ব্যাংকের ঋণ আদায়ের পদ্ধতি সামন্ত যুগের মতো: হাইকোর্ট

বর্তমান সময়ে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান যে পদ্ধতিতে ঋণ আদায় করছে তা সামন্ত যুগের কথা মনে করিয়ে দেয় বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট।

বুধবার (২৩ নভেম্বর) এ বিষয়ে করা আপিল নিষ্পত্তি করে বিচারপতি আশরাফুল কামালের একক বেঞ্চ রায় ঘোষণার সময় এমন মন্তব্য করেন।

আদালত বলেন, সাধারণ মানুষের কাছ থেকে চেকের বিপরীতে ব্যাংক যেসব মামলা করছে তা সামন্ত যুগের মতো। এভাবে চলতে পারে না। এই রায়ের ফলে সাধারণ মানুষের ঋণ নেওয়ার বিষয়টি সুবিধা হবে।

সারাদেশের সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান ঋণের বিপরীতে গ্রহণ করা চেকের বিপরীতে করা মামলার কার্যক্রম স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে আপিলকারীর আবেদন মঞ্জুর করা হয়েছে। ঋণ হিসেবে নেওয়া মোট টাকার ৫০ শতাংশ আগামী ১০ দিনের মধ্যে ফেরত দিতে আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। প্রতিটি ঋণের বিপরীতে ইনস্যুরেন্স করতে আইন প্রণয়নে জাতীয় সংসদকে পরামর্শ ও বাংলাদেশ ব্যাংককে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি দেশের সব আদালতকে ঋণের বিপরীতে চেকের মামলা আমলে না নেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়ার ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আলীর আপিলের রায়ে এমন নির্দেশনা দেন হাইকোর্ট।

আদালতে মোহাম্মদ আলীর পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন আব্দুল্লাহ আল বাকী। তাকে সহযোগিতা করেন ওয়াহিদা আফরোজ চৌধুরী, আইনজীবী কায়েদে আজম ইকবাল, আইনজীবী শাহীনুর রহমান ও আইনজীবী আছাদুজ্জামান।

আদালত থেকে বেরিয়ে আইনজীবী আব্দুল্লা আল বাকী বলেন, এ রায়ের ফলে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান ঋণের বিপরীতে চেক ডিজঅনারের মামলা করতে পারবে না। তবে অর্থঋণ আদালতে এ সংক্রান্ত মামলা করতে পারবেন।

মোহাম্মদ আলী ২০১১ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর ব্রাক ব্যাংক ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়ার নবীনগর শাখা থেকে ৪ লাখ টাকা ঋণ নেন। ঋণ পরিশোধ না করায় ২০১৫ সালের ২৭ জুলাই তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। মামলায় তাকে ৬ মাসের সাজা ও ২ লাখ ৯৫ হাজার ৩০৫ টাকা জরিমানা করা হয়।

এই রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের ৮ অক্টোবর হাইকোর্টে আপিল করেন মোহাম্মদ আলী। শুনানি শেষে আজ আদালত এই রায় ঘোষণা করেন।

এআইএম/এমআর