জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
০৬ জানুয়ারি ২০২৫, ০২:২৩ পিএম
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেছেন, গুমের ঘটনায় বিভিন্ন বাহিনীর কিছু সদস্য জড়িত। তাদের প্রমোশনের লোভ দেখিয়ে, বিদেশে পাঠানোর লোভ দেখিয়ে এসব অপকর্ম করানো হয়েছে।
সোমবার (৬ জানুয়ারি) দুপুরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এই কথা বলেন।
চিফ প্রসিকিউটর বলেন, বিভিন্ন লোভ দেখিয়ে তাদের সঙ্ঘবদ্ধ করে এই অপরাধগুলো করানো হয়েছে। যেহেতু এই অপরাধগুলো ডিফারেন্ট নেচারের (ধরনের), এজন্য ডিফারেন্ট একটি মামলায় তাদের গ্রেফতার দেখানোর জন্য আবেদন জানিয়েছিলাম।
তাজুল ইসলাম বলেন, পরে তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার সামরিক উপদেষ্টা তারেক আহমেদ সিদ্দিকী, পুলিশের সাবেক আইজি আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে পরোয়ানার আবেদন করেছিলাম। আদালত আমাদের আবেদন শুনে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন।
তিনি জানান, ইতোমধ্যে গ্রেফতার সেনাবাহিনী থেকে বরখাস্ত জিয়াউল আহসান কারাগারে আছেন। তাদের আদালতে প্রডিউস করতে বলা হয়েছে আগামী ১২ তারিখে। যাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। তাদের গ্রেফতার করা মাত্রই ট্রাইব্যুনালে প্রডিউস করতে হয়।
মামলায় আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি পরও পরবর্তী দিন ধার্য করা হয়েছে। ওইদিন তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। বাস্তবায়নের জন্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।
আরও পড়ুন
‘গুম-খুন ও গণহত্যার বিচারের বছর হবে ২০২৫’
গুমের অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা
চিফ প্রসিকিউটর বলেন, আমরা একটা জিনিস আপনাদের বলতে চাই, আগেও বারবার বলেছি, জুলাই আগস্টের বিপ্লবের পর বাংলাদেশ নতুন যুগে প্রবেশ করেছে। এই সরকারের কাছে জাতির প্রত্যাশা ঘৃণ্য অপরাধের বিচার করা। আমরা বলেছি ২০২৫ সালে হবে বিচারের বছর। এই অপরাধের সঙ্গে যারাই জড়িতে থাকুক, কেউই রাষ্ট্রের ঊর্ধ্বে নয়, আইনের ঊর্ধে নয়। আমরা খুঁজছি অপরাধ, আমরা খুঁজছি অপরাধী। কে কোথায় চাকরি করে, কার কত বড় পজিশন সেটা দেখার বিষয় না। যারা এরকম ঘৃণ্য অপরাধ করেছেন, হত্যাযজ্ঞ করেছেন, গুম করে রেখেছেন বছরের পর বছর, তাদের বিচার হবে।
তাজুল বলেন, এই বিচারের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে গুমের কালচার চিরতরে বন্ধ করতে হবে। ভবিষ্যতে এ ধরনের ভিন্ন অপরাধ যেন কেউ করতে সাহস না পায়, যে সমস্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে গুমের অভিযোগ উঠেছে, তারাও যেন এই অপরাধে বারবার জড়িয়ে না পড়ে, সে বিষয়ে আমাদের খেয়াল করতে হবে।
চিফ প্রসিকিউটর বলেন, এই রাষ্ট্র পরিচালনা করতে পুলিশ লাগবে, সেনাবাহিনী লাগবে, বাহিনীর সদস্যদের লাগবে। তাদের বিভিন্নভাবে এসব কর্মকাণ্ডে জড়ানো হয়েছে। এই ক্রিমিনালগুলোর বিচার হলে রাষ্ট্র আবার পরিষ্কার হবে। এই অনুভূতি থেকেই আমরা প্রায়োরিটি দিয়েছি। আমরা খুব দ্রুতই চেষ্টা করব এই অপরাধের সাথে কারা জড়িত তাদের আইনের আওতায় আনা। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে যারা দোষী ব্যক্তি তাদের আইনের আওতায় আনার চেষ্টা করা হবে। এরপর তাদের বিষয়ে স্ট্যান্ডার্ড সব বিষয়ে বিবেচনা করে বিচার করা হবে।
এআইএম/জেবি