images

আইন-আদালত

হাসিনার সব অপরাধের সহযোগী ছিলেন মন্ত্রী-এমপিরা: চিফ প্রসিকিউটর

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৮ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০৭ পিএম

গত ১৫ বছরের শাসনামলে শেখ হাসিনার যেসব অপরাধ করেছেন, মন্ত্রী-এমপিরা তার সহযোগী হিসেবে কাজ করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, ক্ষমতায় থাকতে শেখ হাসিনা এমন কোনো মানবতাবিরোধী অপরাধ নেই যা করেননি। আর তার এসব অপরাধের সহযোগী ছিলেন মন্ত্রী-এমপিরা।

জুলাই-আগস্টের গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার সাবেক আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক নয় মন্ত্রীসহ ১৩ জনকে সোমবার ট্রাইব্যুনালে হাজির করার পর শুনানিতে এসব কথা বলেন তাজুল ইসলাম।

চিফ প্রসিকিউটর বলেন, গত ১৫ বছরের শাসনামলে এমন কোনো মানবতাবিরোধী অপরাধ নেই যেটা শেখ হাসিনা করেননি। ক্ষমতায় এসে পিলখানা হত্যাকাণ্ড দিয়ে শুরু হয় শেখ হাসিনার মানবতাবিরোধী অপরাধ। ব্লাকআউট করে শাপলা চত্বরে হেফাজতের ওপর গণহত্যাসহ আওয়ামী লীগের শাসনামলে সব মানবতাবিরোধী অপরাধের কেন্দ্রবিন্দু ছিলেন শেখ হাসিনা। আর উপস্থিত আসামিরা এসব অপরাধ সংগঠনে সহযোগিতা করেছেন। সর্বশেষ জুলাই আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে দেড় হাজারের বেশি মানুষকে হত্যা, অঙ্গহানিসহ ২৫ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। গণহত্যার মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনা চেয়েছিলেন ক্ষমতা প্রলম্বিত করতে।

আরও পড়ুন

১৭ ডিসেম্বরের মধ্যে হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন জমার নির্দেশ

শুনানির সময় ১৩ আসামি এজলাসে দাঁড়িয়ে ছিলেন। এর আগে বেলা ১১টার দিকে ১৩ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে শুনানি শুরু হয়। তার আগে সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে গারদখানা থেকে তাদের এজলাসে তোলা হয়।

শুনানির জন্য সকাল ১০টার দিকে তাদের প্রিজন ভ্যানে করে আদালতে আনা হয়। গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা ৪৬ জনের মধ্যে এই প্রথম মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ১৩ আসামিকে ট্রাইব্যুনালে তোলা হলো।

যাদের ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে তারা হলেন- সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, ফারুক খান, ড. দীপু মনি, রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনু, শাজাহান খান, জুনাইদ আহমেদ পলক, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, তৌফিক-ই-ইলাহী, সাবেক প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, গোলাম দস্তগীর গাজী, আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক ও সাবেক স্বরাষ্ট্র সচিব জাহাঙ্গীর আলম।

সাবেক মন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাককে ট্রাইব্যুনালে আনার কথা থাকলেও অন্য মামলায় রিমান্ডে থাকায় তাকে হাজির করা হয়নি।

এর আগে গত ২৭ অক্টোবর ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজার নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল তাদের ট্র‍্যাইব্যুনালে হাজিরের নির্দেশ দেন। রাষ্ট্রপক্ষের পৃথক দুটি আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত এ আদেশ দেন।

ট্রাইব্যুনালের অন্য সদস্যরা হলেন- বিচারপতি শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

আরও পড়ুন

জুলাই-আগস্ট গণহত্যা: আসামিদের বিরুদ্ধে শুনানি শুরু

ওইদিন আলাদা আরেক আবেদনে সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসানসহ ছয় জনকে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে ট্রাইব্যুনালে হাজিরের নির্দেশ দেওয়া হয়। আবেদনের পক্ষে ছিলেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। সঙ্গে ছিলেন প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার হুসাইন তামিম ও বি এম সুলতান মাহমুদসহ অন্য প্রসিকিউটররা।

গত ৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সারাদেশে সংঘটিত গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে এখন পর্যন্ত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা ও প্রসিকিউশন অফিসে অর্ধশতাধিক অভিযোগ জমা পড়ে।

গত ১৭ অক্টোবর শেখ হাসিনাসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারিক কার্যক্রম শুরু হয়।

এমআর