জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
২৭ মে ২০২৫, ১১:৩৫ এএম
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর সাবেক ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলাম সুপ্রিম কোর্ট থেকে খালাস পেয়েছেন। রায়কে ঘিরে তার মুক্তির সময় নিয়ে যেন কোনো বিভ্রান্তি না ছড়ায়, সে বিষয়ে সতর্ক করেছেন তার আইনজীবী অ্যাডভোকেট শিশির মনির।
মঙ্গলবার (২৭ মে) আপিল বিভাগ সর্বসম্মতভাবে এই রায় ঘোষণা করে। আদালত রায়ের পর্যবেক্ষণে বলেন, যথাযথ সাক্ষ্যপ্রমাণ বিশ্লেষণ না করেই আগে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। আদালতের ভাষায়, এটি ছিল ‘বিচারের নামে অবিচার’।
রায়ের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে আইনজীবী শিশির মনির জানান, এখন আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে আজহারের মুক্তির ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বলেন, আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রস্তুত করা হচ্ছে। যথাসময়ে সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে তিনি মুক্তি পাবেন ইনশাআল্লাহ। তবে কেউ যেন এই বিষয়ে ভুল তথ্য বা তারিখ প্রচার না করেন।
এই মন্তব্যের পাশাপাশি আইনজীবী শিশির মনির তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজেও একটি স্ট্যাটাস দেন। সেখানে তিনি স্পষ্ট করে জানান, বিষয়টি অত্যন্ত সংবেদনশীল। তাই দায়িত্বশীলভাবে আচরণ করা জরুরি।
রায়ের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে শিশির মনির বলেন, সত্য অবশেষে জয়ী হয়েছে। মিথ্যার ভেতরে ন্যায়বিচার পাওয়া সম্ভব নয়। আজকের রায়ের মধ্য দিয়ে অন্যায়ের অবসান হয়েছে।
বহুল আলোচিত এই মামলায় এটিএম আজহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের সময় রংপুর অঞ্চলে গণহত্যা, ধর্ষণ, অপহরণ, নির্যাতন ও অগ্নিসংযোগের মতো গুরুতর অপরাধের ছয়টি অভিযোগ আনা হয়।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তাকে পাঁচটি অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড দেয়। ২০১৫ সালের ২৮ জানুয়ারি তার আইনজীবীরা ১১৩টি যুক্তি উপস্থাপন করে আপিল করেন। ওই আপিলে দাবি করা হয়, ট্রাইব্যুনালের রায় ছিল পক্ষপাতদুষ্ট ও সাক্ষ্যপ্রমাণবিহীন।
আসামিপক্ষের আইনজীবীরা ৯০ পৃষ্ঠার মূল আপিলের সঙ্গে যুক্ত করেন আরও ২ হাজার ৩৪০ পৃষ্ঠার নথিপত্র। এরপর প্রায় এক দশক ধরে চলতে থাকা বিচারিক প্রক্রিয়ার মধ্যে ২০১৯ সালে আপিল বিভাগ মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখে।
তবে পরে রিভিউ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ফের পূর্ণাঙ্গ শুনানির অনুমতি পান আজহারুল ইসলাম। গত ৮ মে শুনানি শেষ হয়।
এআইএম/এইউ