েই মূলত মশাবাহিত রোগগুলো হয়। প্রশ্ন হলো, অত ছোট একটি প্রাণী কীভাবে মানুষকে কামড়ায়? মোটা চামড়া ভেদ করে এটি কীভাবেই বা রক্ত চুষে খায়? চলুন আজ জেনে নিই এই প্রশ্নের উত্তর-
বিজ্ঞানীদের মতে, মশা কামড়ানোর সময় মানুষ কিন্তু টের পায় না। মূলত মশার রক্ত খাওয়া যখন প্রায় শেষ, তখন আমরা টের পাই। কেন প্রথমদিকে আমরা কামড় অনুভব করি না? কারণ রক্ত খেতে গায়ে বসার সঙ্গে সঙ্গেই মশা তার মাউথ পার্টস দিয়ে মানুষের রক্তে মিশিয়ে দেয় তাদের লালারস। এ কারণে প্রথমদিকে বোঝাই যায় না যে মশা কামড়াচ্ছে।
চামড়া ভেদ করে রক্তবাহ পর্যন্ত পৌঁছনোর জন্য মশার মুখে রয়েছে বিশেষ অঙ্গ। এর মধ্যে একটি হলো ঠোঁটের মতো অংশ। একে লেবিয়াম বলে। মশা কামড়ানোর সময় এই লেবিয়াম থাকে ত্বকের বাইরে।
লেবিয়ামের সাহায্যে মানব শরীরের ত্বকের মধ্যে মশা ঢুকিয়ে দেয় ৬টি সূচের মতো অংশ। এগুলোকে স্টাইলেট বলে। ৬টি সূচের মধ্যে ২টি বিশেষ সূচকে বলে ম্যাক্সিলি।
ম্যাক্সিলিতে থাকে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র দাঁতের মতো অংশ। আমাদের ত্বক চিড়তে বা চামড়া ভেদ করতে এই অংশটিকে করাতের মতো ব্যবহার করে মশা।
দাঁতের মতো এই অংশগুলি এতই ধারাল হয় যে মানুষ বুঝতেই পারে না মশা কামড়াচ্ছে৷ অনেকটা ড্রিল মেশিন দিয়ে ফুটো করার মতো প্রক্রিয়া এটি। আরেকটি সূচের মতো অংশকে বলা হয় ম্যান্ডিবল। এটি ত্বকের চেরা অংশকে ধরে রাখে দু’পাশে।
এরপরেই মশা তার প্রবোসিস নামক অংশ ঢুকিয়ে স্ট্র দিয়ে টানার মতো করে রক্ত খায়। এই অংশকে সাপোর্ট দেয় হাইপোফ্যারিংক্সের মতো অংশ। এর মাধ্যমেই আমাদের শরীরে নিজেদের লালারস ঢুকিয়ে দেয় মশা। ফলে মশা কামড়ালেও আমরা টের পাই না।
মশার এই লালারস মানুষের রক্তবাহকেও ডায়ালেট করে। মানুষের প্রতিরোধ প্রতিক্রিয়াকে আটকে দেয় এবং প্রোবোসিসকে রক্ত শোষণ করাতেও সাহায্য করে।
অতি অল্প সময়ে মশা কামড়ালেও কাজটি কিন্তু বেশ জটিল। তাই মশা থেকে সাবধানে থাকা জরুরি।
এনএম