images

আইন-আদালত

প্রথম আলোর সম্পাদকের জামিন শুনানিতে যা হলো

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

০২ এপ্রিল ২০২৩, ০৪:৩৭ পিএম

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে রাজধানীর রমনা থানায় করা মামলায় হাইকোর্ট থেকে ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন পেয়েছেন প্রথম আলো পত্রিকার সম্পাদক মতিউর রহমান।

রোববার (২ এপ্রিল) বিকেলে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আমিনুল ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

এদিন বিকেল ৩টা ১৪ মিনিটে জামিন শুনানি শুরু হয়। আদালতে মতিউর রহমানের পক্ষে শুনানি করেন সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ফিদা এম কামাল। তিনি আদালতে বলেন, প্রথম আলো প্রসঙ্গে একাত্তর টেলিভিশন যে প্রতিবেদন করেছে তা কারও দ্বারা প্রভাবিত হয়ে।

শুনানির একপর্যায়ে কোর্ট বলেন, সে সময় বাসন্তীর জন্য কেউ কিন্তু এগিয়ে আসেনি। মামলার বাদী কিভাবে ৭১ সালের কথা তুলে ধরল।

কোর্ট আরও বলেন, প্রথম আলো বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশ করে। আপনারা যদি এমন ধরনের ভুল করেন, তাহলে চলবে কীভাবে।

তখন মতিউর রহমানের আইনজীবী বলেন, এটি প্রথম আলো ভুল করেনি। প্রভাবিত হয়ে এরকম রিপোর্ট করেছে একাত্তর টিভির ফারজানা রুপা। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনটি অপব্যবহার হচ্ছে। পত্রিকায় আসা বক্তব্যটা জাকির হোসেনের নয় সবুজের।

তখন কোর্ট বলেন, আমরা সত্যের পক্ষে বিচার করব। এ সময় কোর্টে মতিউর রহমানের আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেন, আমরা যার পক্ষে আদালতে শুনানি করেছি তিনি বাংলাদেশের একজন সিনিয়র সম্পাদক। তিনি একতা পত্রিকার সম্পাদনা করেছেন।  

তখন রাষ্ট্রপক্ষের ডিএজি বলেন, একতা পত্রিকা আমরাও পড়েছি। আমি প্রথম আলোর পাঠক। কিন্তু উনি মতিউর রহমান কী নিউজ করেছেন। ৭ বছরের সবুজকে ব্যবহার করে তারা নিউজ করেছে। মাই লর্ড এটি মিথ্যা না। তারা নিজেরাই নিউজটি প্রত্যাহার করেছে। দেশের ক্ষতি করে তারা নিউজটা প্রত্যাহার করেছেন। দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য শামসুজ্জামান নিউজটি করেছে। কারও দ্বারা প্রভাবিত হয়ে।

motiur

এরপর অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মেহেদী হাসান চৌধুরী বলেন, প্রথম আলো কি সত্যের পক্ষে। এতো দেখি মিথ্যার পক্ষে। প্রথম আলোর কাছে আমরা কি এই আশা করি।

কোর্ট বলেন, সংবাদটা যদি প্রত্যাহার করে থাকে তাহলে প্রেস কাউন্সিলে যেতে পারে।

পরে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলাটিতে দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকার সম্পাদক মতিউর রহমানকে ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন দেন হাইকোর্ট।

এর আগে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় জামিন আবেদন করেন মতিউর রহমান। সেখানে তিনি বলেন, গত ২৬ মার্চ প্রথম আলোর একটি ফটোকার্ডে একজন দিনমজুরের বক্তব্য উদ্বৃত করা হয়। কিন্তু সেই উদ্ধৃতির সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয় একটি শিশুর ছবি। তবে দিনমজুরের উদ্ধৃতির সঙ্গে শিশুর ছবি প্রকাশের অসঙ্গতির বিষয়টি তুলে ধরে ১৭ মিনিটের মধ্যেই ফটোকার্ডটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে প্রত্যাহার করে সংশোধনী দেয় প্রথম আলো।

এমন প্রেক্ষাপটে গত বুধবার ভোর রাতে সিআইডি পরিচয়ে প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক শামসুজ্জামানকে সাভারের বাসা থেকে তুলে নেওয়া হয়। অপরদিকে রাজধানীর তেজগাঁও থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে শামসুজ্জামানের বিরুদ্ধে মামলা করেন যুবলীগের ঢাকা মহানগর উত্তরের ১১ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মো. গোলাম কিবরিয়া।

এর আগে বুধবার মধ্যরাতেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আরেকটি মামলা হয়। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আব্দুল মালেকের করা রমনা থানার ওই মামলায় প্রথম আলোর সম্পাদক ছাড়াও পত্রিকাটির সাভারের নিজস্ব প্রতিবেদক শামসুজ্জামান শামস, সহযোগী একজন ক্যামেরাপারসন এবং প্রতিবেদনটি প্রচার-প্রকাশের সঙ্গে জড়িত অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করা হয়।

শামসুজ্জামানকে বৃহস্পতিবার সকালে আদালতে হাজিরের পর রমনা থানার মামলায় তার জামিন আবেদন নাকচ করে কারাগারে পাঠান আদালত।

এআইএম/এমআর