images

আইন-আদালত

বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক হত্যা: মেয়র মুক্তির জামিন

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

২৭ এপ্রিল ২০২২, ০৫:১১ পিএম

বীর মুক্তিযোদ্ধা ও টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ফারুক আহমেদ হত্যা মামলায় সাবেক মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তিকে জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।

বুধবার (২৭ এপ্রিল) এ বিষয়ে এক আবেদনের শুনানি শেষে বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ার কাজলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

এ দিন আদালতে মেয়র মুক্তির পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ ও অ্যাডভোকেট খুরশিদ আলম খান। এছাড়া রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আমিনুল ইসলাম।

আদালত থেকে বেরিয়ে ঢাকা মেইলকে জামিন আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেন খুরশীদ আলম খান। তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধা ফারুক হোসেন হত্যা মামলায় মেয়র মুক্তিকে জামিন দিয়েছেন আদালত।

এর আগে গত ১০ এপ্রিল সহিদুর রহমান খান মুক্তির জামিন আবেদন কার্যতালিকা থেকে বাদ দেন হাইকোর্ট। ওইদিন বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেন ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের হাইকোর্ট বেঞ্চ মুক্তির ব্যাপারে এ আদেশ দেন।

ওইদিন আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে ছিলেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট মোমতাজ উদ্দিন ফকির। এছাড়া রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আবুল হাশেম।

গত ১০ ফেব্রুয়ারি টাঙ্গাইলের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মাসুদ পারভেজ মুক্তিকে জামিন দেন। পরে ২৮ ফেব্রুয়ারি তার অন্তর্বর্তীকালীন জামিন বাতিল করেন। সে আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে জামিন চেয়ে আবেদন করেন মুক্তি। পরে আদালত থেকে বেরিয়ে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আবুল হাশেম জানান, এই আসামির বিষয়ে অন্য আসামির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি, চিকিৎসা বিষয়ে যথাযথ হাসপাতালের কোনো সনদ না দেখানোর বিষয়টি আদালতে তুলে ধরেছি। এরপর আদালত তার আবেদনটি আউট অব লিস্ট (তালিকা থেকে বাদ) করে দেন।

মুক্তি এ মামলার আসামি টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানার ভাই। তার বাবা আতাউর রহমান খান এই আসনের বর্তমান আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য। দীর্ঘ ছয় বছর পলাতক থাকার পর ২০২০ সালের ২ ডিসেম্বর সহিদুর রহমান খান মুক্তি আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। আদালত সে সময় তার জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন।
 
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, ২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি খুন হন টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ফারুক আহমেদ। সেই সময় তার গুলিবিদ্ধ লাশ কলেজপাড়ার বাসার কাছ থেকে উদ্ধার হয়। ওই ঘটনার তিন দিন পর তার স্ত্রী নাহার আহমেদ বাদী হয়ে টাঙ্গাইল সদর থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। পরবর্তীকালে ওই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ২০১৪ সালের আগস্টে গোয়েন্দা পুলিশ আনিসুল ইসলাম রাজা ও মোহাম্মদ আলী নামের দুজনকে গ্রেফতার করে।

পরে আদালতে ওই দুই আসামির দেওয়া স্বীকারোক্তিতে সাবেক সাংসদ আমানুর রহমান খান রানা ছাড়াও তার তিন ভাই- টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তি, ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান খান কাকন ও ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি সানিয়াত খান বাপ্পার হত্যায় জড়িত থাকার বিষয়টি উঠে আসে। এরপর অভিযুক্তরা আত্মগোপনে চলে যান।

পরবর্তীকালে ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে গোয়েন্দা পুলিশ আদালতে তৎকালীন সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান ও তার অপর তিন ভাইসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশীট দেন। এরপর ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে আত্মসমর্পণ করেন আমানুর রহমান খান রানা। প্রায় তিন বছর হাজতবাসের পর বর্তমানে তিনি জামিনে মুক্ত আছেন। এছাড়া তাদের অপর দুই ভাই এখনও পলাতক।

এআইএম/আইএইচ