images

আইন-আদালত

বাধ্য হয়ে গণভবনে গিয়ে বক্তব্য দিয়েছিলাম—আদালতে নজরুল ইসলাম

নিজস্ব প্রতিবেদক

১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯:৫৫ পিএম

ব্যাংক মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসের (বিএবি) সাবেক সভাপতি ও এক্সিম ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার আদালতে জানিয়েছেন, তিনি অসুস্থ। তাই তাকে রিমান্ডে নেওয়ার বদলে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুরোধ করেছেন। তিনি দাবি করেছেন—গণভবনে যাওয়ার জন্য তাকে বাধ্য করা হয়েছিল এবং সেখানে গিয়ে তিনি একটি বক্তব্য দিয়েছিলেন।

বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সকালে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে হাজির হন নজরুল ইসলাম মজুমদার। আদালতে যাওয়ার সময় তিনি মাস্ক পরিহিত, মাথায় হেলমেট, বুকে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট এবং পায়ে কেডস পরা অবস্থায় ছিলেন। হাজতখানা থেকে আদালতে পৌঁছানোর সময় তার হাতে একটি ফাইল ছিল, যার মধ্যে কিছু কাগজ ছিল।

আদালতে উপস্থিত হয়ে পিপি (পাবলিক প্রসিকিউটর) ওমর ফারুক ফারুকী আদালতকে জানান, নজরুল ইসলাম মজুমদারসহ অন্যরা জুলাই মাসে ঘটে যাওয়া গণহত্যার ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তিনি অভিযোগ করেন, নজরুল ইসলাম মজুমদারসহ কয়েকজন ব্যবসায়ী ২০১৩ সালে শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে দমনে তাদের সহায়তা করেছিলেন।

এ সময় নজরুল ইসলাম মজুমদার বারবার বিচারকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে কথা বলার অনুমতি চান। তবে বিচারক তাকে বলেন, তার আইনজীবী যদি কিছু বলেন, তবে সেটি গ্রহণ করা হবে। নজরুল ইসলাম মজুমদার তার আইনজীবীকে সহায়তা করতে বলেন এবং পরে তিনি কিছু বক্তব্য দেন।

তিনি আদালতে দাবি করেন, ‘আমার একটি অপারেশন হয়েছে এবং এক মাস ধরে হাসপাতালে ছিলাম। আমাকে রিমান্ডে নেওয়া উচিত নয়। দয়া করে আমাকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দিন।’ 

তিনি আরও জানান, তার ভাই, যিনি এক সময় এমপি ছিলেন, তাকেও গুম করে হত্যা করা হয়েছিল। নজরুল ইসলাম মজুমদার দাবি করেন, জুলাই মাসে ছাত্র আন্দোলনের সময় তিনি বাধ্য হয়ে গণভবনে বক্তব্য দিয়েছিলেন।

তার আইনজীবী মাহবুব ইসলাম মজুমদার আদালতে জানান, নজরুল ইসলাম মজুমদারের হার্টে রিং (স্টেন্ট) পরানো হয়েছে এবং কারাগারে থাকাকালীন তার শারীরিক অবস্থা বেশ খারাপ ছিল। 

তিনি আরও জানান, নজরুল ইসলাম মজুমদারের সঙ্গে কোনো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়নি এবং তিনি একজন খ্যাতনামা ব্যবসায়ী যিনি অনেক মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছেন।

উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত নজরুল ইসলাম মজুমদারকে দুটি হত্যার মামলা সম্পর্কিত পাঁচ দিন করে মোট ১০ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেন।

এছাড়া, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের ছেলে শাফি মোদাচ্ছের খানও আদালতে হাজির হন। তাকে ধানমন্ডি থানার চাঁদাবাজির মামলায় সাত দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার আবেদন করা হয়। আদালত শুনানি শেষে তাকে সাত দিনের রিমান্ডে পাঠানোর অনুমতি দেন।

এ সময় নজরুল ইসলাম মজুমদার, কামাল আহমেদ মজুমদার এবং শাফি মোদাচ্ছের খানদের হেলমেট পরিয়ে কাঠগড়া থেকে বারান্দায় নিয়ে আসা হয়।

এইউ