images

আইন-আদালত

জঙ্গি নাটক: ট্রাইব্যুনালে মুখ খোলেননি পুলিশের সাবেক তিন কর্মকর্তা

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

০৭ মে ২০২৫, ০২:১৭ পিএম

‘জঙ্গি নাটক’ সাজিয়ে রাজধানীর কল্যাণপুরে জাহাজবাড়িতে নয় তরুণ হত্যা মামলায় মুখ খোলেননি পুলিশের তিন শীর্ষ কর্মকর্তা। তারা হলেন- পুলিশের সাবেক মহাপরিচালক (আইজিপি) শহীদুল হক, ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) সাবেক কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া ও মিরপুর জোনের সাবেক ডিসি জসিম উদ্দিন মোল্লা।

বুধবার (৭ মে) তাদের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হলে আবার জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন ট্রাইব্যুনাল। এর মধ্যে শহীদুল হককে ২৫ মে, আছাদুজ্জামান মিঞাকে ২৭ মে ও মোল্লাকে ২৯ মে জিজ্ঞাসাবাদ করবে তদন্ত সংস্থা। এছাড়া এই হামলায় তদন্ত শেষ করতে প্রসিকিউশনের আবেদনে ফের দুই মাস সময় বেধে দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।

এর আগে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পর গত ২৪ মার্চ পুলিশের সাবেক এই তিন কর্মকর্তাকে এই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠান ট্রাইব্যুনাল। ওইদিন ট্রাইব্যুনালের প্রধান কৌঁসুলি তাজুল ইসলাম বলেছিলেন, ‘তদন্ত সংস্থার সাক্ষ্যপ্রমাণে উঠে এসেছে যে, এই তিন পুলিশ কর্মকর্তার নির্দেশ ও পরিকল্পনায় জাহাজবাড়ি হত্যাকাণ্ড হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে তাদের আটক রাখার আবেদন করছি।’

শুনানি শেষে ট্রাইব্যুনাল গ্রেফতার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন। একইসঙ্গে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ৭ মে দিন ধার্য করা হয়।

তাজুল বলেন, ‘জঙ্গি তকমা দিয়ে জাহাজবাড়িতে নয় তরুণকে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ধরে এনে এখানে রেখে হত্যা করা হয়। ইসলামি ভাবধারাসম্পন্ন মানুষের ভেতর ভয়ের সংস্কৃতি চালু করতেই এভাবে জঙ্গি আখ্যা দিয়ে সাধারণ মানুষকে এভাবে হত্যা করা হতো, যাতে শেখ হাসিনার ক্ষমতাকে টিকিয়ে রাখা যায়।’

চিফ প্রসিকিউটর বলেন, ‘এই হত্যাকাণ্ড ছিল নিষ্ঠুরতম রাষ্ট্রীয় হত্যাকাণ্ড। সমালোচনার মুখে তৎকালীন ফ্যাসিস্ট সরকার ক্রসফায়ারের সংস্কৃতি বাদ দিয়ে এভাবে জঙ্গি নাটক সাজিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে মানুষ হত্যা করত। এভাবেই একের পর এক বিচারহীনতার সংস্কৃতি চালু করে।’

গুলশান হামলার ২৫ দিন পর ২০১৬ সালের ২৬ জুলাই কল্যাণপুরের ৫ নম্বর সড়কের ওই বাড়ির পঞ্চম তলায় অভিযান শুরু করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। বাড়িটির নাম তাজ মঞ্জিল হলেও ভবনের আকৃতির কারণে স্থানীয়রা একে জাহাজবাড়ি বলে, আর সেই নামটি গণমাধ্যমেও উঠে আসে।

অভিযান শেষে সন্দেহভাজন নয় জঙ্গির নিহত হওয়ার খবর আসে। হাসান নামে একজন গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আটক হন। পালিয়ে যান একজন। তারা সবাই নব্য জেএমবির সদস্য বলেই দাবি করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

পরদিন ২৭ জুলাই রাতে মিরপুর মডেল থানার পরিদর্শক মো. শাহজাহান আলম বাদী হয়ে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ৬ (২), ৮, ৯, ১০, ১২ ও ১৩ ধারায় একটি মামলা করেন। সেই মামলায় ১০ জনকে আসামি করা হয়। মামলাটি সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন রয়েছে।

এআইএম/জেবি